নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
অবৈধ নির্মাণের ব্যাপারে পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের কাজকর্ম নিয়ে পুর কমিশনারকে ডেপুটি মেয়রের একটি ‘নোট শিট’ পাঠানোকে ঘিরে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি পুর কমিশনারকে ওই নোটশিট পাঠিয়েছেন ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা। ওই নোট শিটের প্রতিলিপি মেয়র এবং তাঁর পারিষদদের কাছেও পাঠিয়েছেন। সম্প্রতি অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ একটি গুদাম ভাঙা হলে তা মেয়র পারিষদের বা বোর্ড মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে করা হয়েছে কি না তা তিনি ওই নোট শিটে জানতে চেয়েছেন। পাশাপাশি মেয়র পারিষদ এবং বোর্ড মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে যে সমস্ত অবৈধ নির্মাণ ভাঙার তালিকা তৈরি হয়েছে সেই সব ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ডেপুটি মেয়র। তা নিয়ে ক্ষুব্ধ বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ সীমা সাহা। রঞ্জনবাবুকে এ দিন বহুবার ফোন করা হলেও তাঁর মোবাইল ফোন বেজে গিয়েছে। দিন কয়েক আগেই তৃণমূলের মেয়র পারিষদদের একাংশের দফতর-সহ পুরসভার বিভিন্ন বিভাগের কাজের সমালোচনা করে পুর কতৃর্পক্ষ উন্নয়ন কাজে ব্যর্থ বলে সরব হন ডেপুটি মেয়র। তা নিয়ে দলে এবং দলের বাইরে সমালোচনার মুখে পড়েন। এর পরেই দলের মেয়র পারিষদদের অন্য দফতরের ব্যাপারে বিবৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক করছেন জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। পুরসভার পূর্ত বিভাগের মেয়র পারিষদ কৃষ্ণ পাল এবং বিধায়ক রুদ্র ভট্টাচার্যকে এ ব্যাপারে দায়িত্ব দিয়েছেন। রঞ্জনবাবুর নোট শিটের প্রসঙ্গে কৃষ্ণবাবু বলেন, “বিষয়টি পুরসভার অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।” সীমাদেবী বলেন, “ডেপুটি মেয়র নিজের দফতরের কাজ ছেড়ে কেন বিল্ডিং বিভাগের কাজ নিয়ে অত্যুৎসাহী হয়ে উঠেছেন বুঝতে পারছি না। সম্প্রতি ইস্কন মন্দির রোডে অবৈধ নির্মাণের অভিযোগে একটি গুদাম ভাঙা হয়েছে। ইস্কন মন্দির রোডে ওই অবৈধ নির্মাণকে তিনি উৎসাহ দিতে চাইছেন কি না বুঝতে পারছি না।” তা হলে যে সমস্ত অবৈধ ভবনের তালিকা তৈরি করে ভাঙার সিদ্ধান্ত হয়েছে সেই কাজ বন্ধ কেন? সীমা দেবীর উত্তর, “দুই শতাধিক যে সমস্ত অবৈধ বিল্ডিংয়ের তালিকা তৈরি করা হয়েছে সে সব কোনওটা ২০০৫ সালের তৈরি, কোনটা ২০০২ বা তারও আগের। পুরনো নোটিশে সে সমস্ত ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিতে যাওয়ায় আইনি জটিলতা তৈরি হচ্ছে। পুরো অবৈধ নির্মাণের ক্ষেত্রে এতদিন পুরসভা কী করেছে তা নিয়ে মালিক পক্ষ প্রশ্ন তুলে আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন। তাই আইনি দিকগুলি ঠিক করে, নতুন করে নোটিশ পাঠিয়ে তবেই অবৈধ নির্মাণ ভাঙার ব্যবস্থা করা হবে। না হলে পুর কর্তৃপক্ষ বিপাকে পড়তে পারেন।” পুর কমিশনারকে পাঠানো নোট শিটে অবৈধ নির্মাণের প্রসঙ্গ ছাড়াও পুরসভার মূল দফতরে কর্মরত পরিবেশ বিভাগের এক কর্মীকে ২ নম্বর বরোতে বদলির নির্দেশ দিয়েছেন। ২ নম্বর বরোর সাফাই বিভাগের এক কর্মীকে পুরসভার প্রধান অফিসে পরিবেশ দফতরে বদলির কথা জানিয়েছেন। পুরসভার আধিকারিকদের কয়েকজন জানিয়েছেন, নোট শিট সাধারণত পুরকর্মী, আধিকারিকরা লেখেন। মেয়র বা তাঁর পারিষদরা নোট শিট লেখেন না। তাঁরা নোট শিট দেখে নেন। বা অনুমোদন করেন। এ ক্ষেত্রে ডেপুটি মেয়র কেন এ ভাবে নোট শিট লিখেছেন তা অনেকের কাছেই স্পষ্ট নয়। তা ছাড়া ২ নম্বর বরো থেকে সাফাই বিভাগের যে কর্মীকে বদলির কথা ডেপুটি মেয়র জানিয়েছেন সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মেয়র পারিষদ দুলাল দত্ত কিছুই জানেন না। দুলালবাবু বলেন, “এ দিন পুরসভায় যেতে পারিনি। নোট শিটের ব্যাপারে বা ২ নম্বর বরোর ওই কর্মীকে বদলির ব্যাপারে কিছুই জানি না।” |