|
|
|
|
|
পেনশন পাবেন পালিতা
কন্যাও, রায় আদালতের
অরুণোদয় ভট্টাচার্য • কলকাতা |
|
পালিতা কন্যাও পারিবারিক পেনশনের অধিকারিণী। আত্মজার সঙ্গে তাকে আলাদা করে দেখা চলবে না। কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় দিয়েছে। পালিতা কন্যাকে এই অধিকার থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা আদতে মেয়েদের অধিকার খর্ব করার চেষ্টা বলেও মন্তব্য করেছে আদালত।
জিওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার কর্মী তীর্থঙ্কর দাশগুপ্ত ১৯৮০ সালে ১২ বছরের এক কিশোরীকে দত্তক নেন। এর দু’বছর পরে স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়ে যায়। স্ত্রী আবার বিয়ে করলেও তীর্থঙ্করবাবু দ্বিতীয় বার বিয়ে করেননি। অবসর নেওয়ার পরে তিনি পেনশন পেতে শুরু করেন। নিয়ম অনুযায়ী, তাঁর মৃত্যুর পরে পেনশন কে পাবেন, তা সংশ্লিষ্ট কর্মীকে লিখিত ভাবে জানাতে হয়। তীর্থঙ্করবাবু জিএসআই-কে জানিয়ে দেন, তাঁর অবর্তমানে তাঁর পালিতা কন্যাকেই যেন পেনশন দেওয়া হয়।
বেঁকে বসেন জিএসআই কর্তৃপক্ষ। জানিয়ে দেন, তাঁরা পালিতা কন্যাকে পেনশন দেবেন না। কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ট্রাইবুন্যালে এ নিয়ে মামলাও হয়। মামলার রায় জিএসআই কর্তৃপক্ষের পক্ষে গেলে তীর্থঙ্করবাবু হাইকোর্টে আপিল করেন।
সেই আপিল মামলার রায়ে আজ আজ আদালত জানায়, এ ক্ষেত্রে পালিতা কন্যা অবশ্যই পারিবারিক পেনশনের অধিকারিণী। জিএসআই কর্তৃপক্ষ প্রশ্ন তোলেন, ১৯৮০ সালে মেয়েটিকে দত্তক নেওয়া হলেও তা নথিভুক্ত হয়েছে ২০০৬ সালে। আবেদনকারীর আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ জানান, নিয়ম অনুযায়ী দত্তক পুত্র বা কন্যার সঙ্গে বাবার বয়সের তফাত হতে হবে ন্যূনতম ২২ বছর। তীর্থঙ্করবাবু যখন মেয়েটিকে দত্তক নিয়েছিলেন, তখন তাঁর বয়স ৪০ অতিক্রান্ত। সুতরাং বয়স সংক্রান্ত নিয়ম যথাযথ ভাবেই মানা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে নথিভুক্তি কবে হল, তা আর গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাঁর নিজের উদাহরণ টেনে অরুণাভবাবু জানান, তিনি বিয়ে করেছেন ১৯৮৫ সালে, আর তা নথিভুক্ত হয়েছে ২০০১ সালে। তা হলে মাঝখানের ওই ক’টা বছর স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কি অবৈধ ছিল? দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতির মন্তব্য, নানা অছিলায় মেয়েদের অধিকার খর্ব করার চেষ্টা চলছে। এই মামলা তারই এক দৃষ্টান্ত। অবিলম্বে জিএসআই কর্তৃপক্ষকে পেনশনের জন্য ওই পালিতা কন্যার নাম নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন তিনি। |
|
|
|
|
|