সংস্কারের দাবিতে রাস্তা খুঁড়ে বিক্ষোভ দেখালেন কংগ্রেসের কমী-সমর্থকেরা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৫ ঘণ্টা ধরে চলা এই অবরোধের জেরে বসিরহাটের সংগ্রামপুর থেকে স্বরূপনগরের তেঁতুলিয়া পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। চরম নাজেহাল হন নিত্যযাত্রীরা।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, বেহাল রাস্তায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। পূর্ত দফতর থেকে মিলছে শুধুই প্রতিশ্রুতি। তাই মেরামতির কাজ শুরু না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে বলে জানান তাঁরা। পরে দুপুর ২টো নাগাদ স্বরূপনগরের বিডিও অরুণাভ পাল এবং পূর্ত দফতরের বসিরহাট ডিভিশনের সহকারী বাস্তুকার তপন নস্কর ঘটনাস্থলে গিয়ে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে রাস্তা মেরামতের প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধ উঠে যায়। এ দিকে, এ দিন বাদুড়িয়ার কেওটেশা মোড়েও রাস্তা সংস্কারের দাবিতে দীর্ঘক্ষণ অবরোধ চলে। |
ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা স্বরূপনগরের গোকুলপুর গ্রামের কাছে রাস্তার উপর বাঁশ বেঁধে অবরোধ শুরু করেন। এর ফলে সংগ্রামপুর-তেঁতুলিয়ার মধ্যে গাড়ি চলাচল বন্ধ যায়। তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ গাঁইতি এনে রাস্তা কাটা শুরু করে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, মেরামতের অভাবে গাড়ির চাকায় রাস্তার পাথরগুলি আলগা হয়ে গিয়েছে। যান চলাচলের সময় সেগুলি ছিটকে এসে রাস্তার পাশে বাড়ির জানলা-দরজায় লাগে। পাথর ছিটকে জখম হন পথচারীরা। রাস্তার গর্তে পড়ে আহত হয়েছেন অনেকে। ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠছে যাত্রীদের। তবুও বসিরহাট থেকে স্বরূপনগর এবং তেঁতুলিয়া থেকে মসলন্দপুর এই দু’টি রাস্তার এ পর্যন্ত সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সব জেনেও হেলদোল নেই প্রশাসনের।
মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকাবাসীর দাবি অনুযায়ী ওই রাস্তার সংস্কার হয়েছিল। কিন্তু তারপর বেশিদিন হয়নি। বিভিন্ন জায়গায় পিচ ও পাথর উঠে বড় বড় গর্ত তৈরি হওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ওই রাস্তার গোকুলপুর, হঠাৎগঞ্জ, আটুরিয়া, গন্ধর্বপুর, রামচন্দ্রপুর, তেঁতুলিয়া, কেওটেশা-সহ কয়েকটি জায়গায় রাস্তার হাল শোচনীয়। বর্ষার সময়ে পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা ইট দিয়ে গর্ত বন্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন। তাতে সমস্যা আরও বেড়েছে। বর্তমানে রাস্তার এমনই হাল যে সেখান দিয়ে অসুস্থ ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াই সমস্যার। গাড়ি চালকদের দাবি, পেট্রল-ডিজেলের দাম বেড়েছে। বেড়েছে গাড়ির যন্ত্রাংশের দামও। কিন্তু ওই রাস্তার খানাখন্দে পড়ে যন্ত্রাংশ খারাপ হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে।
স্বরূপনগর ব্লক কংগ্রেস সভাপতি মুজিবুর রহমান বলেন, “রাস্তা জুড়ে একাধিক বড় বড় গর্ত। গাড়ি তো নাচতে নাচতে চলে! তাতে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়ে। সাইকেল-রিকশা নিয়ে যাওয়া তো দূরঅস্ত, ওই রাস্তা দিয়ে হাঁটাই দায়। মাঝেমধ্যে পাথর দিয়ে গর্ত বোজানো হচ্ছে। কিন্তু তাতে কাজ হচ্ছে না। সর্বত্র অসুবিধার কথা জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। বাধ্য হয়ে এই পথ নিয়েছি।” তপনবাবুর কথায়, “প্রায় ১০ লক্ষ টাকার টেন্ডার হয়েছে। আগামী দু’-চার দিনের মধ্যেই কাজ শুরু হবে।” |