সকালে ঘুম থেকে উঠতে প্রায়ই আটটা। হোক না, রাতটা পড়ে আছে না!
ওটাই পড়ার সময়। জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় মেডিক্যাল বিভাগে প্রথম হয়ে মুর্শিদাবাদের কৃষ্ণনাথ কলেজ স্কুলের সুমন সাহা তাই নিজের ‘নকটার্নাল’ স্বভাবকেই নম্বর দিচ্ছে বেশি।
|
সুমন সাহা। নিজস্ব চিত্র। |
মা সোনাদেবীও বলছেন, “ঘড়ি ধরে কোনও দিনই পড়াশোনা করেনি। যখন ইচ্ছে পড়ত। দিনে ৮/৯ ঘন্টা। তবে রাত জাগতে পারত বটে! গোটা রাতই জেগে পড়ত। রাত জাগার ক্ষমতাই ওকে এগিয়ে রেখেছে।”
কৃষ্ণনাথ কলেজ স্কুল থেকেই ২০১০ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৮টি বিষয়ে লেটার নিয়ে পাশ করে সুমন। নম্বর ৫৫৪। রাজ্যে পঞ্চম এবং জেলায় প্রথম স্থান হয়েছিল সে বার। উচ্চমাধ্যমিকে জীববিদ্যাকে প্রধান বিষয় করে বিজ্ঞান নিয়ে ওই স্কুলেই ভর্তি হয়। সুমনের কথায়, “প্রথম থেকেই মেডিক্যাল নিয়ে জয়েন্ট এন্ট্রান্স দেওয়ার ইচ্ছে ছিল। সেই মত জীববিদ্যাকে প্রধান বিষয় করে পড়াশোনা শুরু করি।”
উচ্চমাধ্যমিকে অন্যান্য বিষয়গুলিতে এক জন করে গৃহশিক্ষক থাকলেও জয়েন্ট এন্ট্রান্সে মেডিক্যাল বিভাগে ভাল ফল করার জন্য জীববিদ্যা বিষয়ে দু’জন গৃহশিক্ষক ছিল তাঁর। পরীক্ষায় ভাল ফল করার জন্য গৃহশিক্ষক, স্কুলের শিক্ষকদের পাশাপাশি বাবা পেশায় বিএসএনএলের কর্মী সুদীপ সাহারও বিশেষ অবদান রয়েছে বলে মনে করছে ঘুম কাতুরে সুমন। । তবে পড়াশোনার ফাঁকে সুমনের অবসর রবীন্দ্রসঙ্গীত আর গল্পের বই। কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শান্তিদেব ঘোষের ভক্ত। তবে গল্পের ঝোঁক রহস্য ও রোমাঞ্চের দিকে।
তার ঠাকুমা ইরাদেবী বলেন, “আমার নাতি যে কোনও ধরণের মিষ্টি খেতে ভীষণ পছন্দ করে। মিষ্টি পেলে আর কিছু চায় না।”
মেডিক্যাল নিয়ে পড়ার ইচ্ছে কেন? সুমনের উত্তর, “খুব ছেলেবেলা থেকেই মেডিক্যাল নিয়ে পড়ব বলে ভেবেছি। সেই মতই নিজেকে তৈরি করেছি। ফলে যেখানে অনেকেই মেডিক্যাল ও ইঞ্জিনিয়ার দুটি বিভাগেই জয়েন্ট এন্ট্রান্স, সেখানে আমি শুধুই মেডিক্যাল বিভাগে পরীক্ষা দিই। চিকিৎসা বিজ্ঞান বিষয়টি আমার ভাল লাগে। তবে গবেষণা করব কিনা এখনই ভাবিনি। সেই রকম কোনও সুযোগ বা পরিস্থিতি তৈরি হলে গবেষণাও করতে পারি।” |