দিনভর খরতাপে শূন্য পথে স্বস্তি সন্ধ্যার বর্ষণে
দুপুরের ঘণ্টা খানেকের ঝড়-বৃষ্টিতে গুমোট ভাব কেটে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরল নদিয়া-মুর্শিদাবাদের কিছু কিছু জায়গায়। কিন্তু সেই সঙ্গেই ঝড়ের দাপটে তার ছিঁড়ে বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে সন্ধ্যায় আবার ভোগান্তি শুরু হয়েছে। গরমে হাঁসফাঁস করেছেন মানুষ।
তাপমাত্রা আরও বেড়েছে নদিয়ায়। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ কম ছিল। বৃষ্টি নেই। পিচ গলানো তাপ। যত বেলা বেড়েছে, রাস্তাঘাট তত ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। দুপুরে যাত্রী সংখ্যা ছিল হাতে গোণা। নদিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির সদস্য কুণাল ঘোষ বলেন, “যাত্রী সংখ্যা এতটাই কম যে অনেক রুটেই বাস বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। অনেক বাসকর্মী অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তাই বাস চালানোও শক্ত।” তবে সরকারি অফিস কাছারিতে উপস্থিতির হারে বিশেষ প্রভাব পড়েনি। অতিরিক্ত জেলাশাসক অরিন্দম ঘোষ বলেন, “সরকারি দফতরে উপস্থিতির হার স্বাভাবিক। তবে প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস করেছেন মানুষ।”
স্বস্তির ঝড়। ছবি: কল্লোল প্রামাণিক।
পোস্ট অফিস মোড়ের চা দোকানের মালিক চিত্ত ঘোষ বলেন, “গরমে বিক্রি কমছে। দুপুরে খরিদ্দার নেই বললেই চলে। এই গরমে রাস্তায় বেরোতেই চাননি।” কিন্তু সন্ধ্যায় পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়। তাপমাত্রা কমেছে। মানুষও রাস্তায় বেরিয়েছেন। পোস্ট অফিস মোড়েরই এক ফুচকাওয়ালা রতন দাসের কথায়, “সারা দিন বাইরে বেরোইনি। সন্ধ্যায় কিন্তু ভালই বিক্রি হয়েছে। রাত বাড়তে লোকও বেড়েছে।” পাড়ার মোড়ে মোড়ে আড্ডা দিতেও দেখা গিয়েছে অনেককে। তবে সন্ধ্যার দিকে তেহট্টে ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু তাতে এক জন মারা গিয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরের ঘন্টা খানেকের ঝড়-বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বহরমপুর-সহ মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকার বিদ্যুৎ পরিষেবা। বহরমপুরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে গাছের ডাল ভেঙে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গিয়েছে। এদিন দুপুরের পর থেকেই বহরমপুর, ডোমকল, লালবাগ, জলঙ্গি, জিয়াগঞ্জে বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন হয়ে যায়। সন্ধ্যার পর থেকে ওই সব এলাকা অন্ধকারে ডুবে যায়। রাত পর্যন্ত বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। যদিও ঝড়-বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর থেকেই তৎপরতার সঙ্গে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টায় লেগে রয়েছেন বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা। বিদ্যুৎ দফতরের বহরমপুর ডিভিশন্যাল ম্যানেজার দেবব্রত বৈরাগী বলেন, “পঞ্চাননতলা কালীবাড়ির সামনে গাছের ডাল ভেঙে পড়ায় ৩৩ কেভি গড় বহরমপুর সাব স্টেশন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে বহরমপুর ও লাগোয়া এলাকায় রাত পর্যন্ত বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও বহরমপুর সাব স্টেশন থেকে ডোমকল, লালবাগ, জলঙ্গি, জিয়াগঞ্জ এলাকায় যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়ে থাকে, তা বন্ধ রয়েছে।”
নিজস্ব চিত্র।
এদিনের ঝড়ে বহরমপুর থানা চত্বরে, পঞ্চাননতলায়, আইটিআই কলেজের পিছনে যেমন গাছের ডাল ভেঙেছে, তেমনি গোরাবাজার ও কাশিমবাজার এলাকায় বেশ কিছু বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। গোরাবাজার পদ্মা আবাসন চত্বরের বিদ্যুতের দুটি স্তম্ভ রাস্তার উপরে ভেঙে পড়ায় স্বাভাবিক যান চলাচল ব্যাহত হয়। দেবব্রতবাবু বলেন, “শহরের বিভিন্ন প্রান্তে গাছের ডাল ভেঙে বিদ্যুতের তারের উপরে পড়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেই সমস্ত এলাকায় দ্রুত গিয়ে বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা কাজ করছেন। রাতে বহরমপুরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এছাড়াও ডোমকল, জলঙ্গি, লালবাগ ও জিয়াগঞ্জ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনে বিকল্প পথের কথাও ভাবা হয়েছে।” বহরমপুর থানার আইসি মেহায়মেনুল হক বলেন, “গোটা শহর অন্ধকারে ডুবে রয়েছে। পুলিশের মোবাইল ভ্যান শহরের বিভিন্ন প্রান্তে টহল দিচ্ছে। তবে গাছের ডাল ভেঙে রাস্তা বন্ধ হয়ে রয়েছে এমন কোনও অভিযোগ পাইনি। তবে এসব ক্ষেত্রে পুরসভার কর্মীরা গাছের ডাল সরিয়ে রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.