ইস্টবেঙ্গলের শাস্তি চেয়ে ফিফা আর দূতাবাসের দ্বারস্থ টোলগে
টোলগে ওজবে বনাম ইস্টবেঙ্গলের লড়াই এ বার কলকাতা পেরিয়ে জুরিখে ফিফার সদর দফতরে পৌঁছল। টোলগে বিতর্কে জড়িয়ে গেল দিল্লির অস্ট্রেলীয় দূতাবাসও।
টোলগের দাবি, ইস্টবেঙ্গল তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে। করছে দুর্ব্যবহারও। চাঞ্চল্যকর এই জোড়া অভিযোগে তাদের শাস্তি দাবি করে আই এফ এ থেকে বিশ্ব ফুটবল সংস্থা সবার কাছে বৃহস্পতিবার চিঠি পাঠালেন টোলগে। ফিফা সচিবের সঙ্গে চিঠি পাঠানো হল ফিফা প্লেয়ার্স কমিটি, দূতাবাস, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের ফুটবলার সংস্থাকেও। পাশাপাশি সাংবাদিক সম্মেলন করে অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকার হুমকি দিলেন, “অমিত দাস, জন ডায়াস, স্নেহাশিস চক্রবর্তীর মতো অনেক ফুটবলারের সঙ্গেই আগে ইস্টবেঙ্গল এ রকম মিথ্যাচার ও জালিয়াতি করেছে। এ বার আমার মতো এক পেশাদার বিদেশির সঙ্গেও করছে। আমি কিন্তু শেষ দেখে ছাড়ব। আই এফ এ-র উপর আমার পুরো আস্থা আছে। তারা নিশ্চয়ই সব কাগজপত্র দেখে দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে। সেখানে কিছু না হলে আমি পরবর্তী পর্যায়ে যাব।”
টোলগের অভিযোগ শুনে অবশ্য ইস্টবেঙ্গল কর্তারা নিজেদের অবস্থান থেকে সরছেন না। তাঁরাও তাকিয়ে আছেন আই এফ এ-র দিকেই। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টোলগের সাংবাদিক সম্মেলন শেষ হওয়ার পর লাল-হলুদের প্রধান কর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, “সব কথার সব সময় উত্তর দিতে নেই। টোলগের অগ্রিমের চেক নিয়ে সই করা ভাউচার আমরা আইএফএ-তে জমা দিয়েছি। আই এফ এ-ই যা বলার বলবে।”
সাংবাদিক সম্মেলনে টোলগে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস দাস
ক্লাব বনাম ফুটবলারদের চুক্তি নিয়ে ঝামেলা কলকাতা ফুটবলে নতুন কিছু নয়। কিন্তু কোনও বিদেশি ফুটবলার নিজে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে তাঁর স্বপক্ষে নিয়ে আসা কাগজপত্র সংবাদ মাধ্যমের হাতে তুলে দিচ্ছেন এ রকম ঘটনা নজিরবিহীন। অন্তত তিন বার টোলগেকে চ্যালেঞ্জের সুরে বলতে শোনা যায়, “ইস্টবেঙ্গল থেকে আমি কোনও অগ্রিম নিইনি। কোনও ভাউচার বা চুক্তিপত্রে সই করিনি। ওরা পারলে দেখাক চুক্তিপত্র। সেটা দেখাচ্ছে না কেন?” টোলগে যে রীতিমতো আইনি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন, তা আরও বোঝা গেল সাংবাদিক সম্মেলন করার জন্য ময়দানের ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবকে বেছে নেওয়ায়। নিজেকে ‘ফ্রি’ ফুটবলার বোঝাতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন টোলগে। তাঁকে এ দিন সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিলেন মোহনবাগানের ফুটবল সাব কমিটির তিন কর্তা। টোলগে কিন্তু বলে দেন, “আমি এখনও ফ্রি প্লেয়ার। মোহনবাগানেই আমি সামনের দু’বছর খেলব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে চুক্তি পত্রে সই করিনি। কোনও অগ্রিমও নিইনি। খুব তাড়াতাড়িই আমি সেটা করব। আলোচনা চলছে।” জানা গিয়েছে, ঝামেলা না মিটলে ১৯ মে বান্ধবীকে নিয়ে প্রস্তাবিত ইউরোপ সফর পিছিয়ে দেওয়ার কথাও ভাবতে শুরু করেছেন টোলগে।
ইস্টবেঙ্গল এবং টোলগে দু’পক্ষই নিজের নিজের মতো করে যুক্তি সাজাচ্ছে প্রতিদিন। চলছে চাপান উতোরও। টোলগে তাঁর যুক্তির স্বপক্ষে নানা কাগজপত্র সাংবাদিকদের হাতে তুলে দিলেও ইস্টবেঙ্গল এখনও তেমন কিছু দেখাতে পারেনি। ইস্টবেঙ্গলের জমা দেওয়া ভাউচারও দেখাতে চাইছেন না আই এফ এ কর্তারা। বরং রাজ্য সংস্থার কর্তারা প্রথমে ওয়েবসাইটে লিখেছিলেন, অগ্রিম নিয়েছেন টোলগে। পরে তাঁর প্রতিবাদপত্র পেয়ে ওয়েবসাইটে লিখতে বাধ্য হয়েছেন, টোলগে এ নিয়ে প্রতিবাদ করেছেন। ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রতবাবু দাবি করলেন, “আমাদের হাতে প্রচুর কাগজপত্র আছে। সেগুলোই আমাদের তুরুপের তাস। ঠিক সময়ে দেখাব।” ইস্টবেঙ্গল তাঁদের শো-কজে টোলগেকে লিখেছিল, “চুক্তিবদ্ধ ফুটবলার হিসাবে আপনাকে ১৯ মে ক্লাবে এসে প্রদর্শনী ম্যাচ নিয়ে আলোচনা করার জন্য বলছি। আপনি ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে কথা না বলে শহর ছাড়বেন না।” টোলগে এ দিন চুক্তিপত্র দেখিয়ে বলেন, “কলকাতা লিগের শেষ ম্যাচের পরই আমি ফ্রি প্লেয়ার। ইস্টবেঙ্গলের আর কোনও ম্যাচ খেলতে বাধ্য নই।”
টোলগে এ দিন বেশ চমকপ্রদ আরও দুটি অভিযোগ করেন ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে। এক) দু’বছর বাংলায় খেললেও তিনি কখনও টোকেন (যা সই করার পর আই এফ এ থেকে ফুটবলারদের দেওয়া হয়) দেখেননি। দুই) তাঁর প্রথম বছরের ফিফা স্বীকৃত এজেন্ট পল ডিকেন্সনের প্রাপ্য টাকা ইস্টবেঙ্গল দেয়নি। যা নিয়ে ফিফায় অভিযোগ করেছেন পল। দুটো দাবিই উড়িয়ে দেন ইস্টবেঙ্গলের প্রধান কর্তা। বলেন, “টোলগে মিথ্যা কথা বলছে।”
ইস্টবেঙ্গল না টোলগে, কে ঠিক তা জানতে অবশ্য আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.