প্লে অফের টিকিট নিশ্চিত, কিন্তু সেকেন্ড বয় হওয়া যাবে কি না সেটাই প্রশ্ন। ওয়াংখেড়েতে মুম্বই-বধ সেরে ফেলার পরেও যে চিন্তা থাকছে। পরিষ্কার করে বললে, আগামী ১৯ মে পুণে ওয়ারিয়র্সের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচ না জিতলে লিগ টেবলে নাইটদের দু’নম্বরে শেষ করা মুশকিল হতে পারে।
দিল্লি ডেয়ারডেভিলস, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু, কেকেআর এবং মুম্বই ইন্ডিয়ান্সপ্রত্যেকেরই একটা করে ম্যাচ বাকি। ১৫ ম্যাচে নাইটদের পয়েন্ট এই মুহূর্তে ১৯। সমসংখ্যাক ম্যাচে মুম্বইয়ের ১৮। কেকেআরকে শেষ ম্যাচে নামতে হবে পুণে-র বিরুদ্ধে, মুম্বইয়ের সেখানে প্রতিপক্ষ রাহুল দ্রাবিড়ের রাজস্থান রয়্যালস। গম্ভীররা যদি পুণে-কে হারিয়ে দেন, পয়েন্ট দাঁড়াবে ২১। দু’নম্বর হওয়া নিয়ে টেনশন আর থাকবে না। মুম্বই জিতলেও ভয় নেই। কারণ সেক্ষেত্রে তারা শেষ করবে ২০ পয়েন্টে। বরং গেইল-ঝড়ে উড়ে যাওয়ার পর দিল্লি (আপাতত ১৫ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট) যদি শেষ ম্যাচেও হারে, এক নম্বরের মুকুট উঠে যেতে পারে নাইটদের মাথায়। কিন্তু পুণে-র বিরুদ্ধে হারলেই গণ্ডগোল। সেই পরিস্থিতিতে দিল্লি আর মুম্বই যদি নিজেদের শেষ ম্যাচ জেতে, তা হলে সচিনরাই কিন্তু সেকেন্ড বয় হতে যাচ্ছেন। নাইটরা নয়। |
|
আইপিএলের নিয়ম অনুযায়ী লিগ টেবলে প্রথম দুইয়ের মধ্যে শেষ করা মানে, প্লে অফে একটা ম্যাচ হারলেও আরও একটা সুযোগ থাকছে। তিন নম্বর এবং চার নম্বর টিম হলে যা নেই। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় পুণে পৌঁছে নাইট শিবিরের কেউ কেউ বলেও দিলেন, এক নম্বর হলে ভাল। কিন্তু পুণে-কে হারিয়ে দু’নম্বরটা নিশ্চিত করতেই হবে। ওয়াংখেড়েতে হারানোর পর মুম্বইকে নতুন সুযোগ দেওয়ার মানে হয় না। তেমনই আবার এ দিনের হারের পর মনে করা হচ্ছে, মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চেন্নাই সুপার কিংসের কার্যত ছুটি হয়ে গেল। সব ক’টা ম্যাচ তাদের খেলা শেষ। পয়েন্ট ১৬ ম্যাচে ১৭। বাকিদের মেপে নিয়ে নিজদের তৈরি করার উপায় নেই। বরং তাকিয়ে থাকতে হবে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স এবং কিংস ইলেভেনের দিকে। যে দু’টো টিম এ দিন অবিশ্বাস্য জয় তুলে নিয়ে লিগ টেবল জমিয়ে দিল। দুই বাঁ-হাতির সৌজন্যে।
এক দিকে, বেঙ্গালুরুর জার্সিতে বিধ্বংসী গেইল। যিনি কি না কোটলার দর্শকদের হাসি মুছে দিলেন একাই ১৩-টা ছক্কা হাঁকিয়ে! অন্য দিকে আবার ‘বুড়ো’ গিলক্রিস্ট। যাঁর ৪৬ বলে ৬৪ ন:আ: শুধু পঞ্জাবকে প্লে অফের দৌড়েই এনে ফেলল না, চেন্নাইকেও ঠেলে দিল খাদের কিনারায়। আপাতত ১৫ ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট বেঙ্গালুরুর। কিংসদের পনেরো ম্যাচে ১৬। এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর বিশাল ওলট-পালট না হলে গত দু’বারের চ্যাম্পিয়ন চেন্নাইয়ের বাঁচা মুশকিল। |
আইপিএলে সেঞ্চুরি তিনি আগেও করেছেন। এ বারও ম্যাচ জেতানো ইনিংস আছে প্রচুর। কিন্তু এ দিন দিল্লি বোলারদের নিয়ে গেইল যা করলেন, সেটাকে তাণ্ডব বললেও কম বলা হয়। মাত্র ৬২ বলে অপরাজিত ১২৮। ৭ বাউন্ডারির সঙ্গে ১৩-টা ওভার বাউন্ডারি। স্ট্রাইক রেট ২০৬.৪৫! মূলত গেইল-ঝড়ই বেঙ্গালুরুকে ২০ ওভারে পৌঁছে দিল ২১৫-১ স্কোরে। সঙ্গে অবশ্য বিরাট কোহলির (৫৩ বলে ৭৩) ইনিংসও ধরতে হবে। দিল্লি চেষ্টা করেছিল। রস টেলর (২৬ বলে ৫৫) বেধড়ক মার শুরু করেছিলেন। কিন্তু লক্ষ্য এতই বেশি ছিল যে, তা আর শেষ পর্যন্ত ছোঁয়া যায়নি। আরসিবি জিতল ২১ রানে।
বেঙ্গালুরুর তবু একটা গেইল ছিল। কিংস ইলেভেনের বড় নাম বলতে শুধু ছিলেন অধিনায়ক গিলক্রিস্ট। যিনি এক মাস পর মাঠে ফিরে ৪৬ বলে ৬৪ ন:আ: করে গেলেন। ম্যাচ জিতলেন ৬ উইকেটে। ধারে-ভারে অনেক পিছিয়ে থাকা পঞ্জাবের বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে কুড়ি ওভারে ১২০-৭-এর বেশি তুলতে পারেনি চেন্নাই। আর ধোনির সেই অল্প টার্গেট হাতে প্রায় চার ওভার রেখে পেরিয়ে গেল কিংসরা। চেন্নাইয়ের হয়ে সর্বোচ্চ ডোয়েন ব্রাভোর (৪৮)। হাসি (৭), বিজয় (১০), ধোনি (৬), কেউই কিছু করতে পারেননি। |
|