টুকরো খবর |
সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে জখম ১২ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গোয়ালতোড় |
সিপিএমের বন্ধ কার্যালয় খোলা ও দলীয় পতাকা তোলাকে কেন্দ্র করে সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষ বাধল গোয়ালতোড়ে। বুধবার সন্ধ্যায় জিরাপাড়ায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে ১২ জন জখম হন। একজনের আঘাত গুরুতর। আহতদের চিকিৎসা চলছে গোয়ালতোড় ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। এই ঘটনায় ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতরা সিপিএম সমর্থক বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত মঙ্গলবার জিরাপাড়ায় সিপিএম কার্যালয়টি খোলেন দলের স্থানীয় নেতৃত্ব। দলীয় পতাকাও তোলা হয়। সিপিএমের দাবি, গ্রামের মানুষের সাহায্যে এলাকায় ১২টি দলীয় পতাকা টাঙানো হয়। এর পর বুধবার এলাকায় মিছিল করে তৃণমূল। অভিযোগ, সিপিএমের ওই কার্যালয় বন্ধ করে দিয়ে দলীয় পতাকাগুলো খুলে নেওয়ার ‘ফতোয়া’ দেয় তৃণমূলের লোকজন। সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের অভিযোগ, “দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের সন্ত্রাসে ওই এলাকায় একাধিক দলীয় কার্যালয় বন্ধ। সাধারণ মানুষ এখন তৃণমূলের কাজকর্মে অসন্তুষ্ট হওয়ায় ফের আমাদের সঙ্গে আসতে শুরু করেছেন। মানুষকে সঙ্গে নিয়েই জিরাপাড়ায় দলীয় অফিস খুলে দলের পতাকা টাঙানো হয়। এই ঘটনা সহ্য করতে না পেরে বুধবার সন্ধ্যায় তৃণমূলের লেঠেল বাহিনী আমাদের সমর্থকদের উপর চড়াও হয়। বাধা দিলে কর্মীদের মারধর করা হয়। ৭ জন জখম হয়েছেন।” তৃণমূলের ব্লক সভাপতি রবি রায়ের পাল্টা আভিযোগ, “আমাদের মিছিল চলাকালীন সিপিএম-ই হামলা চালায়। ঘটনায় আমাদের দলের ৫ জন জখম হন। সিপিএম কার্যালয় বন্ধ করে দেওয়া ও দলীয় পতাকা খোলার অভিযোগ মিথ্যা।” উত্তেজনা থাকায় এলাকায় পুলিশি টহল চলছে।
|
জয়েন্টে কৃতী দেবসৌম্যর ভালবাসা অঙ্ক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
জয়েন্ট-এন্ট্রাসের মেধা-তালিকায় বেশ উপরের দিকে স্থান করে নিয়ে শহর মেদিনীপুরের শিক্ষার্থী-মহলে খুশির ঢেউ তুলেছেন দেবসৌম্য চক্রবর্তী। কলেজিয়েট স্কুলের এই ছাত্র এ বার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ২০ র্যাঙ্ক করেছেন। দেবসৌম্য এখন মুম্বইয়ে। ইন্টার-ন্যাশনাল ম্যাথমেটিক্স ওলিম্পিয়াড ট্রেনিং ক্যাম্পে। গত ৩০ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে এই ক্যাম্প। চলবে ২৮ মে পর্যন্ত। কৃতী এই ছাত্রের বাবা দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, “পড়াশোনার প্রতি ওর আগ্রহ ছোট থেকেই। অঙ্কই সবচেয়ে পছন্দের। জয়েন্টে ভাল ফল হবে বলেই সবাই আশা করেছিলাম। কিন্ত এত ভাল হবে বলে ভাবিনি।” ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভাল র্যাঙ্ক হলেও দেবসৌম্য অঙ্ক নিয়েই পড়তে চান। ভর্তি হতে পারেন চেন্নাই ম্যাথমেটিক্যাল ইনস্টিটিউটে (সিএমআই)। থাকেন মেদিনীপুর শহরের অরবিন্দনগরে। সরকারি আবাসনে। বাবা দেবাশিসবাবু পূর্ত দফতরের (সড়ক) কর্মচারী। মা সুমাদেবী গৃহবধূ। দেবসৌম্যরা ২ ভাই, ১ বোন। ভাই দীপসৌম্য দশম শ্রেণিতে পড়ে। বোন পৌলমীও দশম শ্রেণির ছাত্রী। বাবার চাকরির সূত্রেই মেদিনীপুর শহরে থাকা। ছোট থেকেই। দেবাশিসবাবুর আদিবাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে। দেবসৌম্যর প্রাথমিকে পড়াশোনা মেদিনীপুর শহরেরই বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠে। তারপর মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুল। মাধ্যমিকে তাঁর প্রাপ্ত মার্কস ছিল ৬৮৭। দেবাশিসবাবু বলছিলেন, “ওর মা-ই পড়াশোনার দেখভাল করত। অঙ্ক নিয়েই পড়তে চায়। সিএমআইতে ভর্তির সুযোগও এসেছে। ওখানেই ভর্তি হতে পারে। ক্যাম্প থেকে ফিরুক। তার পরেই এ নিয়ে কথা হবে।” মা সুমাদেবীর কথায়, “অঙ্কই ওর প্রিয় সাবজেক্ট। ও যেখানে পড়তে চাইবে, সেখানেই পড়বে।” দেবসৌম্যর এই সাফল্যে খুশি পড়শিরাও।
|
দারিদ্র বাধা নয়, দেখাল জিয়াউর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
দারিদ্র ওঁর সাফল্যে বাধা হতে পারেনি। সংসারে অভাব-অনটন নিত্যসঙ্গী। কিন্তু সেই সমস্যাকে হেলায় হারিয়েই জয়েন্টে সফল হলেন সবংয়ের শেখ জিয়াউর রহমান। বাবা শ্রমিক। পঞ্চম-শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা গ্রামের মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রে। সেই জিয়াউরই এ বার মেডিক্যালে ৩০৮ র্যাঙ্ক করেছেন। চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন ছোট থেকেই। জয়েন্টে সফল হলেও সেই স্বপ্ন ছোঁয়া যাবে তো? প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছে। এই কৃতী ছাত্রের কথায়, “পরিবারে আর্থিক অনটন রয়েছে। জানি না কী হবে। তবে মেডিক্যালে ভর্তি হতে চাই।” পশ্চিম মেদিনীপুরের সবংয়ের মোগলানিচকে বাড়ি জিয়াউরের। বাবা শেখ ওলি হোসেন শ্রমিক। কাজে গেলে তবেই কিছু রোজগার হয়। তা দিয়েই সংসার চলে। মা জাহানারা বিবি গৃহবধূ। ৩ বোন, ১ ভাই। একটা মাত্র ছোট্ট ঘর। সেই ঘরেই দিন গুজরান। প্রাথমিকের পড়াশোনা গ্রামেরই প্রাথমিক স্কুলে। পরে মোগলানিচক মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রে পঞ্চম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি। মাধ্যমিক দেন ধনেশ্বরপুর হাইস্কুল থেকে। মাধ্যমিকে ভাল ফল করে বসন্তপুর ঝাড়েশ্বর বাণীভবনে ভর্তি হন। মোগলানিচক থেকে বসন্তপুর স্কুলের দূরত্ব প্রায় ৩ কিলোমিটার। পরিবারের সামর্থ্য নেই। তাই নতুন সাইকেল কেনা হয়নি। পুরনো একটি সাইকেলেই রোজ স্কুলে যেতেন। ইচ্ছে আর মনের জোর থাকলে শত সমস্যার মধ্যেও যে স্বপ্নকে আঁকড়ে বড় হয়ে ওঠা সম্ভব, তা দেখিয়েছেন জিয়াউর। তাঁর আত্মীয় শেখ আলি হোসেন বলছিলেন, “মেডিক্যালে পড়াশোনা কী ভাবে হবে, পরিবারের কেউ তা ভেবে পাচ্ছেন না। সহৃদয় কেউ সাহায্যের হাত বাড়ালে ও এগিয়ে যেতে পারবে।”
|
বৃহন্নলাদের সমস্যা নিয়ে সভা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
ওঁদের কারও নাম ইরা, কারও নাম পার্বতী। সাজগোজ, পোশাক মহিলাদের মতো হলেও ওঁরা কিন্তু মহিলা নন, নন পুরুষও। ওঁদের অনেকেই শিক্ষিত। বিএ, এমএ পাশ। কিন্তু সমাজ ওঁদের প্রান্তিক করে রেখেছে। এমনই ১৫ জন বৃহন্নলাকে নিয়ে বৃহস্পতিবার সভা হল খড়্গপুর স্টেশনে আরপিএফ ইস্টপোস্ট কার্যালয়ে। ছিলেন ইস্টপোস্টের ওসি উত্তম বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ আরপিএফ কর্মীরা। বৃহন্নলাদের সমস্যা সমাধান ও তাঁদের সমাজের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনতেই এই আলোচনাসভার আয়োজন বলে জানান উত্তমবাবু। আলোচনাসভায় এক অচেনা জীবনের কথা শোনালেন ইস্টপোস্টের ওসি উত্তম বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, মূলত উলুবেড়িয়া, টিকিয়াপাড়ার বাসিন্দা এই বৃহন্নলাদের পেশা খড়্গপুর রেল-বিভাগের বিভিন্ন দূরপাল্লার বা লোকাল ট্রেনে টাকা চাওয়া। কখনও কখনও যাত্রীদের অভিযোগও আসে ওঁদের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, “এক দিনেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। চেষ্টা করলে ধীরে ধীরে মূলস্রোতে ফিরে আসতে পারবেন ওঁরা। একটি গোষ্ঠীর সাথে কথা হয়েছে। আগামী দিনে ওঁদের ভিন্ন গ্রুপগুলির সঙ্গে আলোচনা করা হবে।” বৃহন্নলাদের পক্ষে সাক্ষী সাহা বলেন, “এই প্রথম কোনও অফিসার আমাদের সঙ্গে কথা বললেন। আমাদেরই অনেকে যাত্রীদের উপর জুলুম করে পয়সা নেয়। কিন্তু আমরা তা করি না। কারও কারও খারাপ ব্যবহারের জন্য আমাদের বদনাম হচ্ছে। ভোটের সময়ে নেতারা অনেক প্রতিশ্রুতি দিলেও ভোট শেষ হলে আর কেউ খোঁজও নেয় না আমাদের।” ওসির কাছে সাহায্যের আবেদনও জানান তিনি।
|
কারখানায় বিক্ষোভ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
রশ্মি মেটালিকসে বিক্ষোভ দেখাল যুব তৃণমূল। অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে কারখানার একের পর এক কর্মী দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন। অবিলন্বে পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবি জানানো হয়। বৃহস্পতিবারও খড়্গেশ্বর ঝা নামে এক কর্মী তড়িদাহত হয়ে জখম হন। তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়। এরপরই বিক্ষোভ শুরু হয়। কারখানা কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বিক্ষোভের পাশাপাশি তাঁদের দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও করে রাখা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় কারখানা। পরে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। দু’পক্ষের মধ্যে বৈঠকও হয়। সেখানে কারখানার তরফে যে ত্রুটি রয়েছে, তা দ্রুত সংশোধনের নির্দেশ দেয় প্রশাসন। জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস চৌধুরীর অভিযোগ, “দু-এক দিন অন্তর কারখানায় দুর্ঘটনা ঘটছে। উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই। কর্মীদের জন্য কোনও সুব্যবস্থা নেই। পানীয় জলের ব্যবস্থা পর্যন্ত নেই।” তবে ঘেরাও করে কারখানা বন্ধের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এই তৃণমূল নেতা। কারখানার ভাইস প্রেসিডেন্ট (এইচআর) অভিজিৎ রায় অবশ্য বলেন, “অনেকক্ষণ ঘেরাও করে রেখেছিল। জলও খেতে দেয়নি। কারখানার কোনও কর্মী আহত হলে খারাপ লাগে। তার উপর এই বিক্ষোভ আমাদের মর্মাহত করেছে।” তিনি জানান, কারখানায় যে সামান্য পরিকাঠামোগত ত্রুটি রয়েছে, তা কয়েকদিনের মধ্যেই ঠিক করা হবে। তবে তার জন্যই যে দুর্ঘটনা ঘটছে, তা মানতে নারাজ কর্তৃপক্ষ। তাঁদের মতে, অসতর্কতার জন্য ছোটখাট দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। তবে সেটাও যাতে না ঘটে, সে জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
|
হোটেল-ঘরে ত্রিপুরাবাসীর ঝুলন্ত দেহ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
খড়্গপুর স্টেশনের পাশের একটি হোটেলের ঘর থেকে বৃহস্পতিবার সকালে উদ্ধার হল ত্রিপুরার এক ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ। খড়্গপুর মহকুমা পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম নিরঞ্জন দেববর্মা (৪২)। বাড়ি ত্রিপুরার বিশালগড়ে। তাঁর সঙ্গের কাগজপত্র থেকেই এই পরিচয় জানা গিয়েছে। ত্রিপুরা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগও করেছে খড়্গপুর পুলিশ। দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। মৃতের সঙ্গের কাগজপত্রের মধ্যেই হায়দরাবাদ থেকে গুয়াহাটিগামী ট্রেনের একটি টিকিট পাওয়া গিয়েছে। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, বুধবার রাতে হায়দরাবাদ থেকে আসা ট্রেন থেকে খড়্গপুরে নেমেছিলেন ওই ব্যক্তি। রাত ১২টা নাগাদ স্টেশনের পাশের একটি হোটেলে ওঠেন। বৃহস্পতিবার সকালে অনেকক্ষণ দরজা বন্ধ দেখে হোটেলকর্মীদের সন্দেহ হয়। অনেক ডাকাডাকিতেও সাড়া না মেলায় খবর দেওয়া হয় পুলিশে। পুলিশ এসে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে।
|
উষ্ণতম দিন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
বৃহস্পতিবার ছিল এ মরসুমে মেদিনীপুরের উষ্ণতম দিন। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আপেক্ষিক আর্দ্রতার সর্বোচ্চ পরিমাণ ৯২ শতাংশ। মেদিনীপুর কলেজের এন সি রানা আকাশ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আজ, শুক্রবার দুপুরেও তাপপ্রবাহ চলবে। সকালে আকাশ মেঘলা থাকতে পারে। সন্ধ্যায় ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। |
|