তীব্র গরমে একেই মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা! দিনে-রাতে গৃহস্থের ঘরে বিদ্যুতের চাহিদাও চড়চড়িয়ে বাড়ছে। তার সঙ্গে কয়লার দাম বাড়ার সুবাদে ‘গোদের উপরে বিষফোঁড়া’র মতো আবার বাড়ছে বিদ্যুতের দাম। অর্থাৎ এই গরমে বিদ্যুতের বিলও এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে যাবে।
রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা সূত্রের খবর: কয়লার মূল্যবৃদ্ধির কারণে ফুয়েল সারচার্জ (জ্বালানি খরচ) বাবদ ইউনিটপিছু গড়ে ২৯ পয়সা মাসুল বাড়ছে। এতে বণ্টন এলাকায় প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম হতে চলেছে গড়ে ৫ টাকা ৮২ পয়সা। গত মাস পর্যন্ত তা ছিল ৫ টাকা ৫৩ পয়সা। এই নিয়ে গত ছ’মাসে বণ্টন এলাকায় চার বার বিদ্যুতের দাম বাড়ল। সিইএসসি এলাকায় বিদ্যুতের মাসুল ইউনিটপিছু গড়ে ৫ টাকা ৮৮ পয়সা। বণ্টন সংস্থার এক কর্তা জানান, রেল বাজেটের আগে রেলের পণ্য-মাসুল বাড়ানো হয়েছে। কোল ইন্ডিয়ার বিভিন্ন মানের কয়লার দামও বেড়েছে। তাই বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের উৎপাদন খরচ অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। বাড়তি ব্যয় সামাল দিতেই মে মাসের বিলে এই বাড়তি ফুয়েল সারচার্জ বসছে। বণ্টন সংস্থার কর্তারা অবশ্য আগেই জানিয়েছিলেন, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা আনার রেলভাড়া বাড়ায় তাঁদের বিদ্যুতের মাসুল ইউনিটপিছু ৯ পয়সা বাড়তে পারে। কয়লার মূল্যবৃদ্ধির দরুণ এর সঙ্গে আরও ২০ পয়সা যোগ হয়েছে। জ্বালানি খরচ বাড়লে বিদ্যুৎ সংস্থাগুলো এখন সংশ্লিষ্ট রাজ্য বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের অনুমতি ছাড়াই নিজেদের মতো করে মাসুল বাড়িয়ে নিতে পারে। পরে তার যথাযথ হিসেব জমা দিতে হয় কমিশনের কাছে। কমিশন যাচাই করে দেখে, মাসুলবৃদ্ধি যুক্তিযুক্ত ছিল কি না।
পশ্চিমবঙ্গে নতুন সরকার ক্ষমতায় এসে ঘোষণা করেছিল, বিদ্যুতের দাম বাড়বে না। ফলে উৎপাদন খরচ দিন দিন বাড়লেও গত বছর মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এক পয়সাও মাসুল বাড়াতে পারেনি বণ্টন সংস্থা। যার খেসারত দিতে হয় লোকসানের বিপুল বোঝা ঘাড়ে নিয়ে। বাস্তব পরিস্থিতি বুঝে শেষমেশ গত ডিসেম্বরে রাজ্য সরকার প্রথম বিদ্যুৎ-মাসুল বাড়ানোর অনুমতি দেয়। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতেও মাসুল বেড়েছে। তার পরে আবার বাড়ল এই মাসে। |