|
|
|
|
পরিষেবা নিয়ে তারাদের লড়াই জমেছে নলহাটিতে |
অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় • নলহাটি |
এ বার পুরভোটে সব চেয়ে নজরকাড়া ওয়ার্ড ৮ নম্বর। এলাকার বাসিন্দাদের কথায়, এখানে কে ঘরের ছেলে তা প্রমাণের ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেনবিদায়ী পুরপ্রধান বিপ্লব ওঝা, প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা কংগ্রেস প্রার্থী আইনাল হুদা আহমেদ এবং সুব্রত দত্ত। এ কথায় এই ওর্য়াডে এ বার তারাদের ভিড়।
প্রসঙ্গত, বিপ্লববাবু এ বার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডেও দাঁড়িয়েছেন। আর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আইনাল হুদা আহমেদ (নতুদা) ২০০২ সালে ১১ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হয়ে প্রথম পুরপ্রধান হয়েছিলেন। এ বার সেই ১১ নম্বর ওয়ার্ড ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ঢুকে গিয়েছে। নতুদা বলেন, “৭ নম্বর ওয়ার্ডে বাড়ি হলেও রাস্তার ওপারে ৮ নম্বর ওর্য়াড। এই ওয়ার্ডেও আমি ঘরের ছেলে।” অন্য দিকে, ২০০২ সালে নির্দল প্রার্থী হিসেবে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস প্রার্থীকে হারিয়ে জয়ী হয়েছিলেন সুব্রতবাবু। পরবর্তীকালে তিনি সোস্যালিস্ট দলে যোগ দিয়েও বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস প্রার্থীকে পরাজিত করেছিলেন। এই ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুব্রতবাবুর দাবি, “এলাকার মানুষ আমাকে মুক্তি নামে ডাকেন।” ৮ নম্বর ওয়ার্ড ঘুরে তাই একটাই প্রশ্ন শোনা গেল, এ বার কি ঘরের ছেলে ‘মুক্তি’র পরিবর্তন হবে? না তার উল্টো হবে?
নতুদার কটাক্ষ, “বিপ্লববাবুরা যদি তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হতেন তা হলে জানতাম নীতির ঠিক আছে। তাঁরা মূলত বিশ্বাসভঙ্গ করেছেন।” বিপ্লববাবু এবং নতুদা দু’জনেই ডানপন্থী প্রার্থী। অন্য দিকে সুব্রতবাবু বাম সমর্থিত প্রার্থী। স্বভাবতই এই ওয়ার্ড ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনা বেশি রয়েছে। |
|
ছবিটি তুলেছেন সব্যসাচী ইসলাম। |
এ দিকে, প্রচার চালানোর সময়ে বিপ্লববাবু কাউন্সিলর সুব্রতবাবুর বিরুদ্ধে অনুন্নয়নের অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর দাবি, “পরিকল্পনা মাফিক উন্নয়ন হয়নি। রাস্তাঘাট, নিকাশি নালা, বিদ্যুৎ, গরিব মানুষের কাছে যে সব পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া উচিত ছিল তা দিতে ব্যর্থ কাউন্সিলর। পানীয় জলের অভাব থাকা সত্বেও অপরিকল্পিত ভাবে কাজ হয়েছে।” অন্য দিকে, কংগ্রেস প্রার্থী আইনাল হুদা আহমেদের দাবি, “পানীয় জল, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন খুব একটা ভাল হয়নি।” যাঁর বিরুদ্ধে অনুন্নয়ন নিয়ে অভিযোগ উঠেছে, কাউন্সিলর সুব্রতবাবু পাল্টা দাবি করেছেন, “নতুদা যখন পুরপ্রধান ছিলেন তখন থেকে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হয়। কিন্তু এই ওয়ার্ডের এক জনও শিক্ষিত বেকার ছেলেকে কাজে লাগানো হয়নি। সেই ধারা বিপ্লববাবুও বহাল রেখেছেন। আশা প্রকল্পেও এই ওয়ার্ড থেকে কেউ কাজ পাননি।” তাঁর অভিযোগ, “নতুদা এবং বিপ্লববাবুর বিরুদ্ধে আমি একমাত্র বিরোধীতা করতাম, তাই উন্নয়নের টাকা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।” এ প্রসঙ্গে আইনুল হুদা আহমেদর জবাব, “আমি কাউকে আক্রমণ করে কথা বলতে ভালবাসি না।” |
নজরে নলহাটি
ওয়ার্ড ৮ |
বিপ্লব ওঝা, প্রার্থী, তৃণমূল |
আইনাল হুদা আহমেদ, প্রার্থী, কংগ্রেস |
সুব্রত দত্ত, কাউন্সিলর |
|
ওয়ার্ডে পরিকল্পনা মাফিক
উন্নয়ন হয়নি। বিভিন্ন
পরিষেবায় খামতি আছে।
|
জলকষ্ট আছে। নিকাশি,
রাস্তার উন্নতি হয়নি।
|
১৯টি পরিবারকে ঘর বানিয়ে দিয়েছি। দাসপাড়া, বিধুপাড়া, মাঠপাড়ায় বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। জল সমস্যা মেটাতে ৮টি ট্যাপ
পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে।
|
|
বিধুপাড়া, দাসপাড়ায় রাস্তা সংস্কার হয়নি।
নিকাশি নালার অভাবে রাস্তা প্লাবিত হচ্ছে।
সাফাই কর্মীর অভাবে জায়গায় জায়গায় জঞ্জাল জমে থাকে। |
|
আর বিপ্লববাবুর দাবি, “৫ বছরে সমবণ্টন নীতিতে উন্নয়নের টাকা দেওয়া হয়েছে।” অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ যাই থাক, এ দিন ওয়ার্ড ঘুরে দেখে গেল, দাসপাড়ায় রাস্তা খারাপ রয়েছে, নিকাশি নালা সঙ্কীর্ণ। ফলে বর্ষায় নলহাটি থেকে থানা বা বাজার যাওয়ার রাস্তায় জল জমে যায়। বিধু পাড়ায় বেশ কিছু দুঃস্থ পরিবার এখনও বিদ্যুৎ পাননি। জঞ্জাল ফেলার নির্দিষ্ট জায়গার অভাবে যত্রতত্র আবর্জনা জমে আছে। এই সব পরিষেবা নিয়ে স্বভাবতই এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। যাই হোক, তারাদের লড়াই জমে উঠেছে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে। |
|
|
|
|
|