গরিব মানুষের জন্য বরাদ্দ চাল-গম লোপাটের দায়ে বর্ধমান হোলসেল কো-অপারেটিভ সোসাইটির কাটোয়া শাখার চেয়ারম্যান তথা ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা নেতা দীপককুমার পালকে দশ বছর কারাদণ্ড দিল আদালত। সমবায় সমিতির ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক আব্দুল মোতিনকেও এই সাজা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বর্ধমানের চতুর্থ দায়রা তথা বিশেষ আদালতের বিচারক সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের সাজা শোনান। মামলার সরকারি আইনজীবী কমলকৃষ্ণ তা জানান, ১৯৯৯ সালের ২৩ মার্চ বন্যায় গৃহহীন ও দুঃস্থ মানুষদের চাল-গম দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল সরকার। ১২০ কুইন্ট্যাল চাল ও ৪৬৬.৪৬ কুইন্ট্যাল গম বরাদ্দ করা হয়। কাটোয়া মহকুমায় সে সব বিলির দায়িত্ব ছিল সমবায় সমিতিটির। কিন্তু কিছু দিন পরে তারা বিলি বন্ধ করে দেয়। রেশন ডিলারেরা মহকুমাশাসক ও বিডিও-দের কাছে অভিযোগ করেন, কোনও বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই তাঁদের চাল-গমের সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে। খাদ্য দফতরের তদন্তে দেখা যায়, মাত্র ৫১ কুইন্ট্যাল চাল এবং ২৩৪.৮৪ কুইন্ট্যাল গম বিলি হয়েছে। বাকিটার হদিস নেই।
২০০৬ সালের ৮ জুন কাটোয়ার তৎকালীন মহকুমাশাসক সুবীরকুমার চট্টোপাধ্যায় কাটোয়া থানায় সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে চাল-গম আত্মসাতের অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত করে চেয়ারম্যান দীপককুমার পাল, ভাইস চেয়ারম্যান চিরকুমার দত্ত, ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক আব্দুল মোতিন ও সিইও অশোককুমার চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে। অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় চিরবাবু ও আশোকবাবু এ দিন বেকসুর খালাস হয়েছেন। দীপককুমার ও মোতিনের কারাদণ্ড ছাড়াও হাজার টাকা করে জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। চাল-গম লোপাটে সমবায় সমিতির বাকি বোর্ড সদস্যদের কী ভূমিকা ছিল, সে বিষয়ে তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য জেলা পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। |