বাসের ধাক্কায় মৃত্যু ছাত্রের, জনতা ক্ষুব্ধ
বাসের ধাক্কায় পঞ্চম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল কোচবিহারের বক্সিরহাট থানার জোড়াই মোড় এলাকা। মঙ্গলবার সকালে ওই ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানায়, মৃত ছাত্রের নাম রতন বর্মন (১০)। তার বাড়ি মধ্য বালাকুঠি গ্রামে। বালাকুঠি হাইস্কুলের পড়ুয়া রতন এ দিন সকালে সাইকেলে চড়ে স্কুলের পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিল। ঘুরপথে আসা একটি বাসের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
উত্তেজিত জনতা বাসটি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা এলাকায় আসেন। তাঁদের লক্ষ করে জনতা ইট- পাটকেল ছুড়তে শুরু করে। পুলিশের একটি ভ্যানেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
দুর্ঘটনার পর বাসটিতে আগুন দেয় জনতা। হিমাংশুরঞ্জন দেবের ছবি।
ভাঙচুর করা হয় বিডিও’র গাড়ি। আগুন নেভাতে যাওয়া দমকলের একটি গাড়ি ও রাস্তায় আটকে পড়া একটি অ্যাম্বুল্যান্সও ভাঙচুর করা হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্সের জওয়ানরা বেধড়ক লাঠি চালান। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ শূন্যে ৪ রাউন্ড গুলিও চালায়। বাস ও পুলিশের ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, বিডিও’র গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ বিকাল অবধি ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে। বাসের চালক পলাতক। কোচবিহারের পুলিশ সুপার প্রণব দাস বলেন, “ওই ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনার জেরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। অবস্থা সামলাতে লাঠি চালাতে হয়। তবে গুলি চালানোর অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন।” বাসিন্দাদের অভিযোগ, জোড়াই মোড় এলাকায় ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশেই রয়েছে বাণিজ্য কর বিভাগের চেকপোস্ট। অসম-বাংলা রুটে প্রতিদিন গড়ে প্রায় এক হাজার ট্রাক যাতায়াত করে। রাস্তার পাশেই নথিপত্র পরীক্ষার জন্য ট্রাক দাঁড় করানো হয়। এতে জোড়াই মোড়ে যানজট লেগেই থাকে। এই সমস্যা এড়াতে কোচবিহার, তুফানগঞ্জ থেকে বক্সিরহাট যাতায়াতের বহু বাস লাগোয়া বিভিন্ন জনবহুল গলিপথ দিয়ে ঘুরপথে যাতায়াত করে।
এ দিন সকালেও তুফানগঞ্জ থেকে বক্সিরহাটগামী বাসটি ঘুরপথে একটি সরু রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। বাসিন্দাদের অভিযোগ, চালক প্রচণ্ড জোরে গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। তাতেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ, প্রশাসনের কাছে বারবার ঘুরপথে ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধের দাবি জানিয়েও লাভ হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা পিন্টু রায় বলেন, পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নিলে ওই সব বাস কোনও ভাবেই গলির রাস্তায় যাতায়াত করতে পারত না। পুলিশ আমল দেয়নি বলেই এ দিন ওই ছাত্রের মৃত্যু হল। বক্সিরহাটের বিডিও সিদ্ধার্থ সুব্বা বলেন, “দুর্ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় যাই। আচমকা আমার গাড়িতে ভাঙচুর শুরু হয়। পুলিশের ভ্যানে আগুন ধরানো হয়। দ্রুত সবাইকে নিয়ে বৈঠক ডাকা হবে।” ঘটনার পর এলাকায় যান পুলিশ সুপার-সহ পদস্থ কর্তারা। গোটা এলাকা থমথমে চেহারা নিয়েছে। পুলিশি টহল চলছে। মৃতের বাবা নবীন বর্মন বলেন, “দুই ছেলের মধ্যে রতন বড়। পরীক্ষা দিতে গিয়ে ওকে এই ভাবে চলে যেতে হবে ভাবতে পারছি না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.