রাজ্যে সিপিএম বলে আর কিছু নেই, কটাক্ষ মুকুলের
রাজ্যে বিরোধী দল হিসাবে সিপিএমের ‘অস্তিত্ব’কেই এ বার কটাক্ষ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা রেলমন্ত্রী মুকুল রায়। তাঁর বক্তব্য, “সিপিএম বলেই রাজ্যে আর কিছু নেই! আছে শুধু কল্পিত বিরোধী-পক্ষ!”
যদিও সেই ‘কল্পিত’ বিরোধীদের উদ্দেশেই মঙ্গলবার চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূল নেতারা। শ্যামনগরের ফিডার রোডে অন্নপূর্ণা কটন মিলের মাঠ এবং পরে পানিহাটির রাসমনি মোড়ে দু’টি সভা করেন মুকুলবাবু। গত রবিবার এই দুই জায়গায় একই সময়ে (বিকেল ৫টা ও ৭টা) সভা করে গিয়েছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট। তৃণমূল নেতৃত্ব এ দিনের সভাকে তার ‘পাল্টা’ বলে মানতে চাননি।
মুকুলবাবুরও দাবি, সরকারের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এই সভার আয়োজন। গৌতম দেব সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে একের পর এক প্রথম সারির নেতারা (প্রকাশ কারাট, মানিক সরকার, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য প্রমুখ) এই জেলায় সভা করছেন। সিপিএমের ওই কর্মসূচিকে কটাক্ষ করে মুকুলবাবু এ দিন বলেন, “আমরা সরকারের বর্ষপূর্তি উদযাপন করছি। আর ওঁরা এখানে হারের বর্ষপূর্তি উদযাপনে উঠেপড়ে লেগেছেন!” স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের কটাক্ষ, “এ-ও এক পরিবতর্ন। আগে বাম নেতারা গরমের ছুটি কাটাতে যেতেন বিলেতের ঠান্ডা জায়গায়। আর এখন আসছেন উত্তর ২৪ পরগনায়!”
কারাটের সভার তুলনায় তাঁদের সভায় ভিড় যে বেশি হয়েছে, তা-ও তৃণমূল নেতারা বারবার দাবি করেছেন। বস্তুত, সিপিএমের সাধারণ সম্পাদককে সরাসরি কটাক্ষ করে মুকুলবাবু এ-ও বলেছেন, “প্রকাশ কারাট নিজে কখনও ভোটে দাঁড়াননি। আর তিনিই ঘুরে ঘুরে সভা করছেন!”
দু’টি সভাতেই তৃণমূলের গত এক বছরের কাজের ‘সাফল্য’ তুলে ধরেন মুকুলবাবু। সেই সঙ্গে সিপিএমের সমালোচনাতেও সরব ছিলেন তিনি। মুকুলবাবুর কথায়, “সিপিএম তো রাজ্যে উন্নয়ন দেখতেই পাচ্ছে না। চোখে ন্যাবা হয়েছে!” ক’দিন আগেই ব্যারাকপুরে তৃণমূলের মিছিলে মুকুলবাবুর পাশে হাঁটতে দেখা গিয়েছিল ভাটপাড়ার বিধায়ক অর্জুন সিংহকে। জেলা তৃণমূলের অন্দরে যাঁরা পরস্পরের ‘বিরোধী গোষ্ঠী’ বলেই পরিচিত। কিন্তু তার পরেও ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে গোষ্ঠী-কোন্দল থামানো যায়নি।
সম্প্রতি হালিশহরে খুন হন এক তৃণমূল কর্মী। গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের জেরেই তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে তৃণমূলের অন্দরে ক্ষোভ আছে। যা নিয়ে ইদানীং ঈষৎ ‘বিব্রত’ স্থানীয় নেতৃত্ব। এই প্রেক্ষাপটেই এ দিন শ্যামনগরে অর্জুন ও মুকুলবাবুর পারস্পরিক ‘সৌহার্দ্য বিনিময়’ দলের নেতা-কর্মীদেরও চোখে পড়েছে। মুকুলবাবু অনেক কথার আগেই বলেন, “অর্জুনের সঙ্গে গলা মিলিয়ে বলছি।” অর্জুনও পাল্টা ‘শিষ্টাচার’ দেখাতে কসুর করেননি। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে দলের নেতা-কর্মীরা ‘এককাট্টা হয়ে’ কাজ করবেন বলেও তিনি জানান।
সম্প্রতি খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কিছু মন্তব্যকে ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। সিপিএমের লোকজনের সঙ্গে ‘সামাজিক সম্পর্ক’ এড়িয়ে চলতে দলের নেতা-কর্মীদের ‘পরামর্শ’ দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী। তাঁর মন্তব্য আনন্দবাজার এবং আরও কিছু সংবাদমাধ্যম ‘বিকৃত’ করেছে বলে এ দিন মন্তব্য করেছেন নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক। যার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে পার্থবাবু বলেন, “আজকে যদি শুভেন্দুবাবু (অধিকারী) পূর্ব মেদিনীপুরে সেই সব সিপিএম নেতাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে গল্প করেন, যারা তৃণমূল কর্মীদের খুন করেছে, অত্যাচার করেছে তবে কী মা-মাটি-মানুষ আমাদের ক্ষমা করবে? আপনারা ক্ষমা করবেন?” উপস্থিত জনতা সমবেত স্বরে ‘না’ বলে ওঠে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.