তোপের মুখে বোর্ডও
গড়াপেটার দায়ে সাসপেন্ড হলেন পাঁচ ক্রিকেটার
শেষ চারের লড়াই জমে ওঠার মুখে দুর্নীতির অভিযোগে কেঁপে উঠল আইপিএল। একটি চ্যানেলের গোপন ক্যামেরা অভিযানে ফের বেরিয়ে পড়েছে ক্রিকেটে গড়াপেটার ভূত। তার সঙ্গেই রয়েছে আইপিএলে টেবিলের তলায় বিপুল কালো টাকা লেনদেনের গুরুতর অভিযোগ।
গোপন ক্যামেরা অভিযানে অভিযুক্ত পাঁচ ক্রিকেটারকে এ দিন সাসপেন্ড করেছে বোর্ড। পাঁচ জনই অনামী ক্রিকেটার। এঁরা হলেন মণীশ মিশ্র (পুণে ওয়ারিয়র্স), সলভ শ্রীবাস্তব এবং অমিত যাদব (কিংস ইলেভেন পঞ্জাব), টি পি সুধীন্দ্র ও অভিনব বালি (ডেকান চার্জার্স)। কেউ গোপন ক্যামেরার সামনে বলেছেন, দশ লাখ টাকার বিনিময়ে ‘নো-বল’ করতে রাজি। কেউ বলেছেন, ভারতের হয়ে খেলেননি এমন ক্রিকেটারদের তিরিশ লাখের বেশি দেওয়া যাবে না, এই নিয়মটা মানাই হয় না। তাঁদের কখনও কখনও নগদ কালো টাকা দেওয়া হয়। কখনও দেওয়া হয় বাড়ি, গাড়ি বা অন্য দামী জিনিস।
ক্রিকেটারদের সাসপেন্ড করার পাশাপাশি প্রাক্তন সিবিআই অফিসারকে দিয়ে তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড। সংশ্লিষ্ট চ্যানেলের কর্তাও জানিয়ে দিয়েছেন, ওই টেপ তিনি পরীক্ষার জন্য দিতে রাজি। কিন্তু অতীতে বোর্ড বা ক্রিকেট প্রশাসনের ভূমিকা দেখার পরে এই উদ্যোগে কারওরই খুব একটা আস্থা নেই। বরং প্রশ্ন উঠছে, শুধু পাঁচ ক্রিকেটারকেই কেন সাসপেন্ড করা হল? কেন সংশ্লিষ্ট ফ্র্যাঞ্চাইজিদের ডেকে জেরা করা হচ্ছে না? আরও প্রশ্ন উঠছে যে, এই পাঁচ জন খুবই অনামী এবং অনিয়মিত প্লেয়ার। এঁদের পক্ষে কি স্পটফিক্সিংয়ে যুক্ত থাকা সম্ভব, যদি বড় কোনও নাম পিছনে না থাকে?
বোর্ড-প্রধান এন শ্রীনিবাসন এ দিন দাবি করেছেন, আইপিএল দুর্নীতিমুক্ত। একটি টিভি চ্যানেলকে শ্রীনিবাসন বলেছেন, “আমার মনে হয় এটা শুধু মাত্র কয়েক জন প্লেয়ারের প্রলুব্ধ হওয়ার ঘটনা। তবু আমরা তদন্ত করে দেখছি। সমস্ত দিক অনুসন্ধান করে দেখা হবে। তবে আমি এটুকু বলতে পারি, আইপিএল দুর্নীতিমুক্ত।” সাসপেন্ড হওয়া মণীশ মিশ্র ইতিমধ্যেই বোর্ডকে চিঠি লিখে ক্ষমা চেয়েছেন। তাঁর দাবি, তিনি নেহাতই ‘কথার ছলে’ ওই সব মন্তব্য করেছিলেন।
প্রশ্ন কিন্তু এর পরেও থামছে না। গোপনে প্লেয়ারদের বেশি টাকা দেওয়ায় অভিযোগ আগেও উঠেছে। এবং সে জন্য প্লেয়ার সাসপেন্ডও হয়েছেন। রবীন্দ্র জাডেজা এক বছরের জন্য এবং মণীশ পাণ্ডে চার ম্যাচের জন্য সাসপেন্ড হয়েছিলেন। ক্রিস গেইলকেও এ বারে গোপনে চুক্তির চেয়ে বেশি টাকা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
নাইট রাইডার্সের প্রাক্তন ক্রিকেটার আকাশ চোপড়া এ দিন বলেছেন, “রবীন্দ্র জাডেজাকে যখন সাসপেন্ড করা হল, তখনই তো পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল যে, গোপন লেনদেন হচ্ছে। তার পরেও কেন বোর্ড হাত গুটিয়ে বসে থাকল?” অনেকে মনে করছেন, ৩০ লাখের সীমা রাখাটাই ভুল হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, অম্বাতি রায়ডুর মতো ক্রিকেটার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে পরের পর ম্যাচ জেতাচ্ছেন। অথচ তিনি ভারতের হয়ে খেলেননি বলে এই নিয়মের আওতায় পড়ছেন। এই নিয়মের জন্যই কালো টাকা লেনদেন হচ্ছে। স্বচ্ছতা রাখতে সবাইকে নিলামে তোলা উচিত।
এখন পর্যন্ত স্পটফিক্সিংয়ের অভিযোগ বলতে গোপন ক্যামেরার সামনে এক ক্রিকেটার বলছেন, দশ লাখ টাকার বিনিময়ে তিনি ‘নো-বল’ করতে রাজি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সেই ক্রিকেটার নিয়মিত খেলেনই না! তাই জল্পনা শুরু হয়েছে, পাঁচ অনামী ক্রিকেটারকে সাসপেন্ড করেই কি বিতর্ক থামবে? নাকি বোর্ডের তদন্তে নতুন তথ্য উঠে আসবে? অথবা ক্রোনিয়ে-আজহারউদ্দিনদের সময় থেকে চলা রীতি মেনে অভিযোগ ধামাচাপা দিতেই ব্যস্ত থাকবে বোর্ড?




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.