বেশি আসনের উড়ান পরিষেবার জন্য কোচবিহার বিমানবন্দরে কেমন পরিকাঠামো গড়ে তোলা জরুরি তা জেলা প্রশাসনের কাছে জানতে চাইল রাজ্য সরকার। ওই বিষয়ে প্রস্তাব পাঠাতে এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন প্রশাসনের কর্তারা। কোচবিহারের জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “বেশি সংখ্যক আসন বিশিষ্ট উড়ান চালাতে কোচবিহার বিমানবন্দরে কেমন পরিকাঠামো প্রয়োজন সেই বিষয়ে রাজ্য সরকারের তরফে জানতে চাওয়া হয়েছে। এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রস্তাব তৈরির কাজ চলছে। কাজ শেষ হয়ে গেলে দ্রুত পাঠিয়ে দেওয়া হবে।” প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৫ সেপ্টেম্বর কোচবিহার থেকে উড়ান পরিষেবা শুরু হয়। ‘নর্থ-ইস্ট শাটল’ নামে একটি সংস্থা ১৮ আসনের উড়ান চালু করে। কিছুদিন গুয়াহাটি থেকে সকালে কোচবিহার ছুঁয়ে বিমানটি কলকাতা উড়ে যায়। কিন্তু যাত্রী না-হওয়ায় গত ৩ অক্টোবর পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনা নিয়ে জেলা জুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ব্যাবসায়ী মহলও হতাশ হয়েছেন। শুধু বাসিন্দাদের অভিযোগ নয়। প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ ওই সময় জানান, উড়ানে যাত্রী ভাড়া ৫ হাজার টাকা হওয়ায় তেমন সাড়া মেলেনি। বিভিন্ন মহল থেকে বেশি আসনের বিমান চালানোর দাবি ওঠে। রাজ্য সরকারকে স্মারকলিপি দিয়ে জানানো হয়, বেশি আসনের উড়ানের ব্যবস্থা হলে ভাড়া অনেকটা কমবে। যাত্রীর সমস্যা হবে না। ওই দাবি খতিয়ে দেখার সময় জানা যায় কোচবিহার বিমানবন্দরের যে পরিকাঠামো বর্তমানে রয়েছে সেখানে বেশি আসনের বিমান চালানো সম্ভব নয়। বিষয়টি রাজ্য সরকারকে জানানো দেওয়া হয়। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রিপোর্ট দেখার পরে রাজ্য সরকার বিমান বন্দরের পরিকাঠামো উন্নয়নের চিন্তাভবনা শুরু করে। এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার কোচবিহারের এক আধিকারিক জানান, কোচবিহার বিমানবন্দরে রানওয়ের দৈর্ঘ্য ১০৬৯ মিটার। পিছনে মরাতোর্সা নদী থাকায় তৈরির সময় রানওয়ে বাড়ানোর সমস্যা ছিল। বর্তমান পরিকাঠামোয় ১৮ আসনের ছোট বিমান চালানো সম্ভব। ৩২ থেকে ৪০ আসনের বড় বিমান চালাতে রানওয়ে কমপক্ষে ১২০০ মিটার করতে হবে। এ জন্য মরাতোর্সা নদীর গতিপথ বদলাতে হবে। অথবা নদীর উপরে বক্স কালভার্ট তৈরি করতে হবে। কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি ও বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “বেশি আসনের উড়ান পরিষেবা শুরু হলে মাথাপিছু যাত্রী ভাড়া কমতে পারে। দলের তরফে ওই প্রস্তাব রাজ্য পরিবহণ দফতরে দেওয়া হয়েছে।” কিন্তু রানওয়ে কতদিনে বাড়ানো সম্ভব হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক উদয়ন গুহ। তিনি বলেন, “রানওয়ে না বাড়িয়ে তড়িঘড়ি উড়ান চালু করার ফলে হতাশ হতে হয়েছে। ফের কবে নদীর ওপর কালভার্ট তৈরি করে রানওয়ে বাড়ানো সম্ভব হবে সেটাও স্পষ্ট নয়। দেখা যাক কী দাঁড়ায়!” কোচবিহার জেলা মার্চেন্ট চেম্বার অ্যান্ড কমার্সের সম্পাদক রাজেন বৈদ বলেন, ছোট বিমান পরিষেবা চালু রেখে পরিষেবা উন্নয়নের কথা ভাবা হলে ভাল হত। রানওয়ে বড় না-হওয়া পর্যন্ত কী তবে উড়ান পরিষেবা বন্ধ থাকবে।” |