পরীক্ষার সময় নকলে বাধা দেওয়ায় শিক্ষিকার হাত মুচড়ে দেওয়া এবং অধ্যক্ষকে ঘুষি মারার অভিযোগ উঠল প্রথম বর্ষের এক কলেজ ছাত্রের বিরুদ্ধে। উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর কলেজের ঘটনা।
সোমবার ওই ঘটনার পরে কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারা রৌশন জামির নামে অভিযুক্ত ছাত্রটিকে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশ কলেজে যায়। পুলিশের সামনেই রৌশনকে কিছু লোক কলেজ থেকে নিয়ে চলে যায়। এর পরে কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা ইসলামপুর থানায় দীর্ঘক্ষণ অবস্থান-বিক্ষোভ করে ওই ছাত্রকে গ্রেফতারের দাবি তোলেন। অধ্যক্ষ উত্যর্থ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ছাত্রটি শিক্ষিকার হাত মুচড়ে দেওয়ার পরে আমাকে ঘুষি মারে। আমরা ওকে আটকে রাখলেও বহিরাগতদের সাহায্যে ছেলেটি পুলিশের সামনেই পালিয়ে যায় বলে জানতে পেরেছি।” ইসলামপুরের এসডিপিও সুবিমল পাল বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।” কলেজ সূত্রের খবর, এ দিন ইসলামপুর কলেজে প্রথম বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরীক্ষা ছিল। শিক্ষিকা কল্যাণী বর্মনের দাবি, ‘নকল’ করার সময়ে হাতেনাতে তিনি ধরে ফেলেন রৌশনকে। তাঁর খাতা কেড়ে
|
উত্যর্থ বন্দ্যোপাধ্যায় |
নেন। এর পরেই ছাত্রটি শিক্ষিকার সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেন। শিক্ষিকার হাত থেকে খাতা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। অভিযোগ, হঠাৎই রৌশন কল্যাণীদেবীর হাত মুচড়ে দেন। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের সদস্যেরাও ক্লাসে ঢুকে ওই শিক্ষিকাকে ‘হুমকি’ দিতে থাকেন। নকল ও পরীক্ষার খাতা সমেত ছাত্রটিকে নিজের ঘরে নিয়ে যান অধ্যক্ষ। সেখানে ছাত্রটি অধ্যক্ষকে ঘুষি
মারেন বলে অভিযোগ। রৌশন অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে মন্তব্য করেননি।
কল্যাণীদেবী বলেন, “এ ভাবে চললে আমাদের পক্ষে পরীক্ষা নেওয়াই মুশিকল হয়ে দাঁড়াবে!” শিক্ষক, শিক্ষিকাদের অভিযোগ, পরীক্ষা চলাকালীন বহিরাগতেরাই ছাত্রদের নকল করার কাগজপত্র সরবরাহ করছে। কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক তথা এসএফআই নেতা তরুণ বর্মনের অবশ্য দাবি, “কলেজে টোকাটুকি হয় না। বহিরাগতদের ঢোকার অভিযোগও ভিত্তিহীন।” ইসলামপুর কলেজের ছাত্র সংসদ টিএমসিপি এবং এসএফআই যৌথ ভাবে দখলে রেখেছে। সাধারণ সম্পাদক এসএফআইয়ের। আর সহকারী সাধারণ সম্পাদক পদে টিএমসিপি-র প্রতিনিধি। ছাত্র পরিষদের নেতা এহেসানুর হকের দাবি, “অভিযুক্ত ছেলেটি এসএফআই সদস্য।” কলেজের এসএফআই নেতা মোহিত অগ্রবালের পাল্টা দাবি, “ওই ছেলেটি আমাদের সংগঠনের নয়। এ ধরনের ঘটনা খুবই লজ্জাজনক। আমরাও দোষীদের শাস্তি চাই।” টিএমসিপির কৌশিক গুণ বলেন, “যে ছাত্র এই কাণ্ড ঘটিয়েছে, সে কোনও ছাত্র সংগঠনেরই সদস্য নয়। দোষী ছাত্রের গ্রেফতারের দাবি করছি।” |