রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সরকারি নিয়ম মেনে কাজ করার জন্য সতর্ক করলেন রাজ্যের জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী আবদুল করিম চৌধুরী। সোমবার দুপুর নাগাদ হাসপাতাল ঘুরে দেখার সময় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ মন্ত্রী বলেন, “চিকিৎসকদের একাংশ নিয়ম মেনে সময় মতো রাউন্ডে যাচ্ছেন না, আউটডোরে হাজির হচ্ছেন না বলে অভিযোগ পেয়েছি। স্বাস্থ্যকর্মী ও নার্সদের বিরুদ্ধেও কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ রয়েছে।” এর পরে তিনি সতর্ক করে বলেন, “জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসনের প্রতিনিধিদের নিয়ে হাসপাতাল মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা নিয়মিত হাসপাতালে নজরদারি চালাবে। কর্তব্যে গাফিলতি প্রমাণ হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” উত্তর দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন ব্লকে বাজ পড়ে সম্প্রতি জখম যে ৬ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মন্ত্রী এ দিন তাঁদের হাতে ২ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য তুলে দেন। পাশাপাশি, বাজ পড়ে জেলায় যে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের পরিবার ২ লক্ষ টাকা করে সরকারি ক্ষতিপূরণ পাবে বলেও ঘোষণা করেন। হাসপাতাল ঘুরে দেখার সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্য মহিলা কমিশনের সদস্য কেয়া চৌধুরী, রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য অরিন্দম সরকার, জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তিলক চৌধুরী। রোগীদের সঙ্গে কথা বলে বাইরে বার হয়ে তিনি চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীদের একাংশের ভূমিকা নিয়ে প্রকাশ্যে উষ্মা প্রকাশ করেন। মন্ত্রীর অভিযোগ, হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের কর্তব্যে গাফিলতির জন্য পরিষেবা ব্যহত হচ্ছে। মাঝেমধ্যে রোগীর বাড়ির লোকজন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। সকাল সওয়া ৯টার মধ্যে চিকিৎসকদের আউটডোরে হাজির থাকার নির্দেশ থাকলেও একাংশ বেলা ১১টার পরে হাজির হচ্ছেন। ফলে রোগীদের ভোগান্তি বাড়ছে। মন্ত্রী বলেন, “রোগীকল্যাণ সমিতির সভায় একাধিকবার ওই সমস্ত সমস্যার সমাধান করে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছি। কিন্তু লাভ হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে নজরদারি চালানোর জন্য মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে।” হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও পরিকাঠমোর অভাবে কয়েক বছর থেকে হাসপাতালের আইসিইউ বন্ধ হয়ে আছে। টাকার অভাবে হাসপাতাল চত্বরে মানসিক ওয়ার্ডটি অর্ধনির্মিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ফলে মানসিক ও হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছে না। ওই রোগীদের বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হচ্ছে। ওই বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, “খুব দ্রুত পরিকাঠামোর উন্নয়ন করে আইসিইউ চালু করা হবে। মানসিক ওয়ার্ড তৈরির কাজও শেষ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।” |