অভিযুক্ত সিপিএম
এসইউসি কর্মী খুন, ২৫টি বাড়িতে লুঠ-অগ্নিসংযোগ
টো থেকে নামিয়ে এক এসইউসি কর্মীকে গুলি করে, কুপিয়ে খুনের ঘটনার জেরে সোমবার অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের তারানগর গ্রাম।
সওকৎ খান (৪২) নামে নিহত এসইউসি কর্মী ওই গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। স্থানীয় এক পঞ্চায়েত সদস্য-সহ সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে অভিযোগ তোলে এসইউসি। পরে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে পুলিশকে কার্যত আটকে রেখে গ্রামের তিনটি পাড়ায় লাঠি, রড, তরোয়াল, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ ওঠে এসইউসি কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
ভাঙচুর, লুঠপাটের পরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট বেলে-দুর্গানগর পঞ্চায়েতের সিপিএমের প্রধান শ্যামলী গায়েন-সহ অন্তত ২৫ জনের বাড়িতে। মহিলাদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে। বিশাল পুলিশ বাহিনী, কমব্যাট ফোর্স ও র্যাফ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলিও দলীয় কর্মী-সমর্থকদের বলে দাবি সিপিএমের। তারা অস্বীকার করেছে খুনের অভিযোগ। খুনের প্রতিবাদে আজ, মঙ্গলবার জয়নগর-১ ও ২ ব্লকে ১২ ঘণ্টার বন্ধ ডেকেছে এসইউসি।
পুলিশের অনুমান, পঞ্চায়েতের কাজ নিয়ে গোলমালের জেরে খুন করা হয়েছে সওকৎকে। পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠী বলেন, “সওকতের পরিবার ১৭ জনের নামে খুনের অভিযোগ করেছে। অভিযুক্তেরা পলাতক। বাড়ি ভাঙচুর এবং আগুন লাগানোর ঘটনাতেও পুলিশ আলাদা মামলা করেছে।”
ধানের গোলায় আগুন নেভানোর চেষ্টা চলছে। ছবি: দিলীপ নস্কর
সওকৎ মেটিয়াবুরুজের বিভিন্ন গুদামে মাল বওয়ার কাজ করতেন। সারারাত কাজ করে সোমবার সকাল ৭টা নাগাদ তিনি জয়নগর স্টেশনে নেমে বাড়ি ফেরার অটো ধরেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, তারানগরের প্রায় চার কিলোমিটার আগে ঘোষালের চক এলাকায় অটোটি থামায় জনা বারো লোক। অভিযোগ, সওকৎকে নামিয়ে পেটে গুলি করে, চপার দিয়ে কোপানো হয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সওকতের। এসইউসি কর্মী-সমর্থকেরা দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে বেশ কিছু ক্ষণ দেহ আটকে বিক্ষোভ দেখান। পরে পুলিশ দেহ উদ্ধার করে।
ঘণ্টাখানেক পরেই তেতে ওঠে তারানগরের হালদারপাড়া, সর্দারপাড়া এবং রূপনগর পশ্চিমপাড়া। দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামগুলি প্রায় পুরুষশূন্য। মহিলাদের সাহায্য নিয়ে জ্বলতে থাকা বেশ কিছু বাড়ির আগুন পুলিশই নেভায়।
সওকতের বড় ছেলের স্ত্রী সাবিনা মণ্ডল স্বরোজগার যোজনা প্রকল্পের সুপারভাইজার। উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই তাঁর সঙ্গে ‘বিবাদ’ চলছিল পঞ্চায়েত সদস্য সিপিএমের আহাদ গাজির। আহাদ তা নিয়ে সাবিনা এবং সওকৎকে হুমকি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। গত বছর মে মাসে সওকতের দাদার ছেলে কুল আমিন খান খুন হন। সেই প্রসঙ্গ তুলে সওকতের ছোট ছেলে শাহজামাল খান বলেন, “বাবা আহাদের কাজকর্মের প্রতিবাদ করতেন। সেই কারণে আহাদই গুলি চালিয়ে বাবাকে মেরেছে। ওর নেতৃত্বেই বাবার উপরে হামলা হয়েছে। ও-ই কুল আমিনকেও খুন করেছিল।” তবে বহু চেষ্টা করেও আহাদ গাজি বা প্রধান শ্যামলী মণ্ডলের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
জয়নগরের এসইউসি বিধায়ক তরুণ নস্করের অভিযোগ, “সিপিএমের লোকেরাই খুনের ঘটনায় জড়িত। আমরা দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
পক্ষান্তরে, সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুজন চক্রবর্তীর দাবি, “আমাদের কিছু সমর্থকের বিরুদ্ধে এসইউসি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে বলে শুনেছি। পুলিশ খুনের কারণ বের করে দোষীদের ধরুক।” পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই খুনের ঘটনাকে ‘হাতিয়ার করে’ আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য এসইউসি ওই ‘তাণ্ডব’ চালাল বলেও অভিযোগ সুজনবাবুর।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.