‘খোলা’ লাইনে ট্রেন ঢুকছে, ব্রেক কষে বাঁচালেন চালক
ঘোষণা হয়েছিল, বসিরহাট লোকাল আসবে চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে। ওই লাইনে সিগন্যালও হয়েছিল। অথচ স্টেশনের কাছাকাছি এসে চালক দেখলেন, তাঁর ট্রেন সটান ঢুকে যাচ্ছে পাঁচ নম্বর লাইনে! ‘পয়েন্ট’ লাগানো না-থাকায় যে লাইন তখন খোলা। অর্থাৎ, আর একটু এগোলেই ট্রেনের চাকা সোজা লাইনের বাইরে!
গোলমাল বুঝে চালক সঙ্গে ব্রেক কষে ট্রেনটিকে দাঁড় করিয়ে দিলেন। তাঁরই তৎপরতায় দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে গেল আপ বসিরহাট লোকাল। সোমবার সকাল পৌনে এগারোটা নাগাদ বারাসত স্টেশনে ওই ঘটনার পরে ট্রেনটির যাত্রীরা চালক এসএন সিংহকে অকুণ্ঠ সাধুবাদ দিচ্ছেন। একই সঙ্গে শিউরে উঠছেন এই ভেবে যে, চালক হুঁশিয়ার না-থাকলে কী বিপর্যয় হতো!
এমনটা হল কেন?
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সমীর গোস্বামী এ দিন বলেন, “ওই স্টেশনে বেশ কিছু দিন যাবৎ সিগন্যালিং সিস্টেমের (নন-ইন্টারলকিং) কাজ চলছে। ট্রেন চলাচল বন্ধ না-রেখে পয়েন্টে মেরামতি হচ্ছে। তাই ওখানে ট্রেনের গতিও কমানোর (ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে প্রয়োজনের সময়ে চালকেরা সতর্ক থাকতে পারেন।”
এ ক্ষেত্রে তেমনটাই ঘটেছে বলে দাবি সমীরবাবুর। যদিও রেলের এক সূত্রের খবর, ওখানে সিগন্যালিং সিস্টেমের কাজ অনেক দিন আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও রেলের হাতে দেওয়া হয়নি। তাই পরীক্ষামূলক ভাবে ট্রেন চালানো হচ্ছে। সূত্রটির বক্তব্য, এ দিন সম্ভবত কোনও রেল-কর্মী ভুল পয়েন্ট দিয়েছিলেন। তাতেই দুর্ঘটনা ঘটার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।
ঠিক কী ঘটেছিল?
খোলা রেললাইনের একটু আগে থমকে যাত্রীবোঝাই
বসিরহাট লোকাল। সোমবার বারাসত স্টেশনে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, সকালের ভিড়ে ঠাসা বারাসত স্টেশনে মাইকে ঘোষণা হচ্ছিল, চার নম্বরে আপ বসিরহাট লোকাল আসছে। তার পরেই দেখা যায়, ট্রেনটি স্টেশনের কাছে এসে আচমকা থেমে গেল! প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষমাণ যাত্রীরা হইচই জুড়ে দেন। ট্রেনের যাত্রীরাও চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন। দেখা যায়, চালকও কেবিনের দরজা খুলে বাইরে মুখ বার করে বিস্মিত দৃষ্টিতে লাইনের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন!
স্থানীয় সূত্রের খবর: বারাসতের পাঁচ নম্বর লাইনটি জনবসতির ধার ঘেঁষে। তা দিয়ে ট্রেন চলাচল এমনিতেই কম। লোকজন হামেশা লাইনের পাশে চেয়ার পেতে বসে গুলতানি করেন। লাইনের পাশে পাশে বিস্তর অবৈধ দোকানপাটও গজিয়ে উঠেছে। এ দিনও ওই সময়ে পাঁচ নম্বর লাইনের পাশে বেশ ভিড় ছিল। চার নম্বরে নির্ধারিত বসিরহাট লোকালকে পাঁচ নম্বরে ঢুকতে দেখে অনেকে তাই ভয়ে চেঁচিয়ে ওঠেন। কয়েক জন হকার চিৎকার করতে করতে ছুটে যান স্টেশন মাস্টারের ঘরের দিকে।
ততক্ষণে অবশ্য ট্রেন দাঁড়িয়ে গিয়েছে। তার পরেই জানা যায়, পয়েন্ট-বিভ্রাটে ট্রেন অন্য লাইনে প্রায় ঢুকে পড়ছিল! চালকের দৃষ্টি এড়িয়ে তা ‘খোলা’ লাইনে ঢুকে গেলে কী হতো?
রেল-কর্তারা জানাচ্ছেন, তেমনটা হলে কিছুটা এগিয়ে ট্রেন বেলাইন হয়ে যেত। আর ট্রেনের গতি বেশি থাকলে বড়সড় দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও তাঁরা উড়িয়ে দেননি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.