যুবভারতীতে উৎসব শেষে বিষণ্ণতা জোড়া ধাক্কায়
লিগ জিতেই পদত্যাগ মর্গ্যানের
দুই ম্যাঞ্চেস্টারের ম্যাচের শেষ মিনিটের নাটক কলকাতার ম্যাচে ছিল না। পনেরো মিনিট থেকেই স্পষ্ট, চিত্রনাট্য কী হতে চলেছে।
মাঠের বাইরের নাটকে কিন্তু ম্যাঞ্চেস্টারকে হারিয়ে দিল কলকাতা।
হাজার খানেক ইস্টবেঙ্গল সমর্থক যখন ৬-০ জিতে লিগ জয়ের আনন্দে যুবভারতীর ঘাসে লুটিয়ে, গড়াগড়ি খাচ্ছেন, তখন নিজের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়ে বাড়ি চলে গেলেন ট্রেভর জেমস মর্গ্যান। ই মেলে কোচের পদত্যাগপত্র পাঠানো, তাও সেটা লিগ জয়ের সঙ্গে সঙ্গেইএ দৃশ্য আগে দেখেনি কলকাতা ফুটবল।
কেন পদত্যাগ করে গেলেন? এই প্রথম কোনও সাংবাদিক সম্মেলনে আসেননি মর্গ্যান। দ্রুত ফিরে যান জয়োৎসব উপেক্ষা করে। সোমবার রাতেই তাঁর অস্ট্রেলিয়া চলে যাওয়ার কথা। বাড়ি ফেরার সময় ফোনে বললেন, “আমি এই কর্তাদের ব্যাপারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি। দল তৈরির প্রসঙ্গে কথাই বলা হয় না আমার সঙ্গে।” jমধ্যরাতে দেশে ফেরার পথে বিমানবন্দরেও তাঁর ক্ষোভ জানিয়ে যান।
ই মেলে পদত্যাগ পাঠিয়ে দিয়ে কাউকেই কিছু বলেননি অস্ট্রেলিয়ান কোচ। ফুটবলার বা সহকারী কোচদের কাউকে কিছু না জানিয়েই তিনি বেরিয়ে চলে যান ড্রেসিংরুমে। তাঁর ঘনিষ্ঠতম টোলগে পর্যন্ত অবাক হয়ে যান খবরটা শুনে। সবাই তখন ভেবেছিলেন, সাংবাদিক সম্মেলনে যাচ্ছেন মর্গ্যান। পরে সাংবাদিকদের মুখ থেকে খবর পেয়ে ড্রেসিংরুমে বৈঠকের পরে বৈঠক শুরু হয়ে যায় কর্তাদের। অনেক কর্তাই খুঁজতে শুরু করে দেন, ‘মোহনবাগানের হাত’। বলতে শুরু করে দেন, মোহনবাগানে যাওয়ার জন্যই এই নাটক করছেন মর্গ্যান। কিন্তু ঘটনা হল, মোহনবাগান কর্তারা এ সব কিছুই জানতেন না। আর চুক্তি অনুযায়ী, মর্গ্যান ভারতের অন্য ক্লাবে যেতে পারেন না।
শনিবার সকালেও সহকারীদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন, আগামী মরশুমের প্রস্তুতি কবে শুরু হবে। সেই মর্গ্যান দল ছেড়ে চলে গেলেন কেন? তাঁকে না জানিয়ে দল গড়ার জন্যই ক্ষুব্ধ তিনি। কোচের ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, অর্ণব মণ্ডল এবং লালরিনডিকা বাদে বাকি কোনও ফুটবলারকে নেওয়ার আগে মর্গ্যানের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি। সহকারী কোচ বাছা নিয়েও মর্গ্যানের সঙ্গে কর্মকর্তাদের বিরোধ হয়েছে বারবার। মর্গ্যানের পছন্দের কোচকে কর্তারা অপছন্দ করেছেন। কর্তাদের পছন্দের কোচকে মর্গ্যানের পছন্দ হয়নি। খুব সম্প্রতি বিদেশি নিয়ে কর্তাদের মনোভাবেও বিরক্ত তিনি। অনেক কর্মকর্তাই মর্গ্যানের সঙ্গে ছিলেন না। বুঝতে পারছিলেন বিদেশি কোচ।
মর্গ্যানের পদত্যাগের খবর পেয়ে প্রাথমিক ভাবে দিশাহারা হয়ে পড়েন ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। ফুটবল সচিব সন্তোষ ভট্টাচার্য ছুটে যান কোচের সঙ্গে কথা বলতে। প্রথমে অভিমানী মর্গ্যান ফোন ধরছিলেন না। কথা বলতে রাজি ছিলেন না। পরে রাজি হন। ইস্টবেঙ্গল কর্তারা রাতে বলেন, মর্গ্যান রাজি হয়েছেন থাকতে। সমস্যা মিটে গিয়েছে। ইস্টবেঙ্গল কোচ কিন্তু রাত সাড়ে এগারোটায় দমদম বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের বলেন, “এটা একেবারেই সত্যি নয়। কিছুই সমস্যা মেটেনি। আমি এখানে সন্তুষ্ট নই। ইস্টবেঙ্গলে আর ফিরব কি না নির্ভর করছে, কর্তাদের উপর।”
মর্গ্যানকে নিয়ে যখন এই নাটক চলছে, তখন আর এক কোচ তাঁর প্রস্থানের পথ গুনছেন। সুব্রত ভট্টাচার্য অন্যবারের মতো বিস্ফোরক নন, বরং অভিমানের সুর গলায়। টোলগে আসছেন, জানেন না। তাঁকে রাখা হবে কি হবে না, সেটাও জানানো হয়নি। শিলিগুড়িতে ০-২ হারের পরে সচিবের সঙ্গে দেখা হয়েছে। তিনিও কিছু বলেননি। আপনার ক্লাব তো অন্য কোচ আনার কথা বলছে! শুনে সুব্রত বললেন, “আনলে আনবে! আমি কী করব? বললে কোচিং করাব। না হলে করাব না।”
মর্গ্যান যখন সিঙ্গাপুরের বিমানে, সুব্রত তখন কলকাতার ট্রেনে। চরম বিরক্তি নিয়ে শেষ করলেন মরসুম। বড় ম্যাচে হারলেও, নাটক তৈরিতে এ বার সুব্রতকে হারিয়ে দিলেন মর্গ্যান।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.