২-০ হারল মোহনবাগান
ক্লান্তি কাটিয়ে উঠতে না পারা, মোটিভেশনের অভাব, হাফ লাইন কাজ না করা, সব শেষে রেফারির বিরুদ্ধে খারাপ খেলা পরিচালনা করার অভিযোগ। প্রয়াগ ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে সোমবার বিশ্রী হারের পিছনে একযোগে এ সব কারণই দায়ী বলে মনে করেন মোহনবাগান টিডি সুব্রত ভট্টাচার্য। কলকাতার যুবভারতীতে যখন ম্যাচ পকেটে পুরে উচ্ছ্বাসে মাঠ ছাড়ছে ট্রেভর মর্গানের লাল হলুদ দল, তখন ৬০০ কিলোমিটার দূরে শিলিগুড়িতে ময়দানের অপর যুযুধান পক্ষ, লাল হলুদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী সবুজ-মেরুন শিবিরে শুধুই হতাশা। ২-০ গোলে প্রয়াগের কাছে হেরে মাঠ ছাড়ল সুব্রত ভট্টাচার্যের দল। নেপালে প্রীতি ম্যাচে হারের পর রবিবার নেপাল থেকে মোহনবাগান শিলিগুড়িতে আসার পথে দলের দুই বিদেশি হাদসন লিমা এবং ফিজিও জোনাথনের ইমিগ্রেশন নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় তাদের। গলগলিয়া সীমান্তে ওই সমস্যা কাটিয়ে ফিরতে সাড়ে ৩ ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় ফুটবলারদের। সাড়ে তিনটে নাগাদ শিলিগুড়িতে পৌঁছে পরিশ্রান্ত ফুটবলারদের তাই ওই দিন অনুশীলন করাতে পারেননি সুব্রত ভট্টাচার্য। সেই ক্লান্তি কাটিয়ে উঠতে পারেনি বলেই দাবি টিডির। অন্য দিকে, প্রয়াগকে মরসুমে একবারও হারাতে পারেননি সুব্রত। সেটা দলের ফুটবলারদের কিছুটা হলেও চাপে রেখেছিল। নেপালে প্রীতি ম্যাচে হেরে যাওয়ার পর এ দিনের ম্যাচের আগে তাই বাড়তি মোটিভেশনের প্রয়োজন ছিল। তা না পাওয়াতেই এ দিন প্রয়াগের কাছে ফের ধাক্কা খেতে হয়েছে ওডাফা, সুনীল ছেত্রীদের।
ওডাফাকে পুষ্পস্তবক উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
মোহন টিডি সুব্রত বলেন, “হারের কারণগুলির মধ্যে অন্যতম ফুটবলারদের ক্লান্তি কাটিয়ে উঠতে না পারা। তাদের বাড়তি মোটিভেশনের প্রয়োজন ছিল। সেটা ঠিক মতো মেলেনি। হাফের ফুটবলাররা ঠিক মতো খেলতে পারেনি। তা ছাড়া রেফারির বিভিন্ন ভুলের জন্য আমাদের হারতে হল।” ম্যাচের আগের দিন অনুশীলন না করতে পারাটাও যে সমস্যা বাড়াতে পারে তা নিয়ে রবিবার থেকেই চিন্তায় ছিলেন মোহন টিডি। পাশাপাশি এ দিন বিপক্ষের গোলের সামনে ওডাফাকে বেলো রাসাক টেনে ধরলে রেফারি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন। একই ভাবে বিপক্ষের বক্সে রহিম নবিকে একবার নেটে ধরেছিলেন প্রয়াগের ফুটবলার। বিপক্ষের বক্সের মধ্যে সুনীল ছেত্রীর একটি শট প্রয়াগের ফুটবলারের হাতে লাগলেও তা হ্যান্ডবল দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেন মোহনবাগানের কর্মকর্তারা। এ সব ব্যাপারে রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে এ দিন প্রশ্ন তোলে মোহনবাগান শিবির। ক্ষোভের সুরেই মোহন টিডি বলেন, “এ দেশে রেফারির খেলা পরিচালনা নিয়ে এর বেশি কিছু প্রত্যাশাও করা যায় না।” সহকারি কোচ তথা টিম ম্যানেজার বার্নাড ওপারাঞ্জই-ও হারের পিছনে রেফারির খেলা পরিচালনাকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, “রেফারি অত্যন্ত বাজে ভাবে খেলা পরিচালনা করেছেন। এ দিন সেটা আমাদের ফুটবলারদের ‘মাইন্ড সেটআপ’ নষ্ট করে দিয়েছে। যদিও প্রথম ধাপে আমরা কয়েকটি ভাল সুযোগ নষ্ট করেছি। তবে লিগে আগেই কয়েকটি ম্যাচ হেরে যাওয়া সেরা হওয়ার দৌঁড়ে ছিটকে যাওয়ার টার্নিং পয়েন্ট।” এ দিন কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে মোহনবাগানের খেলা সমর্থকদেরও হতাশ করেছে। সুনীল ছেত্রী, ওডাফা ওকোলিদের পারস্পরিক বোঝাপড়ার অভাব দেখা গিয়েছে মাঠ জুড়েই। মনে হচ্ছিল সবাই বুঝি নিজে নিজে খেলছেন। ওডাফা বারবার বিপক্ষের রক্ষণ ভেঙে ঢোকার চেষ্টা করেছেন। তবে তাকে সাহায্য করার মতো ফুটবলার ছিল না। ব্যারেটো, কিংশুকদের অভাব এ দিন বোঝা গিয়েছে। হাফে হাদসন লিমা, মনীষ ভার্গব, জুয়েল রাজাকে এ দিন ততটা সক্রিয় ফুটবল খেলতে দেখা যায়নি। তার মধ্যে যে ক’টা ভাল সুযোগ এসেছে তাতে প্রথমার্ধেই গোলের সামনে ওডাফার বাড়ানো বল সুনীল ছেত্রী গোলে ঠেলতে ব্যর্থ হন। রহিম নবি গোলের সামনে বল বানিয়ে দিলেও কাজে লাগাতে পারেননি মনীষ ভার্গব। সুনীল ছেত্রীর একটি হেড চমৎকার ঠেকিয়ে দিয়েছেন প্রয়াগ গোলকিপার অভিজিৎ মণ্ডল। তার আগেই অবশ্য ১৩ মিনিটের মাথায় মাসাওম তিলুঙ্গার পাস কাজে লাগিয়ে জসিমার গোল পেয়েছেন হেড থেকে। দ্বিতীয়ার্ধেও সুনীল, রহিম নবিদের কখনই চনমনে মনে হয়নি। সময় যতই গড়িয়েছে তাদের বক্সে জোসিমার, ইয়াকুবুরা আক্রমণ শানিয়েছেন। খেলার শেষের দিকে ইয়াকুবুকে বসিয়ে ভিনসেন্টকে নামায় কোচ সঞ্জয় সেন। খেলার শেষের আগে যিনি একটি গোলও করেন। তবে ইয়াকুবু, জোসিমার কয়েকটি ভাল সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি। খেলার শেষে প্রয়াগ কোচ বলেন, “এ দিন পুরো খেলায় আমরা আধিপত্য রাখতে পারেছি। জিতেছিও।” তবে মোহনবাগানের সঙ্গে আই লিগের দ্বিতীয় জয়কেই এগিয়ে রাখতে চান তিনি। তাঁর কথায়, “দলে ভাল খেলোয়াড় নেই বলে হেরে গেলে অনেকে অজুহাত দেন। আইলিগে মোহনবাগানের সঙ্গে আমাদের দ্বিতীয় ম্যাচে তাদের প্রায় সব তারকা খেলোয়াড়রাই ছিলেন।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.