|
|
|
|
খুন হওয়া ছাত্রের বাড়িতে ফরেন্সিক দল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
সদর-শহর মেদিনীপুরে বাড়ির মধ্যে ছাত্র-খুনের ঘটনায় তদন্তে এল ফরেন্সিক দল। সোমবার শহরে এসে বরিশাল কলোনির ওই বাড়িতে যায় দুই সদস্যের দল। প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করে। ফিঙ্গার-প্রিন্ট নেয়। খুনের পিছনে কে বা কারা, ঠিক কী কারণেই বা এই খুন--তা অবশ্য এখনও খুঁজে বের করতে পারেনি পুলিশ। তবে পুলিশের দাবি, কিছু সূত্র মিলেছে। সেই সূত্র ধরেই তদন্ত এগোচ্ছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরির বক্তব্য, “তদন্ত এগোচ্ছে। অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। ফরেন্সিক দল এসে প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করেছে।” তাঁর কথায়, “এই ঘটনার কিনারা করতে সব রকম চেষ্টাই চলছে।”
সোমবারও পরিবারের লোকজন ও ওই ছাত্রের কয়েক জন পরিচিতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হয়। তবে ঘটনার ৭২ ঘণ্টা পরেও পুলিশ কোনও অভিযুক্তকে চিহ্নিত করতে না-পারায় স্থানীয় মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, যে ভাবে একটা জনবহুল এলাকার বাড়ির মধ্যে কিশোর খুন হয়েছে, তা চাঞ্চল্যকর। তিন দিন পেরিয়ে গেল। অথচ তদন্তের তেমন অগ্রগতি হল না। পুলিশের অবশ্য বক্তব্য, এমন ক্ষেত্রে তদন্তের শুরুতেই ঘটনার কিনারা করা যায় না। কিছু সময় লাগে। শুরুতে কিছু সূত্র ধরে তদন্ত এগোতে হয়। জেলা পুলিশের এক অফিসার বলেন, “অনেক ক্ষেত্রে এমনও হয়, যে সূত্রে ধরে তদন্ত এগোচ্ছে, মাঝপথে গিয়ে তা ধাক্কা খায়। ফের নতুন সূত্র ধরে তদন্ত এগোয়।” ওই অফিসারের কথায়, “এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে কিছু তথ্যও পাওয়া গিয়েছে।” পুলিশের আশা, শীঘ্রই অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে। |
|
নমুনা সংগ্রহে ব্যস্ত ফরেন্সিক দলের সদস্যরা। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ |
গত শুক্রবার মেদিনীপুর শহরের বরিশাল কলোনিতে ছাত্র খুনের ঘটনাটি ঘটে। বাড়ির মধ্যেই রহস্যজনক ভাবে খুন হয় অষ্টম শ্রেণির অভিষেক নাগ। খুনি বাড়ির পিছন দিক দিয়ে পালিয়ে যায় বলেই পুলিশের অনুমান। স্থানীয়দের দাবি মেনে এ ক্ষেত্রে পুলিশ কুকুর এনেও তদন্ত হয়। ওই কুকুরটিও বাড়ির পিছন দিকে একটি পুকুরের পাড় হয়ে কিছু দূর গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। জেলা পুলিশের এক অফিসার বলেন, “কুকুরের গতিবিধি থেকেই মনে হচ্ছে, খুনি বাড়ির পিছন দিক দিয়ে পালিয়েছে। এ ক্ষেত্রে সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” অন্য দিনের মতোই ওই দিন দুপুরেও বাড়ির একটি ঘরে ঘুমোচ্ছিল বছর তেরোর ওই কিশোর। বিকেলে ওই ঘর থেকেই তার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। মৃত ছাত্রের দেহে ছুরি বা চপার জাতীয় কিছুর আঘাতের চিহ্ন ছিল। তার হাতের শিরাও কাটা হয়। শহরে এমন ঘটনার নজির নেই।
যে ছুরি বা চপার জাতীয় কিছু দিয়ে অভিষেককে আঘাত করা হয়, সেটিও এখনও পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। ইতিমধ্যেই বরিশাল কলোনির ওই বাড়ি ও তার আশপাশ এলাকায় তল্লাশি চালানো হয়েছে। কিন্তু, ছুরি জাতীয় কিছু উদ্ধার হয়নি। এটি উদ্ধার করা সম্ভব হলে তদন্তে আরও গতি আসবে বলে মনে করছে পুলিশ। জেলা পুলিশের এক অফিসার বলেন, “সন্দেহভাজনের বিরুদ্ধে কিছু তথ্যপ্রমাণ হাতে এলেই তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব। এখন তথ্যপ্রমাণ জোগাড়েরই চেষ্টা চলছে।” |
|
|
|
|
|