নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
সংসদে ‘জেরা’র মুখে সাফাই দিয়েও বিরোধীদের আক্রমণের হাত থেকে রেহাই পেলেন না চিদম্বরম।
টু-জি কাণ্ডে এয়ারসেল-ম্যাক্সিস চুক্তি নিয়ে আজ সংসদের দুই সভাতেই তুমুল হইচই হয়। রাজ্যসভায় চিদম্বরমকে চেপে ধরেন বিজেপির অরুণ জেটলি-সহ বিরোধী সাংসদরা। এর আগে জনতা পার্টির নেতা সুব্রহ্ম্যণম স্বামীর অভিযোগ ছিল, ছেলে কার্তিকে সুবিধা পাইয়ে দিতে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী চিদম্বরম ‘ফরেন ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন বোর্ডে’র (এফআইপিবি)-র ছাড়পত্র দিতে দেরি করেছেন। জেটলি এ দিন অভিযোগ করেন, মূল বিষয় হল, কেন্দ্রের অর্থমন্ত্রী যখন চুক্তিতে ছাড়পত্র দিচ্ছেন, তখন তাঁর ছেলে সেই সংস্থায় বিনিয়োগ করছেন!
চিদম্বরম পাল্টা জানান, ওই সংস্থাকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য অর্থ পেয়েছে তাঁর ছেলের সংস্থা। ২০০৬ সালে এই চুক্তির পাঁচ বছর পরে নবীন শিল্পপতি হিসেবে বিনিয়োগ করেছেন তাঁর পরিবারের সদস্য। জেটলির বলেন, “পরামর্শ দিলে তো অর্থ পাওয়ার কথা। কিন্তু সংস্থার নথি বলছে, চুক্তির পাঁচ বছর পর ২০১১ সালে নয়, ২০০৬ সালেই চিদম্বরমের পরিবারের সদস্য অর্থ দিয়েছেন সংস্থাকে।” জবাবে চিদম্বরম জানান, তাঁর বা তাঁর পরিবারের কোনও সদস্যের কোনও অংশীদারিত্ব নেই ওই সংস্থায়। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট হননি বিরোধীরা। সে সময় কিছুটা আবেগঘন গলায় চিদম্বরম বলেন, “প্রয়োজনে আমার বুকে ছুরি মারুন, কিন্তু আমার নিষ্ঠা নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন না!”
বিরোধীরা অবশ্য চিদম্বরমের জবাবে সন্তুষ্ট হননি। রাজ্যসভার মতো লোকসভাতেও সুষমা স্বরাজ, যশবন্ত সিন্হা-রা সরব হন। অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় সংসদের উভয় কক্ষেই বিবৃতি দিয়ে জানান, এই চুক্তিতে চিদম্বরমের কোনও ভূমিকা নেই। সরকারের পক্ষ থেকেও কোনও ভুল করা হয়নি। কিন্তু যশবন্ত বিষয়টি নিয়ে লোকসভায় পৃথক আলোচনার নোটিস দেন। রাজ্যসভাতেও জেটলি প্রণববাবুকে বলেন, সরকারের বক্তব্য আর বিরোধীদের তোলা অভিযোগের মধ্যে সামঞ্জস্য নেই। আগামী পরশু রাজ্যসভায় ফের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।
বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, দলীয় নেতৃত্ব এই বিষয়টি হাতছাড়া করতে চাইছেন না। সুব্রহ্মণ্যম স্বামী এই অভিযোগ নিয়ে প্রথমে সরব হলেও সঙ্ঘের নির্দেশে এখন বিজেপিও বিষয়টি তুলছে। তবে ঘনিষ্ঠ মহলে পুরনো বন্ধু চিদম্বরমের প্রতি কিছুটা সুর নরম করে জেটলি বলেন, “হতে পারে, চিদম্বরম যখন অর্থমন্ত্রী ছিলেন, তখন তাঁর অজান্তেই ছেলে কার্তি এই সব অনিয়ম করে যাচ্ছিলেন।” |