বিহারের কাটিহারে বিক্রি হয়ে যাওয়া ছত্তীসগঢ়ের এক কিশোরীকে উদ্ধার করল রায়গঞ্জ থানার পুলিশ। রবিবার সকালে রায়গঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে কিশোরীটিকে উদ্ধার করা হয়।
রাধা কুজুর নামে বছর ষোলোর ওই কিশোরী পুলিশকে জানিয়েছে, তার বাড়ি ছত্তীসগঢ়ের সীতাপুর জেলার চিনাপাহাড়ি গ্রামে। বাড়িতে তিন বোন আর দুই ভাই রয়েছে। বাবা পেশায় দিনমজুর। কাজের লোভ দেখিয়ে তারই এলাকার নির্মলা কুজুর নামে এক মহিলা তাকে গ্রাম থেকে এনে বিক্রি করে দেয়। যাদের কাছে তাকে বিক্রি করা হয়, কিছুদিন পরে তারাও রাধাকে কাটিহারের একটি চক্রের কাছে বিক্রি করে। শনিবার দুপুরে ওই দুষ্কৃতীদের খপ্পর থেকে পালিয়ে ট্রেনে রাধা রায়গঞ্জে আসে। রাতভর স্টেশনে কাটিয়ে এ দিন সকালে বাসস্ট্যান্ডে গিয়েছিল চিনাপাহাড়ির বাসের খোঁজে। তার কথাবার্তায় বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়। সিপিএমের স্থানীয় যুব কর্মী শঙ্কর চক্রবর্তী রায়গঞ্জ থানায় খবর দেন। |
রায়গঞ্জের ডিএসপি অম্লান ঘোষ বলেন, “কিশোরী যাতে বাড়িতে ফিরতে পারে, সে জন্য সীতাপুর জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।” রাজ্য মহিলা কমিশনের সদস্যা কেয়া চৌধুরী বলেন, “থানায় গিয়ে ওই কিশোরীকে সম্পর্কে বিশদে খোঁজ নেব। যেটা করলে তার ভাল হয়, সেটাই করা হবে।” রাধাকে রায়গঞ্জ থানার মহিলা সেলে রাখা হয়েছে। আদালতের নির্দেশ মেনে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
রাধা জানিয়েছে, সামান্য আয়ে সংসার চলত না। তাই নির্মলার কাজের প্রস্তাবে সে রাজি হয়েছিল। মাস তিনেক আগে সে গ্রাম ছাড়ে। দু’বারই যেখানে তাকে বিক্রি করা হয়, সেখানে পরিচারিকার কাজ করানোর পাশাপাশি মারধর করা হত। রাধার কথায়, “অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে ঠিক করেছিলাম পালাব। শনিবার কাটিহারের ওই বাড়ি থেকে বার হয়ে অটোয় স্টেশনে যাই। রাতে ট্রেন রায়গঞ্জে পৌঁছয়। গ্রাম যে অনেক দূরে, তা বুঝিনি।” প্রথম দফায় কোথায় তা বিক্রি করা হয়েছিল বা কাটিহারের কোন এলাকায় তাকে রাখা হয়েছিল, তা রাধা জানাতে পারেনি। রায়গঞ্জ থানার আইসি সুবীরকুমার পাল বলেন, “উপস্থিত বুদ্ধির জোরেই কিশোরী রায়গঞ্জে পালিয়ে আসতে পেরেছে।” |