শহর মানেই বিদ্যুৎ, পানীয় জল, পাকা রাস্তাঘাট, উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্য পরিষেবা ইত্যাদি। বর্তমানে গ্রামের মানুষও এ সব সুযোগসুবিধে থেকে বঞ্চিত নন। উন্নয়ন ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামেও। তবুও কোথাও যেন শহর ও গ্রামের বৈষম্য থেকেই যাচ্ছে। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ মালদহ জেলার হবিবপুর ব্লকের আইহোডাঙা গ্রাম। এই গ্রামে প্রায় ৩০০ টি পরিবারের বাস। এদের পানীয় জলের জন্য নির্ভর করতে হয় গ্রামের একটি মাত্র নলকূপের ওপর। পাশাপাশি তিনটি কুয়ো ও আরও একটি নলকূপ থাকলেও সেগুলো অকেজো। পানীয় জলের জন্য ভোর থেকেই গ্রামের প্রতিটি পরিবারকে লম্বা লাইন দিতে হয়। অথচ সেই জলে আয়রন থাকায় তা পান করার অযোগ্য। তাই পানীয় জলের জন্য অনেককেই যেতে হয় পাশের গ্রামে।
রাজ্য সরকার আজ গ্রামের পরিকাঠামোকে শহরের অনুরূপ করে তুলতে চাইছেন। অথচ খামতি থেকে যাচ্ছে ন্যূনতম চাহিদা পানীয় জলের ক্ষেত্রেই। গ্রামের মানুষ আজও বিশুদ্ধ পানীয় জলের পথ চেয়ে রয়েছেন। এই অবস্থায় সরকার অবিলম্বে যেন পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হন। |
ভারতের রেল মানচিত্রে জলপাইগুড়ি ও ময়নাগুড়ির মধ্যবর্তী ছোট শহর দোমহানি ছিল অন্যতম। রেলের ইঞ্জিন তৈরি করতে সাহায্য করতো এখানকার রেলইঞ্জিন কারখানা। রেলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ দফতরও ছিল এখানে। ১৯৬৮-এর বিধ্বংসী বন্যায় দোমহানির সেই ঐতিহ্য ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। রেল কর্তৃপক্ষ এখানে পুনরায় কোনও দফতর বা কারখানা চালু করার চেষ্টা করেনি। উল্টে রেলের যাবতীয় দফতর এখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ফলে দোমহানি আজ অন্ধকারে ডুবে রয়েছে। বর্তমানের উচ্চমাধ্যমিক স্কুলটি এক সময় রেলের স্কুল ছিল। আর পি এফ ট্রেনিং সেন্টারটি প্রায় নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে আছে। এখানে আগে অন্য রাজ্য থেকে রেলকর্মীরা এসে প্রশিক্ষণ নিতেন। রেলকর্মচারী আবাসন আজ বেদখল। ছিল রেলওয়ে হাসপাতাল। যেখানে এলাকাবাসীও চিকিৎসা পরিষেবা পেতেন। রেলের কারখানাকে ঘিরে দোমহানি এবং সংলগ্ন শহরগুলির ব্যবসাবাণিজ্য, শিক্ষা, চিকিৎসার উন্নতি হয়েছিল। বন্যা ধ্বংস না করলে আজও হয়ত দোমহানি ভারতীয় রেলের একটি উল্লেখযোগ্য স্থান হিসেবে গণ্য হত। অনুন্নত উত্তরবঙ্গে বেকার সমস্যা ভয়ঙ্কর। অথচ দোমহানিতে রেলের জমি অবহেলায় পড়ে রয়েছে। উত্তরবঙ্গের কেন্দ্রে অবস্থিত দোমহানির উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য যে কোনও শিল্পই এখানে গড়ে উঠতে পারে। সরকার উপযুক্ত ব্যবস্থা করলে দোমহানি অতীত ঐতিহ্য ফিরে পাবে।
তিমির বন্দ্যোপাধ্যায়। |