বিস্মৃতির আড়ালে ইতিহাসবিদ |
বাংলার কৃতী সাহিত্যিক লালবিহারী দে’র (১৮২৪-১৮৯৪) জন্মের দ্বিশতবর্ষের আর বেশি দেরি নেই। তাঁর সাহিত্যকীর্তির মধ্যে অমর হয়ে আছে বেঙ্গল রায়ত এবং ফোক টেলস অব বেঙ্গল।
বর্ধমান জেলার সোনাপলাশি গ্রামে সুবর্ণবণিক পরিবারে জন্মেছিলেন তিনি। পরবর্তী জীবনে বর্ধমানের বর্ধিষ্ণু জনপদ কালনা মিশনের সর্বাধ্যক্ষ হন। কেউ জানতো না যে বর্ধমানের সোনাপলাশি গ্রামই লালবিহারীর জন্মভূমি। তিনি নিজেও কোথাও সে কথা লেখেননি। বর্তমানে সোনাপলাশি গ্রামে ঢোকার প্রধান রাস্তার সামনে বর্ধমান জেলা পরিষদের বোর্ডে লাল মোরামের প্রশস্ত রাস্তাটির নাম লেখা রেভারেন্ড লালবিহারী দে সরণি। |
বাংলা তথা বর্ধমান জেলার ইতিহাস পুনরাবিষ্কারের এই উল্লেখযোগ্য প্রয়াসে যাঁরা প্রধান ভূমিকা নিয়েছিলেন তাঁদের এক জন আজও আছেন। তিনি সোনাপলাশির অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক রণজিৎ কুমার দত্ত। ১৯৪৯-এ ইংরেজি অমৃতবাজার পত্রিকায় লালবিহারী দে’র নাতির একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয় লালবিহারী সম্পর্কে। তিনি সম্ভবত কেমব্রিজ বা অক্সফোর্ডে থাকতেন তখন। রণজিৎবাবু সেটি পড়ে সরাসরি তাঁকে লালবিহারী সম্পর্কে জানতে চেয়ে চিঠি দেন। দুই মাস পরে উত্তর আসে। সেই সূত্র ধরে তিনি কলকাতায় লালবিহারীর মেয়ের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। সেখান থেকে লালবিহারীর আলোকচিত্র ও তথ্য নিয়ে প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে গ্রামে উৎসাহী মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আরও তথ্য জোগাড় করেন। সন্ধান নিয়ে দেখেন যে বর্ধমান জেলায় আর কোথাও সোনাপলাশি নামের গ্রাম নেই। এর থেকেই নিশ্চিত হওয়া যায় প্রয়াত লালবিহারীর জন্মস্থান বিষয়ে। এর পর বর্ধমানের কবি কুমুদরঞ্জন মল্লিককে দিয়ে লালবিহারী দে’র প্রতি উৎসর্গীকৃত কবিতা লেখানো হয়। বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের উপস্থিতিতে ১৯৫৩-তে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রতিষ্ঠা হল সোনাপলাশি গ্রামে লালবিহারী দে’র স্মৃতিস্তম্ভ।
বিস্মৃতির অন্ধকার থেকে অতীত ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে যাঁরা বার করেছেন তাঁরাই বিস্মৃতির অন্ধকারে চলে গিয়েছেন। অধ্যাপক রণজিৎ কুমার দত্তও এমন এক জন। ‘বর্ধমান ইতিহাস সন্ধান’-এর পক্ষ থেকে সম্প্রতি প্রায় অথর্ব বৃদ্ধ এই ইতিহাস অনুসন্ধানী মানুষটিকে সম্মান জানানো হয়েছে। এমন তো কত জনই অজানার অন্ধকারে চলে গিয়েছেন বা যাচ্ছেন। যদি সেই মানুষদের সামান্য স্বীকৃতি ও সম্মান জানানো যায় তা হলে বিস্মৃত অতীতকে খোঁজার মাধ্যমে আমরাও আবার নিজেদের খুঁজে পেতে পারি। |
দুর্গাপুর শহরের যে কোনও রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে চোখে পড়বে পথের ধারে সাদা ফুলের মতো ইতস্তত বিক্ষিপ্ত কিছু বস্তু। জৌলুসহীন ওই বস্তুগুলি আসলে প্লাস্টিক আবর্জনার স্তূপ। প্লাস্টিকের বর্জ্য আগামী পৃথিবীর পক্ষে কত ক্ষতিকর তা কমবেশী সকলেই জানি। এ বিষয়ে সংবাদপত্রে, পত্রিকায় বহু লেখালেখি হয়েছে বা হচ্ছে। কিন্তু এ বিষয়ে আমাদের সচেতনতা যে তিমিরে ছিল সেখানেই আছে। সাবধান হওয়ার কোনও চেষ্টাই নেই।
এর সবচেয়ে বড় কারণ প্লাস্টিকের জিনিস ব্যবহারের সুবিধে। প্লাস্টিকের অপকারিতার কথা জেনেও কেউ সুবিধে হারাতে রাজি নয়। কঠোর আইন করেও এর ব্যবহার আটকানো যাবে না। যে ভাবে প্লাস্টিকের ব্যাগ যত্র-তত্র দেখা যাচ্ছে, আগামী বর্ষার আগেই প্লাস্টিকের ব্যাগ ধ্বংস করতে সরকার বা পুরসভা থেকে ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। |
আমি নদিয়ার ধুবুলিয়া দেশবন্ধু উচ্চবিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক। বাড়ি ১০০ কিলোমিটার দূরে মুর্শিদাবাদের গোকর্ণ গ্রামে। নদিয়ায় মেসে থাকলেও বাড়িতে অসুস্থ বাবা-মা থাকায় সপ্তাহে দুই-তিন দিন বাড়ি যেতে হয়। আগে এই পথে কলকাতা-কান্দি, কলকাতা-পাঁচথুপি ও কলকাতা-নগর (সবগুলিই ভায়া বহরমপুর) এই তিনটি সিএসটিসি-র বাস চলত। কিন্তু পনেরো বছরের বেশি পুরনো গাড়ি চালানো যাবে না, নিয়ম হওয়ার পরে এই রুটের প্রায় সব বাস বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে যাতায়াতে খুবই অসুবিধা হচ্ছে। এই রুটে আবার বাস চালাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। |
আগে গরম পড়তেই তালপাতার পাখা দোকানে স্তূপীকৃত হত। রঙিন কাপড় লাগালে এই পাখা আরও সুদৃশ্য ও মজবুত হত। এখন সস্তার প্লাস্টিক ও ফাইবারের পাখার বাড়বাড়ন্ত। তালপাতার পাখা একঘরে। গ্রামে তালগাছের অভাব না থাকলেও তালপাতার পাখা হারিয়ে যাচ্ছে। বিপদে পড়েছেন পাখা-শিল্পীরা। এঁদের কথা এক বার ভেবে দেখা উচিত। |