চেয়ারের খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরছেন রাজ্যের মন্ত্রী! নিজের জন্য নয়, আজ, সোমবারের মহাবৈঠকের জন্য!
হিলারি ক্লিন্টনের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মহাকরণে বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগেই ঘটে গেল কুর্সি-বিভ্রাট। হিলারি-মমতার বসার জন্য রাজ্য প্রশাসন যে চাকা-লাগানো স্টিলের চেয়ারের ব্যবস্থা করেছিল, মার্কিন প্রতিনিধিদের আপত্তিতে তা বাতিল হয়ে যায়! ঠিক হয়েছে, দু’জনে গদি লাগানো কাঠের চেয়ারে বসে কথা বলবেন। আর সেই চেয়ার জোগাড় করতে গিয়ে দৌড়োদৌড়ি শুরু করে দেন পূর্তমন্ত্রী সুদর্শন ঘোষদস্তিদার নিজেই! শেষমেশ পছন্দমতো চেয়ার মিলেছে।
|
হিলারি-মমতা বৈঠকের জন্য মহাকরণে এল গদি আঁটা চেয়ার। রবিবার সুদীপ আচার্যের তোলা ছবি। |
আজ, সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ মহাকরণে ঢুকবেন হিলারি। কথা আছে, থাকবেন ১১টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত। হিলারি-মমতা বৈঠকে কী খাবার, কী ভাবে দেওয়া হবে, এ দিন তার মহড়া হয়। মার্কিন বিদেশ-সচিব রান্না করা কিছু খাবেন না। চা, কফি, মিষ্টি, কুকিজ ইত্যাদি রাখা হচ্ছে। উত্তর কলকাতার এক প্রসিদ্ধ দোকানে একশো পিস করে কাঁচাগোল্লা ও ‘পারিজাত’ সন্দেশের বরাত গিয়েছে। তবে সুরক্ষা-পরীক্ষায় উতরোলেই সেগুলো ‘সার্ভ’ করা হবে, ধবধবে সাদা কাপ-প্লেটে।
বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় যাতে কোনও রকম বিঘ্ন না ঘটে, তার জন্য ইতিমধ্যেই চারটি ইউপিএস বসানো হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলে এক ঘণ্টারও বেশি সময় আপৎকালীন পরিষেবা পাওয়া যাবে ওই ব্যবস্থায়। মহাকরণের সংরক্ষিত এলাকায় ক্লিন্টনের সফরের সময়ে যাতে উজ্জ্বল আলোর অভাব না হয়, সে জন্য সব আলো নতুন করে লাগানো হয়েছে। বিকল্প বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, আলোর তেজ ও প্রতিটি এসি মেশিন আজ খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। সংরক্ষিত এলাকার দু’পাশে স্বরাষ্ট্রসচিবের ঘরের দিকে এবং প্রেস কর্নারের দিকে উঠেছে ছ’ফুট উঁচু কাঠের অস্থায়ী দেওয়াল। আজ মহাকরণে সেন্ট্রাল গেট দিয়ে ঢুকবেন শুধু মুখ্যমন্ত্রী ও হিলারি। তবে মুখ্যমন্ত্রী ঢোকার পরে তাঁর কনভয়কে রাখা হবে উল্টো দিকের পার্কোম্যাটে। আর মহাকরণের সামনের রাস্তায় থাকবে মার্কিন বিদেশসচিবের সতেরো গাড়ির কনভয়। |
সাফ-সুতরো করা হচ্ছে মহাকরণের ছ’নম্বর ফটক ও লাগোয়া রেলিং-সিঁড়ি।
এখান দিয়েই সোমবার মহাকরণে ঢুকতে হবে মন্ত্রী-আমলাদের। -নিজস্ব চিত্র |
অন্য মন্ত্রী-আমলাদের জন্য আজ বরাদ্দ মহাকরণের ছ’নম্বর ফটক। তাই ওই গেট ও লাগোয়া রেলিং-সিঁড়িও ধুয়ে-মুছে রং করা হয়েছে।
বৈঠকের প্রস্তুতি তদারক করতে এ দিন সকালে মহাকরণে চলে আসেন রাজ্যের মুখ্যসচিব সমর ঘোষ, স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়, তথ্য-সংস্কৃতির সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, পূর্তসচিব অজিতরঞ্জন বর্ধন, মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের দুই পদস্থ অফিসার গৌতম সান্যাল ও শান্তনু বসু, মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা-পরামর্শদাতা বীরেন্দ্র-সহ মহাকরণের বহু পদস্থ অফিসার। ছিলেন পুলিশ কমিশনার রঞ্জিৎকুমার পচনন্দা-সহ পুলিশ-কর্তারা। এ দিন থেকেই মহাকরণের মূল গেটে সংবাদমাধ্যমের প্রবেশ নিষিদ্ধ হয়েছে। |