বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ও শুক্রবার সকালের ঝড়-বৃষ্টিতে বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় গাছ ভেঙে পড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দোকান ও বাড়ি। জখম হয়েছেন ১০ জন। শতাধিক বাড়ির চাল উড়ে গিয়েছে। সন্দেশখালিতে একটি তরমুজ ভর্তি নৌকা উল্টে গিয়েছে। হিঙ্গলগঞ্জে সর্দারপাড়ায় ফেরিঘাটে বাঁধা দু’টি নৌকা দড়ি ছিঁড়ে রায়মঙ্গল নদীতে ভেসে গিয়েছে। সন্দেশখালি ও হিঙ্গলগঞ্জের কয়েকটি জায়গায় নদী বাঁধে অথবা লাগোয়া এলাকায় পলিথিনের নিচে বাস করা মানুষ বিপদে পড়েছেন। পারহাসনাবাদে ইছামতীর নদীবাঁধে বড় ফাটল দেখা দিয়েছে।
বাজ পড়ে ও গাড়ি উল্টে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাসনাবাদের বাইলানি বাজারের কাছে গাড়ি উল্টে মৃত্যু হয় সুশান্ত মণ্ডলের (৪২)। শুক্রবার সকালে ঝড়-বৃষ্টির সময়ে সন্দেশখালির হাটগাছি পঞ্চায়েতের নলকোড়া গ্রামের বাসিন্দা মানব সর্দার (১৪) বাজ পড়ে মারা যান। দেহ দু’টি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। বাতাসের দাপটে বসিরহাট পুরসভার পাশে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের উল্টোদিকে একটি বড় দেবদারু গাছ ভেঙে পাঁচটি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সে সময়ে দোকানের ভিতরে থাকা তিন জন জখম হন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আবু বক্কর গাজি বলেন, “কালবৈশাখীর জেরে ন’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় অনেক গাছ ভেঙে পড়েছে। কালীতলা, সর্দারপাড়া, চাড়ালখালি এলাকায় পলিথিনির নিচে বাস করা মানুষ বিপদে পড়েছেন। সেখানে পলিথিন উড়ে যাওয়ায় বিডিও-র কাছে তা চাওয়া হয়েছে। অনেক মাটির বাড়ির চাল উড়ে গিয়েছে।”
ঝড়ের সময়ে একটি ছোট গাড়ি পারহাসনাবাদ থেকে বাইলানি শিবপুরের দিকে যাচ্ছিল। বৃহস্পতিবার সকাল আটটা নাগাদ ঝড় ও সেই সঙ্গে বৃষ্টির মধ্যে গাড়ি চালাতে অসুবিধা হচ্ছিল। আচমকা রাস্তায় একটি ছাগল এসে পড়লে চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে গাড়িটি রাস্তার পাশে উল্টে যায়। গাড়িতে থাকা কয়েক জন অল্প জখম হন। সেই গাড়িতে ছিলেন সুশান্তবাবু। তিনি ও বিশপুর পঞ্চায়েতের প্রধান সবিতা পাত্র জখম হন। দু’জনকে বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে রাতে মারা যান সব্জী ব্যবসায়ী সুশান্তবাবু। অন্য দিকে, সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ নলকোড়া গ্রামের বাসিন্দা সপ্তম শ্রেণির ছাত্র মানব সর্দার মেছোভেড়িতে মাছ ধরছিল। আচমকা বাজ পড়লে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝড়ো হাওয়ায় ন্যাজাট থেকে মালঞ্চ দিকে যাওয়া একটি তরমুজ ভর্তি ভুটভুটি কানমারির কাছে বিদ্যাধরী নদীতে তলিয়ে যায়। |