সন্ধ্যার পরে ঝড় ও শিলা বৃষ্টির জেরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ল উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ ঝড় শুরু হয়। বেশ কিছুক্ষণ ধরে জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি ও চোপড়াতে ঝড় হয়। এর মধ্যে নকশালবাড়ি, জলপাইগুড়ি শহর, ফুলবাড়ি, মালবাজার, ওদলাবাড়ি, ডামডিম, চালসা, নাগরাকাটা, ময়নাগুড়ি, চোপড়া, গোয়ালপোখরে ঝড়ের প্রকোপ ছিল বেশি। গাছ পড়ে জলপাইগুড়িতে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে রয়েছে। ঝড়ে কয়েকশো বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। জলপাইগুড়ি শহরে প্রচুর গাছ পড়ে গিয়েছে। বেশ কিছু টেলিফোনের তার, বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে মাটিতে পড়ে রয়েছে। ঘর ভেঙে, চাপা পড়ে জখম হন অনেকে। রাজগঞ্জে মারা যায় ১২টি গরু। বিভিন্ন জায়গায় যান চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মালবাজারের ক্যালট্যাক্স মোড়ে একটি ছোট গাড়ির উপর গাছ পড়েছে। কেউ অবশ্য জখম হননি। |
বৃহস্পতিবার ভোরে আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকের বড়চৌকি গ্রামে
ভেঙে পড়ে এই বিদ্যুতবাহী স্তম্ভ। ছবি: রাজু সাহা। |
জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেছেন। তিনি বলেন, “কোথায় কোথায় ঝড় হয়েছে, ক্ষয়ক্ষতির অবস্থা খতিয়ে দেখতে বিডিওদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সমস্ত কিছু যাতে স্বাভাবিক রাখা যায় সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক বৈভব শ্রীবাস্তব বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর শুরু করেছেন। মালবাজারের বিডিও প্রেমবিভাস তামাং বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে বেরিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছি। পরিস্থিতি নজরে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফুলবাড়িতে বেশ কিছু বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। শিলা বৃষ্টির জেরে বিভিন্ন এলাকায় ভুট্টা ও সবজি চাষে ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন রাতে সাড়ে ৮টা নাগাদ ঝড় শুরু হয়। প্রায় ২০ মিনিট ধরে ঝড় হয়। জলপাইগুড়ি জেলা এবং নকশালবাড়িতে ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হয়। মালবাজার থেকে সেবক যাতায়াতকারী ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের মাঝে গাছ পড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে ওই জাতীয় সড়কেরই নাগরাকাটা থেকে চালসা যাওয়ার রাস্তায় গাছ পড়ে। বহু জায়গায় টেলিফোন, বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে গিয়েছে। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়েছে। সর্বত্র লোডশেডিং শুরু হওয়ায় উদ্ধার কাজে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। প্রশাসনের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব রাস্তা থেকে গাছ সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হবে। রাতে বিদ্যুৎ ও টেলিফোন পরিষেবা স্বাভাবিক করা সম্ভব নয় বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। নকশলাবাড়িতে শতাধিক কাঁচা বাড়ি ভেঙে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ অসহায় ন। নকশালবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির ত্রাণ বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ পৃথ্বীশ রায় বলেন, ‘‘মণিরাম, নকশালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ক্ষতি বেশি হয়েছে। আমরা সকলের পাশে থাকার চেষ্টা করছি।” |