নেতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ অন্দরেই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের সুলভ শৌচাগার নির্মাণে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল দলেরই এক ব্লক সম্পাদকের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার উৎপল সেন নামে ওই ব্লক সম্পাদক বাগডোগরার ভুজিয়াপানি এলাকার একটি ক্লাবের সদস্যদের নিয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়ে দলের পতাকাও সেখানে টাঙিয়ে দেন বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে লোয়ার বাগডোগরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তথা তৃণমূল নেত্রী চন্দ্রাবলী ঘোষ বাগডোগরা থানায় খবর দিলে পুলিশ কর্মীরা যান। নিয়ে যাওয়া হয় কাঁদানে গ্যাসও। এই ঘটনার খবর পেয়ে বিরক্ত হন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের দার্জিলিং জেলা সভাপতি প্রবীর রায় ও আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি প্রশান্ত দত্ত সহ অনেকেই। তাঁদের হস্তক্ষেপে দলের পতাকা নির্মাণস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়ার পরে ফের কাজ শুরু হয়। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের তরফে ওই ব্লক সম্পাদকের বিরুদ্ধে দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের কাছে উন্নয়নে বাধা দেওয়ার অভিযোগও জানানো হয়েছে। যে জমিতে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে শৌচাগার তৈরি করা হচ্ছে সেটি স্থানীয় ক্লাবকে সামনে রেখে ওই ব্লক সম্পাদক বিক্রির ছক কষেই এদিন নির্মাণ কাজে বাধা দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। লোয়ার বাগডোগরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বলেন, “শৌচাগার তৈরির কাজে বাধা দেওয়ার মানে কী? সরকারি খাস জমিতেই শৌচাগার তৈরি করা হচ্ছে। যে ক্লাবকে সামনে রেখে বাধা দেওয়া হচ্ছে সেটি সমাজ বিরোধীদের ডেরা বলে স্থানীয় বাসিন্দারাই অভিযোগ জানিয়েছেন। পুলিশকে জানানো হয়েছে। প্রয়োজন হলে নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের হবে।” তৃণমূল নেতা উৎপলবাবু অবশ্য দাবি করেছেন, “গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে যেখানে সুলভ শৌচাগার তৈরি করা হচ্ছে সেটি খাস জমি হলেও স্থানীয় একটি ক্লাবের দখলে ছিল। এই এলাকায় শৌচাগার তৈরির জন্য আরও জমি রয়েছে। সেখানেও শৌচাগার তৈরি করা যায়।” যদিও দলের অঞ্চল কমিটির সম্পাদক প্রশান্ত দত্ত সাফ বলেছেন, “ওখানেই শৌচাগার হবে। উৎপলবাবু দলের নেতা হলেও যেভাবে উন্নয়নের কাজে বাধা দিয়েছেন তা মানা যায় না। দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে সমস্ত ঘটনা জানানো হয়েছে।” এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ২০০৯ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়েও ওই তৃণমূল নেতা সিপিএমে ছিলেন। নির্বাচনে সিপিএমের ভরাডুবির পরে তৃণমূলে যোগ দেন। দলের ব্লক সম্পাদক পদে বসেই দলের এক নেতার ‘প্রশ্রয়ে’ তিনি জমির ব্যবসায়ে নেমে পড়েন বলে তৃণমূলকর্মীদের অনেকেরই অভিযোগ। এলাকার ব্যবসায়ী তথা কংগ্রেসের বুথ কমিটির সম্পাদক অমিত কর বলেন, “শৌচাগার না-থাকায় বাসিন্দাদের সমস্যায় পড়তে হয়। সেই জন্যই গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরে আবেদন জানানো হয়। এই ধরনের বাধা মানব না।” তৃণমূলের বাগডোগরা ব্লক সভাপতি গৌতম কীর্তনীয়া বলেন, “শৌচাগার তৈরি নিয়ে সমস্যা হয়েছিল। মিটে গিয়েছে। আশা করছি, আর কোনও সমস্যা হবে না।” |