মোর্চা অনশনে বসল দলীয় দফতরের সামনে |
আগাম ঘোষণা করলেও শেষ পর্যন্ত তরাই-ডুয়ার্সের বিভিন্ন থানা, ব্লক অফিসের সামনে অনশন-কর্মসূচি করার ‘অবস্থান’ থেকে কিছুটা সরল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। বৃহস্পতিবার মোর্চা নেতৃত্বাধীন ‘যৌথ মঞ্চ’-এর সমর্থকেরা তরাই-ডুয়ার্সের কয়েকটি এলাকায় নিজেদের দলীয় অফিসের সামনেই ‘রিলে অনশন’-এ বসেছেন। মোর্চা শিবির সিদ্ধান্ত বদল করায় ‘স্বস্তি’তে পুলিশ-প্রশাসনও। মহকুমাশাসক (আলিপুরদুয়ার) অমলকান্তি রায় বলেন, “থানা, ব্লক অফিসের সামনে অনশনে বসার অনুমতি দেওয়া হয়নি। কেউ নিজেদের দলের অফিসের সামনে অনশনে বসে থাকলে গোড়াতেই আপত্তি করার কিছু নেই।” |
শিলিগুড়িতে মোর্চার রিলে অনশন। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক |
তবে আদিবাসী বিকাশ পরিষদের সভাপতি বিরসা তিরকে ও তাঁদের নেতৃত্বাধীন ‘তরাই-ডুয়ার্স জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি’ দাবি করেছে, তরাই-ডুয়ার্সের কোনও এলাকায় ‘যৌথ মঞ্চ’-এর আন্দোলনের জন্য অশান্তি ছড়ালে তার দায় মোর্চা নেতৃত্বের। তাঁরা ওই অনশন তুলে দেওয়ার দাবিতে সরব হয়েছেন। মোর্চার তরফে ডুয়ার্সের সভাপতি মধুকর থাপা বলেন, “যৌথ মঞ্চের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে থানা, ব্লক অফিসের সামনে অনশনে বসা হবে না। সে জন্য আমরা অন্যত্র অনশনে বসেছি। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে কারও আপত্তি হওয়ার কথা নয়।”
মোর্চা নেতৃত্ব আচমকা ‘সুর বদল’ করলেন কেন? যৌথ মঞ্চ সূত্রের খবর, পাহাড়ে পর্যটকদের স্বাগত জানিয়ে মোর্চা নেতৃত্ব বার্তা দিলেও অনশন আন্দোলনের জেরে তরাই-ডুয়ার্স উত্তপ্ত হয়ে উঠলে সমতলের বাসিন্দাদের ক্ষোভ তুঙ্গে পৌঁছনোর আশঙ্কা রয়েছে। উপরন্তু, রাজ্য তো বটেই, কেন্দ্রও বিষয়টি ভাল ভাবে গ্রহণ করবে না বলে একাধিক সরকারি সূত্র থেকে মোর্চা নেতৃত্ব জানতে পেরেছেন। ফলে, ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ) গঠনের প্রক্রিয়ায় বাধা আসার সম্ভাবনাও মোর্চার অনেকে উড়িয়ে দিতে পারেননি। তাই থানা-ব্লক অফিসের সামনে অনশনের কর্মসূচি থেকে সরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা অবশ্য জানান, তরাই-ডুয়ার্সে শান্তি বজায় রাখতে চান বলেই জবরদস্তি কোনও আন্দোলনে যাননি তাঁরা।
শিলিগুড়ি লাগোয়া পঞ্চনই ও শালুগাড়াতে এ দিন সকালে ‘রিলে অনশন’-এ বসেন মোর্চার ১২ কর্মী। মালবাজার মহকুমায় বৃহস্পতিবার বাগরাকোট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার লিস রিভার চা বাগানেই শুধু অনশন কর্মসূচি পালিত হয়। বীরপাড়া থানা এলাকার লঙ্কাপাড়া, দলমোড়, বান্দাপানি ও কলেজপাড়ায় ৫-৬ জন ‘রিলে অনশন’ করেছেন। তা ছাড়া, বানারহাটে চামুর্চি ও নিউ ডুয়ার্স চা বাগানের সামনেও অনশনে বসে মোর্চা সমর্থকরা। তবে নাগরাকাটা থানা এবং মেটেলি থানার সামনে ‘রিলে অনশন হওয়ার’ কথা থাকলেও তা বাতিল করা হয়। ‘যৌথ মঞ্চ’-এর মেটেলিতে নেতা গণেশ চিকবরাইক বলেন, “সাংগঠনিক নির্দেশেই মেটেলিতে অনশন করা হয়নি।”
|