গন্তব্য উত্তরবঙ্গ
শিল্প টানতে রোড ম্যাপ করবে রাজ্য
হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল থেকে গাঙ্গেয় সমতল, গোটা উত্তরবঙ্গে পর্যটনের বিপুল সম্ভার এবং সম্ভাবনার কথা উঠে এসেছে বারবার। বন-পাহাড় ঘেরা উত্তরবঙ্গ বিভিন্ন জনজাতির জীবন যাত্রা, সংস্কৃতি, পুরাকীর্তি নিদর্শনে ভরপুর। অথচ এখানে পর্যটন প্রসারে বিক্ষিপ্তভাবে কিছু প্রকল্প হলেও সামগ্রিকভাবে এখনও পরিকল্পনা দেখা যায়নি। দার্জিলিং চায়ের কদর জগৎ জোড়া। অথচ তরাই এবং ডুয়ার্সে সেই চা শিল্প ধুঁকছে। নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেরা এই অঞ্চলে বহির্বাণিজ্যে সমৃদ্ধির এবং ‘লজিস্টিক হাব’ গড়ে ওঠার সুযোগ রয়েছে। সম্ভাবনা রয়েছে কৃষিভিত্তিক শিল্পের। অথচ সব ক্ষেত্রেই অভাব রয়েছে সুপরিকল্পিত উদ্যোগের। বস্তুত, উত্তরবঙ্গে শিল্পায়নের কোনও ‘রোড ম্যাপ’ না থাকার এই সমস্যা দূর করতে এ বার উদ্যোগী রাজ্য সরকার। ট্যুরিজম-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উৎসাহী শিল্পোদ্যোগীদের সামিল করে শিল্পায়নের সেই ‘রোড ম্যাপ’ তৈরি করতে দেশের বণিকসভা ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্সকে সঙ্গে নিয়ে সচেষ্ট হয়েছেন শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এসজেডিএ)। সহযোগিতা করছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর। রাজ্য সরকারের একাধিক দফতরকে নিয়ে উত্তরবঙ্গে শিল্পায়নের সেই সুযোগ সুবিধার বিস্তারিত তুলে ধরতেই আগামী কাল, শনিবার শিলিগুড়ির মাল্লাগুড়ি এলাকায় একটি অভিজাত হোটেলে শিল্পোদ্যোগী ও বণিকমহলকে নিয়ে সভার আয়োজন করা হয়েছে। কারা থাকছেন শিল্পায়নের সম্ভাবনা নিয়ে ওই আলোচনা সভায়? উদ্যোক্তারাই জানিয়েছেন, রাজ্যের বিভিন্ন শিল্পোদ্যোগীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। পাশাপাশি উপস্থিত থাকার কথা রাজ্যের পুর এবং নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী ফিরহাদ ববি হাকিম, বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন, কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের। থাকছেন পর্যটন দফতরের কর্তারা, তথ্য প্রযুক্তি দফতরের বিশেষ সচিব সুশান্ত মজুমদার, পর্যটন দফতরের প্রধান সচিব রাঘবেন্দ্র সিংহ, টি বোর্ডের ডিরেক্টর (চা উন্নয়ন) জি রোরাইয়া। সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তা, আধিকারিকেরা এবং পর্যটন, চা-এর মতো বিভিন্ন শিল্প ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা উত্তরবঙ্গে শিল্পায়নে সম্ভাবনার দিকগুলি তুলে ধরবেন। উপস্থিত থাকার কথা নেপাল এবং ভূটানের কনসুলেট জেনারেল চন্দ্র কুমার গিমিরে, ডি টি ওয়াংরা। ভারতের সঙ্গে নেপাল, ভুটানের বহির্বাণিজ্যের বিভিন্ন সম্ভাবনার দিক তাঁরা তুলে ধরবেন। এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “শিল্পায়নের মাধ্যমে উত্তরবঙ্গের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে রাজ্য সরকার উদ্যোগী। উত্তরবঙ্গে শিল্পায়নের জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। মাঝারি থেকে ক্ষুদ্র বিভিন্ন শিল্প স্থাপনে উত্তরবঙ্গে কোথায় কী সম্ভবনা রয়েছে তা শিল্পোদ্যোগীদের সামনে তুলে ধরা হবে। সরকারি বিভিন্ন দফতরের কর্তারা থাকবেন। তাঁরা বিস্তারিত জানাবেন।” তিনি জানান, জোর দেওয়া হচ্ছে পর্যটনে। যাকে ঘিরে উত্তরবঙ্গকে ‘সুইজারল্যান্ড’ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং বিভিন্ন পরিকাঠামো গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তা অন্যান্য শিল্প গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। সাম্প্রতিক কালে আইটি হাব গড়ে কর্ম সংস্থানের সম্ভবনাও রয়েছে। দেশের বণিকসভা ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্সের এক কর্তা জানান, ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় দেড়শোর বেশি শিল্পোদ্যোগী সভায় উপস্থিত থাকতে উৎসাহ প্রকাশ করেছেন। পর্যটন নিয়ে আলোচনা করতে উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পর আলাদা একটি পর্ব রাখা হয়েছে। থাকছে কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং চা শিল্পের উপর আলোচনা সভা। পর্যটনকে গুরুত্ব দিয়ে উত্তরবঙ্গে শিল্পায়নের চেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছে ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, “উত্তরবঙ্গে পর্যটনের উন্নয়নে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে এটা ভাল দিক। সার্বিক পরিকল্পনা নিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিকাঠামো গড়ে তোলা জরুরি। বড় শিল্পোদ্যোগীদের যেমন ডাকা হচ্ছে, তেমনই স্থানীয় যে সমস্ত ছোট উদ্যোগ রয়েছে তাদের সমান গুরুত্ব দিতে হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.