উত্তেজনা পটাশপুরেও
কাঁকরতলার স্কুলে দ্বন্দ্ব তৃণমূলের, ফাটলো বোমা
টাশপুরের পরে কাঁকরতলা। স্কুলের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফের প্রকাশ্যে এল।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা কে হবেন, তা নিয়ে পটাশপুরের তাহালিয়া শোভাময়ী বালিকা বিদ্যালয়ে স্কুলের তৃণমূল প্রভাবিত পরিচালন সমিতির সম্পাদক ও সভাপতিএই দুই গোষ্ঠীর বিবাদের জেরে সোমবার লক্ষ্মী দাস অট্ট নামে এক শিক্ষিকাকে স্কুলের মধ্যেই হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠে ওই স্কুলের সম্পাদক, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা-সহ আট জনের বিরুদ্ধে।
বীরভূমের কাঁকরতলার বড়রা উচ্চ বিদ্যালয়েও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে (টিচার-ইন-চার্জ) সরানোর দাবিকে ঘিরে স্কুলে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিরোধ চলছে। বৃহস্পতিবার পরিচালন সমিতির বৈঠক ডাকাকে ঘিরে তেতে ওঠে স্কুল চত্বর। ক্লাস চলাকালীনই বোমা ফাটে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন পড়ুয়া, অভিভাবক ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা। পুলিশ সুপার হৃষিকেশ মিনা অবশ্য বলেন, “বোমা ফাটার চিহ্ন মেলেনি। তবে একটি বোমা উদ্ধার হয়েছে।”
এ দিন পটাশপুরের স্কুলটিতেও নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়। লক্ষ্মীদেবী ও অন্য এক শিক্ষিকা তাদের দিয়ে জোর করে সাদা কাগজে সই করিয়েছেন বলে এ দিন থানায় অভিযোগ করেছে স্কুল-হস্টেলের ১৫ জন ছাত্রী। সঙ্গে ছিলেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা করুণা সাউ। লক্ষ্মীদেবীর বক্তব্য, “ইংরেজির শিক্ষিকা প্রয়োজন বলে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ হচ্ছিল। করুণাদেবী হস্টেলে থাকেন। ছাত্রীদের উপরে প্রভাব খাটিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করিয়েছেন।” দু’পক্ষের টানাপোড়েনে স্কুলে পড়াশোনা ‘শিকেয় উঠেছে’ বলে অভিযোগ অভিভাবকদের একাংশের। হস্টেল ছেড়ে বাড়িও চলে গিয়েছে কয়েক জন ছাত্রী।
হাজার দু’য়েক ছাত্রছাত্রীর বড়রা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কাঞ্চন অধিকারী, বড়রা পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধানও। পঞ্চায়েতের ক্ষমতা তৃণমূলের যে গোষ্ঠীর হাতে রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধ গোষ্ঠী আবার ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির ক্ষমতায়। স্কুল সূত্রের খবর, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে কাঞ্চনবাবুকে অপসারণের দাবিতে বৈঠক ডাকতে এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ স্কুলে যান পরিচালন সমিতির সভাপতি মহম্মদ রফিক, সদস্য ফজলুল হক, স্থানীয় তৃণমূল নেতা আনিসুর রহমান-সহ কয়েক জন। এ নিয়ে কাঞ্চনবাবুর সঙ্গে তাঁদের বচসা হয়। হঠাৎই স্কুলের পাঁচিলে একটি বোমা ফাটানো হয়। অন্য একটি বোমা স্কুল চত্বরে পড়লেও ফাটেনি।
পরে কাঁকরতলা থানায় রফিক, ফজলুল, আনিসুর-সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন কাঞ্চনবাবু। তাঁর অভিযোগ, “ওঁদের নেতৃত্বেই কিছু দুষ্কৃতী বোমা ফাটিয়েছে।” এই অভিযোগ উড়িয়ে আনিসুর রহমানের দাবি, “পরিচালন সমিতির বৈঠক বানচাল করতেই বাইরে থেকে দুষ্কৃতী ডেকে এ কাজ করিয়েছেন কাঞ্চনবাবু।” স্কুল-সভাপতিও বলেন, “সহকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং নানা বেনিয়মের জন্যই কাঞ্চনবাবুকে সরাতে
বৈঠক ডাকা জরুরি ছিল। তা ভেস্তে দিতেই বোমা ফাটানো হয়।”
কাঞ্চনবাবুর অবশ্য প্রশ্ন, স্কুলের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অধিকার নেই আনিসুরের মতো এলাকার তৃণমূল নেতার। তিনি কেন এ দিন স্কুলে ঢুকলেন? কাঞ্চনবাবুর আরও বক্তব্য, “টিচার-ইন-চার্জ নিয়োগ বা অপসারণ করা পরিচালন সমিতির কাজ নয়। এই সিদ্ধান্ত নেন সহ-শিক্ষকেরা। তাঁরা কোনও আপত্তি করেছেন বলে তো জানি না।” বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা স্বীকার করেননি। তাঁর অভিযোগ, “কিছু সিপিএমের লোকজন নতুন করে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চাইছে।”
অভিভাবকেরা কিন্তু প্রশ্ন তুলেছেন, এলাকার রাজনীতি কেন স্কুলে টেনে আনা হবে! কেনই বা বহিরাগত তৃণমূল নেতা স্কুলে ঢুকে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন!



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.