বরযাত্রীর বাজিতে আগুন,পুলিশের হস্তক্ষেপে বিয়ে
রকে নিয়ে গ্রামের রাস্তায় শোভাযাত্রায় বেরিয়েছেন বরযাত্রীরা। ব্যান্ডপার্টির তালে তালে নাচের সঙ্গে ফাটছে আতসবাজি। হঠাৎই ছন্দপতন। অসতর্কতায় আতসবাজির ফুলকি থেকে আগুন লাগল এক বাসিন্দার খড়ের চালায়। ছড়াল অন্য খড়ের গাদায়। গ্রামবাসীদের একাংশের সঙ্গে ঝামেলা বাধল বরযাত্রীদের। ভয়ে কিছু বরযাত্রী অনেকে পালিয়ে গেলেন। বিয়ে হবে কি না, সেই অনিশ্চয়তা যখন চেপে বসেছে বর-কনের বাড়িতে, সেই সময় পরিত্রাতার ভূমিকায় হাজির পুলিশ। তাদের হস্তক্ষেপেই বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। হাঁফ ছাড়েন দুপক্ষই।
হুড়া থানার চাকলতা গ্রামের বাসিন্দা প্রভাসচন্দ্র মল্লিকের মেয়ে সুজাতার বিয়ে ঠিক হয়েছিল ওই থানা এলাকারই লক্ষণপুর গ্রামের সত্যেন লায়েকের ছেলে বিদ্যাপতির সঙ্গে। বুধবার ছিল বিয়ের দিন। রাত দশটা নাগাদ বরযাত্রীরা গ্রামে পৌঁছন। বাস গ্রামের কাছে রেখে বরযাত্রীরা শোভাযাত্রা করে কনের বাড়ি যাচ্ছিলেন। তখনই ওই বিপত্তি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আতসবাজির ফুলকি থেকে কৌশিক পুইতুন্ডি নামে এক বাসিন্দার খড়ের চালায় আগুন লাগলে উত্তেজনা ছড়ায়। স্থানীয় মানুষই আগুন নেভান।
ভস্মীভূত ধানের গোলা। নিজস্ব চিত্র।
তাঁরা বরযাত্রীদের সাবধানে আতসবাজি ফাটাতে বলেন। শোভাযাত্রা যখন আরও খানিকটা এগিয়ে গিয়েছে, তখন দেখা যায় আর এক বাসিন্দার বাড়িতে দাউদাউ আগুন জ্বলছে। কৌশিকবাবু বলেন, “আমার খড়ের গাদা থেকে আগুন পড়শি ধীরেন হাজরার খড়ের গাদাতেও ধরে যায়।”
খবর দেওয়া হয় পুলিশকেও। ততক্ষণে বরযাত্রীদের একাংশের সঙ্গে কিছু গ্রামবাসীর বচসা বেধেছে। এলাকাবাসী সজল হাজরা, কৃষ্ণ পুইতন্ডি, দেবানন্দ পুইতন্ডিরা বলেন, “উত্তেজনার খবর পেয়ে প্রথমে হুড়া থানার ওসি রমেশ হাজরা ছুটে আসেন। পরে কাশীপুরের সার্কেল ইন্সপেক্টর সোমনাথ দাসও গ্রামে পৌঁছন। বেগতিক দেখে বেশ কিছু বরযাত্রী সরে পড়েন। কয়েক জন সঙ্গী-সহ বর কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায় রাস্তার উপরে গাড়িতেই বসেছিলেন।” ইতিমধ্যে দমকলের একটি ইঞ্জিনও গ্রামে পৌঁছয়। আগুন আয়ত্তে আসতে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। উত্তেজিত গ্রামবাসীদের শান্ত রাখতে আসরে নামে পুলিশ। তাদের এবং বর ও কনেপক্ষের বারবার অনুরোধে বিয়ের অনুষ্ঠান শুরু হয়। রাত সাড়ে দশটা থেকে দুটো অবধি গ্রামে কাটিয়ে পুলিশও ফিরে যায়।
কনের জ্যাঠামশাই সুভাষ মল্লিক বৃহস্পতিবার বলেন, “পরিস্থিতি যা ছিল, আমরা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। বিয়েই হত কি না কে জানে! ঈশ্বরকে ধন্যবাদ সব ভালয় ভালয় চুকে গিয়েছে।” কনের বাবা প্রভাসবাবুর কথায়, “পুলিশকে ধন্যবাদ। ওঁরা অনেক বড় কাজ করেছেন। না হলে হয়তো লগ্নই পেরিয়ে যেত!” আর বর বিদ্যাপতি বলছেন, “আগুনটা অসতর্ককাতয় কোনও ভাবে লেগে গিয়েছিল। অনেকে পালিয়েছিল। কিন্তু আমাকে তো সবাই চিনতে পারছে! তাই আমাকেই নানা রকম কথা বলছিল অনেকে। সত্যি বলতে আমিও ভয় পেয়েছিলাম। বিয়েটা হবে কি না, বুঝতে পারছিলাম না। পুলিশ ভাল ভূমিকা পালন করেছে।” সুজাতাও বলেন, “বড্ড ভয়ে ভয়ে ছিলাম। এখন ভাল লাগছে।”
হুড়া থানার ওসি রমেশ হাজরার অবশ্য বলছেন, “এটা এমন কিছু নয়। পুলিশ পুলিশের কাজ করেছে। ভাল লাগছে বিয়ের অনুষ্ঠানটা নিবির্ঘ্নে সম্পন্ন হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.