তৃণমূল কর্মী খুন, বাড়ি ভাঙচুর-সহ বহু হামলায় অভিযুক্ত সিপিএমের পাত্রসায়র জোনাল কমিটির সদস্য অশোক চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে বিষ্ণুপুর শহরের রসিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে পাত্রসায়র থানার ওসি মানবেন্দ্রনাথ পালের নেতৃত্বে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, “অশোক চট্টোপাধ্যায় নামে ওই সিপিএম নেতার বিরুদ্ধে তৃণমূল কর্মী খুন, বাড়ি ভাঙচুর, লুঠপাট, মারধর করা-সহ বহু অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি চারটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়।” তাঁর দাবি, অনেক দিন ধরে তাঁর খোঁজ চলছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এ দিন তাঁকে বিষ্ণুপুর থেকে ধরা হয়। আজ শুক্রবার ধৃত নেতাকে বিষ্ণুপুর আদালতে হাজির করানো হবে।” |
পাত্রসায়রের পারুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা অশোকবাবু গত ১৫ বছর ধরে সিপিএমের জোনাল কমিটির সদস্য। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি তৃণমূল কর্মী প্রবীর পাল, ওই বছরের ১১ অগস্ট তৃণমূল কর্মী শেখ বদরে আলম মিদ্যা এবং ২০১১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি তৃণমূল কর্মী জগন্নাথ বাগদি খুন হন। ওই তিনটি খুনের মামলায় অশোকবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও এলাকায় সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের সঙ্গে নিয়ে একাধিক তৃণমূল কর্মীকে মারধর, বাড়ি ভাঙচুর, লুঠপাটের--৪০টির বেশি মামলায় তাঁর নামে অভিযোগ রয়েছে। ২০১০ সালের ১৩ ডিসেম্বর পাত্রসায়র কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র তোলাকে কেন্দ্র করে দুষ্কৃতী তাণ্ডব দেখেছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। সম্প্রতি ওই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত অশোকবাবুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। এ ছাড়া আরও তিনটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল।
এ দিন বিষ্ণুপুর আদালতে ওই সিপিএম নেতার আসার খবর পেয়ে পাত্রসায়র থানার ওসি মানবেন্দ্রনাথ পাল গিয়ে বাসস্ট্যাণ্ড এলাকা থেকে তাঁকে ধরেন। যদিও সিপিএমের পাত্রসায়র জোনাল কমিটির সম্পাদক লালমোহন গোস্বামীর দাবি, “রাজনৈতিক আক্রোশে তৃণমূল বিধানসভা ভোটের আগে আমাদের দলের বহু নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ করেছে। অশোকবাবুর বিরুদ্ধেও অনেক মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। তবে উনি অধিকাংশ মামলায় জামিন পেলেও পাত্রসায়র কলেজের একটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়।” তাঁর অভিযোগ, “পুলিশ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে খুশি করার জন্য আমাদের দলের দক্ষ সংগঠক অশোকবাবুকে গ্রেফতার করেছে।”
তৃণমূলের পাত্রসায়র ব্লক সভাপতি স্নেহেশ মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা অভিযোগ, “বাম জমানায় শালি নদীর দু’পাড়ে সন্ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টির নায়ক হলেন অশোক চট্টোপাধ্যায়। আমাদের দলের কর্মীদের খুনের ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত তিনি।” তাঁর দাবি, “পুলিশ এ বার এলাকার সন্ত্রাসের প্রধান কাণ্ডারী লালমোহন গোস্বামীকে গ্রেফতার করুক।” লালমোহনবাবুর অবশ্য দাবি, “আমার বিরুদ্ধেও তৃণমূল বহু মিথ্যা অভিযোগ করেছে।” |