২৪ ঘন্টার মধ্যে ফের বৃহস্পতিবার শিবনগরে নাবালিকার বিয়ে আটকাল প্রশাসন। একই গ্রামে পর পর দু-দিন নাবালিকা বিয়ে বন্ধে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়ায় খুশি ডোমকলের সাধারণ মানুষ। বুধবার ডোমকলের শিবনগরে নাবালিকা বিয়ে আটকায় মহকুমা প্রশাসন। এদিনও গ্রামবাসীদের তরফেই অভিযোগ যায় ১৭ বছরের পূর্ণিমা খাতুনের বিয়ে হচ্ছে। তখন প্রশাসন হস্তক্ষেপ করে।
এ দিনই বিয়ে ছিল দশম শ্রেণির ছাত্রী পূর্ণিমার। রীতিমতো বরযাত্রী নিয়ে পাশের গ্রাম ফতেপুর থেকে হাজির হয় পাত্র। ছিল খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন। কিন্তু বাদ সাধল প্রশাসন। এদিন দুপুরে ওই নাবালিকার বিয়ের খবর পেয়ে বিয়ের আসরে বিডিও রবীন্দ্রনাথ মিত্র পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে হাজির হন। অবস্থা বেগতিক দেখে পাত্র বিয়ের আসর থেকে চলে যায়। শেষে দুই পরিবারের সদস্যদের বুঝিয়ে বিয়ে বন্ধ হয়। ডোমকলের এসডিও প্রশান্ত অধিকারি বলেন, “ডোমকলে নাবালিকা বিয়ে একটা বড় সমস্যা। মূলত অশিক্ষা ও সচেতনতার অভাবেই এই ঘটনা বার বার ঘটছে। ওই নাবালিকা বিয়ে বন্ধের বিষয়ে সচেতন করতে জনপ্রতিনিধি, পঞ্চায়েত এবং সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কাজে লাগানো হবে।” বিডিও বলেন, “এই ঘটনা রুখতে আমরা বেশ কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। তার মধ্যে সেমিনার, স্লাইড শো এবং নাবালিকা বিয়ের কুফল তথ্যচিত্রের মাধ্যমে গ্রামবাসীদের কাছে তুলে ধরা হবে। লিফলেটও বিলি করা হবে।”
ভৈরব নদীর পাড়ের শিবনগর গ্রামে সাক্ষরতার হার বেশ ভাল। গ্রামের রাস্তা এখনও পাকা হয়নি, তবে বিদ্যুৎ রয়েছে। গ্রামেই রয়েছে একশো বছরেরও পুরনো হাইস্কুল। মূলত কৃষিজীবী মানুষেরই বাস। তবে ডোমকলের অন্য গ্রামের তুলনায় এই গ্রামে চাকুরিজীবীদের সংখ্যা বেশি। ভগীরথপুরের উপ-প্রধান কংগ্রেসের আবদুল হামিদ বিশ্বাস বলেন, “এর আগেও এই ধরনের ঘটনা আমাদের গ্রামে ঘটেছে। জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ গ্রামবাসীদের নিয়ে আলোচনা সভাও হয়েছে। নাবালিকা বিয়ে বন্ধের ব্যাপারে মাইকে প্রচারও চালানো হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও গ্রামবাসীদের সচেতনতা বাড়েনি। এখন প্রশাসন এগিয়ে আসায় হয়তো নাবালিকা বিয়ে বন্ধ হবে।” |