বর্ষপূর্তিতে ঢাক পিটিয়ে প্রচারে সরকার
পুজোর এখনও ঢের দেরি। তবু এই কাঠফাটা গরমেও যে কোনও দিন ঢাকের বোল শুনতে পারেন গঞ্জের হাটে বা গ্রামের মহল্লায়। এও এক রকম উৎসবই বটে! রাজ্যের নতুন সরকারের বর্ষপূর্তি বলে কথা। ঢাক পিটিয়ে নিজেদের কাজের ফিরিস্তি শোনাতে চলেছে রাজ্য সরকার। তাই রাজ্য জুড়ে ব্লক-পিছু এক জন হিসাবে ৩৪১ জন ঢাকির খোঁজ চলছে। শুধু গ্রামে নয়, পুর-শহরেও এ ভাবে প্রচার চালানোর পরিকল্পনা সরকারের।
রাজ্য সরকারের অনগ্রসর শ্রেণি-কল্যাণ দফতরের তরফে জেলায় জেলায় এ জন্য নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রতি ব্লকে এক জন করে ঢাকির নাম চূড়ান্ত করতে হবে। যাঁরা সরকারি এই প্রচার কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। রাজ্যের নির্দেশ পেয়ে প্রতি ব্লকে এক জন করে ঢাকির নাম চূড়ান্ত করার কাজ শুরুও হয়ে গিয়েছে জেলায় জেলায়। ঢাক পিটিয়ে সরকারের বিভিন্ন কাজ ও প্রকল্পের প্রচার হলে তা সাধারণ মানুষের মধ্যে সাড়া ফেলবে বলেই মনে করছেন প্রশাসনিক কর্তারা। পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রতিটি ব্লকে এ জন্য ইতিমধ্যেই আবেদনপত্র জমা পড়েছে। মেদিনীপুর সদর ব্লকে যেমন ৪৪ জন আবেদন করেছেন। শালবনিতে ৫ জন। তাঁদের মধ্যে থেকেই ব্লক-পিছু এক জন ঢাকি বেছে নেওয়া হবে। অনগ্রসর শ্রেণি-কল্যাণ দফতরের জেলা আধিকারিক শান্তনু দাসের বক্তব্য, “প্রতিটি ব্লকেই আবেদনপত্র জমা পড়েছে। এ বার দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। এ জন্য পদক্ষেপও শুরু হয়েছে। মহকুমা-স্তরেও বৈঠক হয়েছে।” দফতর সূত্রে খবর, মহকুমা-স্তরে একটি করে কমিটি তৈরি হয়েছে। ওই কমিটিই আবেদনকারীদের মধ্যে থেকে রীতিমতো ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে এক জন করে ঢাকির নাম চূড়ান্ত করবে।
একটা সময় ছিল, যখন এ ভাবেই গ্রামে-গ্রামে প্রচার চলত। গ্রামের এক জায়গায় ঢাক-ঢোল বাজিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণার চল ছিল। বাজনার শব্দে জড়ো হয়ে যেতেন এলাকার মানুষ। রাজ্যের বর্তমান সরকারের পরিকল্পনায় সেই দিন ফিরতে চলেছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রতি ব্লকে এক জন করে ঢাকি নিয়োগের জন্য রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি-কল্যাণ দফতরের পক্ষ থেকে একাধিক নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। প্রথমে ৭ মার্চের মধ্যে ঢাকিদের নাম চূড়ান্ত করার কথা থাকলেও, তা হয়ে ওঠেনি। তবে মে মাসের গোড়ায় তা সম্পূর্ণ করার উপরে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। গত বছর ২০ মে নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নিয়েছিল। আগামী ২০ মে সরকারের বর্ষপূর্তি বেশ ঘটা করে পালনেরই তোড়জোর চলছে।
এক বছরে সরকারের সাফল্যের খতিয়ান দিয়ে পুস্তিকা ছাপানোর পরিকল্পনাও ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। কয়েক দিন আগেই কলকাতার টাউন হলে মন্ত্রী-আমালাদের নিয়ে সরকারের কাজের পর্যালোচনা বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, ১০ মাসেই এই সরকার ১০ বছরের কাজ করে ফেলেছে! প্রাক-নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিরও ৯০ শতাংশ পূরণ হয়ে গিয়েছে বলে সে দিন মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছিলেন। সরকারের সে-সব ‘সাফল্য’ ঠিক মতো প্রচার পাচ্ছে না অনুযোগ করে মন্ত্রী-আমালাদের ওই বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রী প্রতিটি দফতরকে কাজের খতিয়ান দিয়ে প্রচারের বন্দোবস্ত করার নির্দেশ দেন। তার পরেই ঢাকি নিয়োগের ব্যপারাটিও গতি পেয়েছে। আপাতত তিন মাসের জন্য ৩৪১ জন ঢাকি নিয়োগ করা হবে বলে ঠিক হয়েছে। এই মুহূর্তে ব্লক-স্তরে ঢাকির খোঁজ চললেও পরে ৫৯টি পুর-এলাকাতেও এ ভাবে প্রচার চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্য সরকারের।
ফলে ঢাক পিটিয়ে প্রচার শুরু হল বলে!


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.