নিজস্ব সংবাদদাতা • খানাকুল |
চাষিদের ‘কিষাণ ক্রেডিট কার্ড’ দেওয়ার ব্যাপারে ‘অসহযোগিতা’র অভিযোগ উঠেছে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে। খানাকুল ১ ব্লকের ঘোষপুরের এই ব্যাঙ্কের শাখা অফিসের বিরুদ্ধে ব্লক প্রশাসন ও কৃষি দফতরের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন ব্লক কৃষি আধিকারিক।
আরামবাগের মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগী বলেন, “বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে আনা হয়েছে।” জেলার মুখ্য কৃষি আধিকারিক অলীক মণ্ডলের কথায়, “এক বৈঠকে জেলার লিড ব্যাঙ্ক অফিসার গৌতম মুখোপাধ্যায়কে বিষয়টি দেখতে বলেছেন জেলাশাসক।” গৌতমবাবুর বক্তব্য, “আমরা সঙ্গে সঙ্গেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছি। সমস্যা মিটে যাবে।” সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রের খবর, চাষিদের সহজ শর্তে ঋণ পেতে ‘কিষাণ ক্রেডিট কার্ড’ চালু হয় প্রায় আট বছর আগে। সে সময়ে সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি এবং ব্যাঙ্ক থেকে সরাসরি কৃষকেরা সেই সুযোগ পেতেন। ‘কিষাণ ক্রেডিট কার্ড’ হল, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার পরে চাষির ছবি-সহ পরিচয়পত্র।
নতুন সরকার আসার পরে রাজ্যের প্রতিটি চাষিকে এই পরিষেবার আওতায় আনতে কৃষি দফতরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই কার্ড থাকলে চাষিরা যে কৃষিঋণ নেন, তা সময়ে শোধ করলে ৭ শতাংশের বদলে ৩ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়। তা ছাড়া, উৎপাদিত ফসল শস্যবিমার আওতায় চলে আসে। আলু-ছাড়া অন্য শস্যের ক্ষেত্রে বিমার কিস্তির টাকা নিয়ে নানান সুবিধা পান চাষিরা। কিষাণ ক্রেডিট কার্ড নিয়ে প্রচুর প্রচার করছে কৃষি দফতর। চাষিদের মধ্যে তা নিয়ে উৎসাহও আছে বলে সংশ্লিষ্ট দফতর সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
ঘোষপুরের ব্যাঙ্কটির ক্ষেত্রে কী অভিযোগ?
খানাকুল ১ ব্লক কৃষি আধিকারিক হরষিত মজুমদার জানান, কৃষকদের পূরণ করা ১২৮টি আবেদনপত্র যাচাই করে গত বছর ৩০ নভেম্বর ঘোষপুরের ওই ব্যাঙ্কে পাঠানো হয়েছিল। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ মাত্র ১৭টি কার্ড দেওয়ার পরে চলতি বছরের ২৩ মার্চ ১১১টি আবেদনপত্র ফেরত পাঠিয়ে দেন। কারণ হিসাবে তাঁরা জানান, চাষের মরসুম শেষ হয়ে গিয়েছে। চাষিরাও কার্ডের বিষয়ে উৎসাহী নয়।” ব্লক কৃষি আধিকারিকের কথায়, “ওই কার্ড করাতে গেলে কোনও মরসুম লাগে না। সারা বছরই কাজ হতে পারে। তা ছাড়া, সারা বছর কিছু না কিছু চাষও হয়। চাষিরা যে ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন না, সে কথাও আমাদের জানানো হয়নি। চাষিরা উৎসাহী নন বলে মনগড়া যুক্তি দেওয়া হচ্ছে।” |