ঝড়ে ব্রহ্মপুত্রে লঞ্চ ডুবে যাওয়ার ঘটনায় আরও ১৩ জনের মৃতদেহ উদ্ধার হল। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২১ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ওই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৪টি। তবে এখনও নিখোঁজ রয়েছেন বহু যাত্রী। কারও মতে তা দেড়শো, কারও মতে দু’শো। সরকারি তরফে যদিও বুধবার জানানো হয়েছিল নিখোঁজ হওয়া সংক্রান্ত ৪২টি অভিযোগ জমা পড়েছে। তবে অন্তর্দেশীয় জলপথ পরিবহণ নিগম সূত্রে খবর, ২০৭ জন যাত্রী আগাম টিকিট কেটে লঞ্চটিতে উঠেছিলেন। তবে তার চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী লঞ্চটিতে ছিলেন। তাই নিখোঁজের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছেই। এ দিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এনডিআরএফ এবং বিএসএফ জওয়ানরা স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্য নিয়ে মৃতদেহগুলি উদ্ধার করেন।
ব্রহ্মপুত্র বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার ৪টি থানা এলাকার মধ্য দিয়ে গিয়েছে। প্রশাসনের আশঙ্কা, অনেক যাত্রীর দেহ তাই ভেসে বাংলাদেশে চলে যেতে পারে। বাংলাদেশে কোনও মৃতদেহ উদ্ধার হলে সরকারের তরফে বিডিআর-এর মাধ্যমে ধুবুরি জেলাপ্রশাসনের হাতে তা তুলে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে। এ দিন এই ব্যাপারে বাংলাদেশের এক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ধুবুরি জেলা পুলিশ প্রশাসনের ফ্ল্যাগ মিটিং হয়।
মঙ্গলবার ‘ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসকিউ ফোর্সে’র কর্মীরা অভিশপ্ত লঞ্চটি উদ্ধার করেন। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে মৃতদের পরিবারপিছু ২ লক্ষ টাকা এবং অসম রাজ্য সরকারের তরফে দেড় লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। আহতদের দেওয়া হবে ৫০ হাজার টাকা। বুধবার গুয়াহাটি থেকে হেলিকপ্টারে ধুবুরি যান কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী। সঙ্গে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ভুবনেশ্বর কলিতা।
সোমবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ ধুবুরি শহরের কাছারিঘাট থেকে অন্তত ৩৩৫ জন যাত্রী নিয়ে স্থানীয় মেদেরটারি গ্রামের দিকে যাচ্ছিল লঞ্চটি। বিকেলে ঝড়ের কবলে পড়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে লঞ্চটি পাথরে ধাক্কা খেয়ে টুকরো হয়ে যায়।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সাউফুল ইসলাম (৮), বিউটি পারভিন (৪০), মনপুল খাতুন (২৩), ইসমাইল আলি (৩০), সহিদা খাতুন (২০), আঞ্জুয়ারা খাতুন (১৮), বাহারুন নেসা (৫০), আশ্রাফুল ইসলাম (৯), সোলেমান আলি (৬মাস), আবু তাহের (৯), ময়ফল বেওয়া (৪৫), সামসুল হক (৪৬), হায়েতন বিবি (৩০)এর দেহ উদ্ধার হয়। তাঁদের সকলেরই বাড়ি মেদেরটারি গ্রাম সংলগ্ন এলাকায়। |