হারলেন সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া, বাঁচলেন অর্জুন মুন্ডা। আর জিতল? কংগ্রেস।
ঝাড়খণ্ডে রাজ্যসভার দু’টি আসনের ভোটে বাবুলাল মরান্ডির জেভিএম শেষ পর্যন্ত ভোট দানে বিরত থাকলেও তাঁদের অঙ্ক মেলাতে পারলেন না বিজেপি নেতৃত্ব। আর সাত নির্দলকে দলে টেনে প্রয়োজনের থেকেও দু’টি অতিরিক্ত ভোট নিয়ে অঙ্ক মিলিয়ে দিলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ বালমুচু ২৫ জন বিধায়কের (কংগ্রেস-১৩, আরজেডি-৫, নির্দল-৭) ভোট পেয়ে রাজ্যসভায় নির্বাচিত হলেন। ২৩টি ভোট (জেএমএম-১৮, অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়ন-৫) পেয়ে জিতলেন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার প্রার্থী সঞ্জীব কুমার। তিনটি নির্দল ভোট পাবেন ধরে নিয়ে বিজেপি নেতৃত্ব যে অঙ্ক কষেছিলেন, কংগ্রেস তা ছিনিয়ে নেওয়ায় তাদের প্রার্থী সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া পেলেন ২০টি ভোট (বিজেপি-১৮, জেডিইউ-২)।
তবে দলীয় প্রার্থীর হার হলেও স্বস্তি পেলেন রাজ্যের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা। কোনও কারণে যদি
অন্যতম জোটসঙ্গী আজসু-র ভোট পেয়ে সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া জিতে যেতেন, তবে তাঁর সরকার যে হাড়িকাঠে উঠত, এ ব্যাপারে মোটামুটি নিশ্চিত ছিলেন অর্জুন। কারণ তাঁদের প্রার্থী হারলে ঝাড়খণ্ডের জোট সরকারের ‘সুস্থিতি’ যে বিপন্ন হবে তা বিজেপি নেতৃত্বের কাছে আগাম স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন জেএমএম নেতা তথা মুন্ডা সরকারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। এই পরিস্থিতিতে অহলুওয়ালিয়ার হারে জাতীয় স্তরে বিজেপি-র মুখ পুড়লেও খুশি হওয়ার কথা অর্জুন মুন্ডারই।
জাতীয় রাজনীতিতে যেমন বিজেপি, তেমন রাজ্য রাজনীতিতে বড়সড় হোঁচট খেল বাবুলাল মরান্ডি ও তাঁর দল জেভিএম। এর পর কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধতে গেলে তাদের শর্ত মেনেই চলতে হবে জেভিএম-কে।
আজ সকালে দলের ১১ জন বিধায়কের সঙ্গে বৈঠকের পর মরান্ডি ভোট দানে বিরত থাকার সিদ্ধান্তই শেষ পর্যন্ত বহাল রাখেন। বাবুলাল বলেন, “এ বার রাজ্যসভার নির্বাচনে জোট রক্ষার জন্য কংগ্রেসের কাছে তিন দফায় তিনটি প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল। কংগ্রেস একটি প্রস্তাবও শেষ পর্যন্ত মানেনি। তাই ভোটদানে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।”
ঝাড়খণ্ড বিধানসভার একটি আসন খালি থাকায় বর্তমান ৮০ জন সদস্যের মধ্যে এ দিন ভোট দিয়েছেন ৬৮ জন বিধায়ক। জেভিএমের ১১ জন ছাড়াও ভোটে অংশ নেননি সিপিআই (এমএল)-এর এক বিধায়ক। জেলে বিচারাধীন বন্দি তিন বিধায়ক (এক জন কংগ্রেস এবং দু’জন নির্দল) এ দিন ভোট দিয়ে যান। বেলা সওয়া ১২টা নাগাদ অনেকটা কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার মতো আজসুর পাঁচ বিধায়ককে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে আসেন হেমন্ত সোরেন। এর কিছু ক্ষণ পরেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুণ্ডার সঙ্গে ভোট কেন্দ্রে আসেন বিজেপি বিধায়করা। একে একে ভোট দিয়ে যান আরজেডি এবং জেডিইউ বিধায়করাও।
রাজনৈতিক দলের ব্যস্ততার পাশাপাশি, আজ রাঁচি জুড়ে ছিল আয়কর দফতর এবং পুলিশের তৎপরতা। শেষ মুহূর্তে বিধায়ক কেনাবেচা যাতে না হয়, সে দিকে নজর রাখতেই। তবু কংগ্রেসের প্রতি সাত নির্দল বিধায়কের ‘আনুগত্য’ ঘিরে প্রশ্ন উঠে গেলই। |