রাষ্ট্রপতি নির্বাচন
ধৈর্য ধরুন, প্রার্থী নিয়ে হইচই থামাতে বার্তা সনিয়ার
রাষ্ট্রপতি পদে প্রতিভা পাটিলের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৫ জুলাই। সে পদে নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের নোটিস জারি হতে এখনও এক মাসের বেশি বাকি। অথচ সম্ভাব্য প্রার্থী নিয়ে আলোচনা ও কৌতূহল ইতিমধ্যেই উচ্চগ্রামে। এই আবহে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী আজ জানিয়ে দিলেন, “ধৈর্য ধরুন। অনেক সময় রয়েছে। প্রার্থীর নাম এখনও চূড়ান্ত নয়।”
সনিয়া ধৈর্য ধরতে বলছেন ঠিকই। কিন্তু মজার বিষয়, সম্ভাব্য প্রার্থী নিয়ে জল্পনা থামাতে গিয়ে উল্টে আজ বোমা ফাটিয়েছেন কংগ্রেসেরই মুখপাত্র রেণুকা চৌধুরি। প্রণব মুখোপাধ্যায়কে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করা হচ্ছে কিনা জানতে চাওয়া হলে রেণুকা সাংবাদিকদের বলেন, “প্রণববাবু দলের জন্য এত মূল্যবান যে তাঁকে আমরা ছাড়ি কী করে? তাঁর এত ক্ষুরধার রাজনৈতিক মন। দলের জন্য তাঁকে প্রয়োজন।” এটুকু বলেই থেমে থাকেননি রেণুকা। তিনি এ-ও বলেন, “এ কথা হয়তো প্রণববাবুর ভাল লাগবে না। কিন্তু দলের জন্য তিনি কতটা মূল্যবান সে তো আমরাই জানি।” সনিয়া-মমতা বৈঠকের প্রহর মাত্র বাকি তখন। রেণুকার এই মন্তব্য যথারীতি হইচই ফেলে দেয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংসদ ভবনে প্রবেশ করামাত্রই, তাঁকেও প্রণব নিয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। জবাবে মমতা বলেন, “প্রণববাবুকে কংগ্রেসই তো রাষ্ট্রপতি হওয়ার দৌড়ে রাখছে না দেখছি!” পরক্ষণেই তিনি বলেন, “আমরা আমাদের সীমাবদ্ধতা জানি। তা ছাড়া কংগ্রেস কাকে প্রার্থী করবে সেটা তাদের ব্যাপার।”
রেণুকার এই মন্তব্যে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে, তা অবশ্য বুঝতে বাকি থাকেনি কংগ্রেস নেতৃত্বেরও। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির এক শীর্ষ নেতা বলেন, “এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য যাতে উনি আর না করেন, সে জন্য ওঁকে সমঝে দেওয়া হয়েছে।” তবে দলের একাংশের মতে, রেণুকা আলটপকা কিছু বলেননি। তবে যে ভাবে বলেছেন, তাতে ভুল বার্তা গিয়েছে।
বিকেলে দলের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে কংগ্রেস মুখপাত্র রশিদ অলভি বলেন, “প্রণববাবুর রাষ্ট্রপতি হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে কোনও নামই চূড়ান্ত হয়নি।”
আজ সনিয়া বৈঠক করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। সেটাও প্রার্থী বাছাই নিয়েই। পরে সমাজবাদী পার্টি নেতা মুলায়ম সিংহের সঙ্গেও আজ বৈঠক করেন মমতা। তাৎপর্যপূর্ণ হল, রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হিসাবে কোনও মুসলিম নেতাকে মনোনীত করার কথা এর আগে সপা শিবির থেকে বলা হচ্ছিল। মুলায়ম সিংহ আজ কিন্তু বলেন, “এক জন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী করতে হবে।” বস্তুত চেন্নাইয়ে করুণানিধি-অ্যান্টনি বৈঠকের পর থেকেই রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসাবে প্রণব মুখোপাধ্যায় এবং উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির নাম আলোচনায় উঠে আসছিল। মুলায়মের এই মন্তব্যের পর আজ প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি আনসারিকে নিয়ে আপত্তি রয়েছে সপা-র? তবে মুলায়ম-ঘনিষ্ঠ সপা সাধারণ সম্পাদক বলেন, “এই সব জল্পনা অহেতুক। রাজনৈতিক ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী করার প্রস্তাব ‘নেতাজি’ দিয়েছেন ঠিকই। কিন্তু কংগ্রেস আগে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করুক, তার পর পছন্দ-অপছন্দের প্রশ্ন।”
প্রণব-আনসারি সম্পর্কে আজ মন্তব্য করেছেন বামেরাও। সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, “হামিদ আনসারিকে বামেরাই উপরাষ্ট্রপতি প্রার্থী করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। প্রণব মুখোপাধ্যায়কে রাষ্ট্রপতি করা হলেও বামেদের কোনও আপত্তি নেই। আসল বিষয় হল, এক জন সর্বসম্মত প্রার্থী বাছাই করা। সেই সর্বসম্মতি গড়ে তোলার দায়িত্ব কংগ্রেসেরই।”
প্রার্থী বাছাই নিয়ে শাসক জোটের এই টানাপোড়েনে কিছুটা মজাই পাচ্ছে বিজেপি। দলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, হামিদ আনসারি যেহেতু বামেদের প্রার্থী ছিলেন, তাই মমতা তাঁকে মানবেন বলে মনে হয় না। আবার আস্থার ঘাটতির জন্য প্রণববাবুকে সনিয়াও রাষ্ট্রপতি করবেন না। আগের বার যেমন শেষ মুহূর্তে প্রতিভার নাম ঘোষণা করেছিলেন সনিয়া, এ বারও তিনি তেমন কিছুই করতে পারেন!


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.