আজাদগড়
ভরদুপুরে ফ্ল্যাটে বন্দুক দেখিয়ে টাকা-গয়না লুঠ
ল্টলেকের পরে এ বার আজাদগড়।
বৃহস্পতিবার ভরদুপুরে যাদবপুর থানা এলাকার আজাদগড়ে চারতলার একটি ফ্ল্যাটে গৃহকর্ত্রীর মাথায় রিভলভার ঠেকিয়ে নগদ টাকা-গয়না নিয়ে চম্পট দেয় দুই দুষ্কৃতী। এর আগে রবিবার শেষ রাতে তিন-তিনটি দরজা ভেঙে সল্টলেকের একটি বাড়িতে ডাকাতি করে পালায় এক তরুণী-সহ ছয় দুষ্কৃতী। তিন দিন পরেও সেই ঘটনার কোনও কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। এ দিনের ঘটনার ফের প্রশ্ন উঠেছে পুলিশি নিরাপত্তার হাল নিয়ে।
পুলিশ জানায়, এ দিন আজাদগড়ের ওই ফ্ল্যাটে বেলা ১২টায় দরজার ঘন্টি বাজতে গৃহকর্ত্রী সাথী দাস ভাবেন, কোনও সেল্সম্যান বা তাঁর ছোট ছেলে এসেছে। আই-হোলে চোখ না রেখেই তিনি দরজা খুলে দেন। সঙ্গে সঙ্গেই হুড়মুড় করে ঢুকে পড়ে দুই দুষ্কৃতী। সাথীর বক্তব্য, “দু’জনেরই মুখে কাপড় বাঁধা ছিল। ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে আমার মাথায় রিভলভার ঠেকিয়ে চুপ করে থাকতে বলে ওরা। মুখে কাপড় গুঁজে হাতও বেঁধে দেয়। এর পরে আলমারির চাবি নিয়ে নগদ টাকা ও গয়না নিয়ে চম্পট দেয়।” দুষ্কৃতীরা পালানোর পরে কোনও রকমে হাতের বাঁধন খোলেন সাথী। তিনি বলেন, “বারান্দায় গিয়ে ‘চোর-চোর’ বলে চিৎকার করতে থাকি। আশপাশের অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা ছুটে আসেন।”
ডাকাতির পরে পুলিশি তদন্ত। নিজস্ব চিত্র
আজাদগড়ের ঘিঞ্জি এলাকায় একটি বহুতলে থাকেন সাথী। ওই বধূ জানান, বেলা ১১টা নাগাদ ছোট ছেলে প্রীতম রাস্তায় খেলতে গিয়েছিল। বড় ছেলে শুভজিৎ ও স্বামী শিবাংশু, দু’জনই ছিলেন কর্মস্থলে। সাথী বলেন, “অনেক দিনই ওই সময়ে সেল্সম্যানরা কলিং বেল বাজান। ভাবলাম, তেমনই কেউ এসেছেন বা ছোট ছেলে ফিরেছে। তাই ‘আই হোল’ দিয়ে না দেখেই দরজা খুলে দিই। আমাকে খুন করে ফেললেও কেউ বাঁচাতে পারত না।”
ভরদুপুরের এই ডাকাতির ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। ঘটনাস্থলে যান ডিসি (সাউথ সাবার্বান) সুজয় চন্দ-সহ লালবাজারের পুলিশকর্তারা। পুলিশ জানায়, আতঙ্কে কিছুটা অসুস্থও হয়ে পড়েন সাথী। খবর পেয়ে তাঁর স্বামী ও ছেলে বাড়ি ফিরে আসেন। তাঁর স্বামী, বারুইপুরের এক বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের কর্মী শিবাংশু দাস বলেন, “আমাদের বাড়িতে তো টাকা-গয়না থাকে না। হাজার দশেক টাকা ও সামান্য কিছু গয়না নিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা।” ওই বাড়ির দোতলার বাসিন্দা রুমকি দাস জানান, ওই সময়ে বারান্দায় ভিজে কাপড় মেলতে গিয়ে নীচে একটা কালো মোটরসাইকেল দেখেন তিনি। সাথীদেবীর পাশের বাড়ির বাসিন্দা চৈতালী সাহা বলেন, “দিনেদুপুরে এমন কী করে ঘটতে পারে, তা বুঝে উঠতে পারছি না। আমাদের তো কোনও নিরাপত্তাই নেই।” এলাকার আর এক বাসিন্দা বলেন, “সম্প্রতি যাদবপুর থানাকে কলকাতা পুলিশের অধীনে এনেছে রাজ্য সরকার। তাতেও তো ভরসা পাচ্ছি না।”
কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, “দুষ্কৃতীরা বাড়ির ছাদ দিয়ে পালিয়েছে। ছাদে তাদের ফেলে যাওয়া একটা ব্যাগ মিলেছে।” তবে, যে ভাবে দুষ্কৃতীরা পালিয়েছে, তাতে অবাক গোয়েন্দারা। এক অফিসার জানান, কার্নিশ বেয়ে নেমে পালায় দুষ্কৃতীরা। একটি মইও মিলেছে। পল্লববাবু জানান, দুষ্কৃতীরা ঘরে ঢুকে শুধু একটি আলমারিই ভেঙেছে। এতেই তদন্তকারীদের ধারণা, নির্দিষ্ট তথ্য নিয়েই এসেছিল দুষ্কৃতীরা।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.