বেআইনি ভাবে বাড়ি নির্মাণের নালিশ, শুরু তদন্ত
‘বেআইনি’ ভাবে অনুমোদন আদায় করে রামপুরহাট ৬ নম্বর ওয়ার্ডে শিবসাগর নামে ঐতিহ্যবাহী পুকুরের পাড়ে বাড়ি তৈরির অভিযোগ উঠল উপপুরপ্রধানের বিরুদ্ধে। রামপুরহাট শহর সিপিএম নেতৃত্ব পুরসভার বেশ কিছু জায়গায় পোস্টার সাঁটিয়ে আন্দোলনও শুরু করেছেন। রামপুরহাট মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক হরিসাধন দত্ত বলেন, “অভিযোগ পেয়ে বাড়ি নির্মাণের কাজ আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”
সিপিএমের রামপুরহাট শহর লোকাল কমিটির সম্পাদক কানাইলাল দাস বলেন, “শহরের মুরারী দত্ত ঠাকুরবাড়ির দুর্গা প্রতিমা ওই পুকুরেই বিসর্জন করা হয়। এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন কাজে ওই পুকুরের জল ব্যবহার করে আসছেন।” তাঁর অভিযোগ, “এ রকম একটি পুকুরের পাড়ে পুরসভার বিশেষ অনুমতি আদায় করে রাতারাতি বাড়ি তৈরির চেষ্টা নক্কারজনক। ঘটনার পেছেনে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর তথা উপপুরপ্রধান অনিন্দ্য সাহার মদত আছে।” সিপিএমের দাবি, ঐতিহ্যবাহী ওই পুকুরের পুকুর পাড় ধ্বংস করার চেষ্টাকে আটকাতে হবে। সম্প্রতি ওই ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা রামকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে প্রশাসন।
রামকৃষ্ণবাবুর দাবি, “ওয়ার্ডের ২৮৭৮ নম্বর দাগে (জেএল নম্বর ৭৭, খতিয়ান নম্বর ২২৪) ৭৮ শতক জায়গা পুকুর পাড় হিসেবে চিহ্নিত। বেআইনি ভাবে ওই ৭৮ শতকের মধ্যে ২৬ শতক পুকুরপাড়কে বাস্তুভিটেয় রূপান্তরিত করা হয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, “গত ১৯ জানুয়ারি পুরসভা কল্যাণজ্যোতি দত্ত নামে এক ব্যক্তিকে ওই জায়গায় বাড়ি তৈরি করা অনুমতি দিয়েছে। এর আগে ২০০৯ সালে ওই পুকুরপাড়কে ঘিরে প্রোমোটারি চক্রান্তের তৎপরতার বিষয়টি তৎকালীন পুরপ্রধান অরূপ মুখোপাধ্যায় প্রশাসনের নজরে এনেছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে কল্যাণজ্যোতি দত্ত এবং সন্ধ্যা সিংহ ১৩ শতক করে পুকুরপাড়ের মোট ২৬ শতক জায়গা বাস্তুভিটে হিসেবে রূপান্তরিত করে নিয়েছেন। তার মধ্যে কল্যাণজ্যোতিবাবুর ৪ শতক জায়গায় বাড়ি নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছে।” এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ভিজিল্যান্স কমিশন থেকে শুরু থেকে প্রশাসনের সমস্ত স্তরে জানানো হয়েছে বলে রামকৃষ্ণবাবু জানিয়েছেন। এ দিকে এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, শিবসাগর পুকুরের কিছু অংশ প্রোমোটাররা মাটি ফেলে ভরাট করতেও শুরু করেছে।
রামপুরহাট মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক হরিসাধন দত্ত বলেন, “নির্মাণকারীকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। ওই পুকুরপাড়কে বাস্তুভিটে কী করে করা হল সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিএলআরও-র কাছে জানতে চাওয়া হবে।” রামপুরহাট ১ ব্লকের বিএলআরও মহম্মদ মনিরুদ্দিনের দাবি, “পুকুরপাড়ের জায়গাকে কী করে বাস্তুভিটে করা হল বুঝতে পারছি না। তবে সংশ্লিষ্ট রেভিনিউ ইনস্পেক্টরের কাছ থেকে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।”
যে দু’জন পুকুরপাড়ের ২৬ শতক জায়গাকে বাস্তুভিটেতে রূপান্তরিত করেছেন বলে অভিযোগ, তার মধ্যে কল্যাণজ্যোতিবাবু এলাকায় তৃণমূলকর্মী হিসেবেই পরিচিত। তিনি ২০০৫ সালে তৃণমূলের হয়ে ৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করছেন। এ দিন বহু বার চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। অন্য দিকে, উপপুরপ্রধান অনিন্দ্যবাবু অবশ্য তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “পুরসভা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখে কল্যাণজ্যোতি দত্তকে বাড়ি তৈরির অনুমোদন দিয়েছে। তা ছাড়া একটি বাড়ি তৈরির অনুমোদন না থাকায় পুরসভা সেই কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.