সংস্কৃতি যেখানে যেমন...

আশ্রয় যার বই
আমার ভালবাসার কোনও জন্ম হয় না
মৃত্যু হয় না—
কেননা আমি অন্যরকম ভালবাসার হিরের গয়না
শরীরে নিয়ে জন্মেছিলাম।

কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের এই কবিতার সঙ্গে মিল রয়েছে ৮৬ বছরের কণিকা দাস-এর জীবন বোধের। নলহাটির কুরুমগ্রামের বাসিন্দা কণিকাদেবী বর্তমানে গত ৭ বছর ধরে কীর্ণাহারের কাছে ছোটমেয়ের বাসায় থাকেন। সেই কবে যৌবনে হারিয়েছেন স্বামীকে। অকাল মৃত্যু হয়েছিল তাঁর তিন ছেলেমেয়েরও। তারপর থেকে একমাত্র আশ্রয় বই। বাড়ির পাশেই ছিল গ্রামীণ গ্রন্থাগার। সেই শুরু-- বই আর কণিকাদেবী, দু’জনেই দু’জনকে আগলে এসেছেন বরাবর। গ্রামের ওই গ্রন্থাগারে টানা ৫০ বছর সদস্য থেকে পড়ে ফেলেছেন বঙ্কিম, রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, তারাশঙ্কর, অবধূত, শঙ্কু মহারাজ প্রমুখের নানান ধরনের রচনা। সুবোধ চক্রবর্তীর সুবিশাল ‘রম্যাণী বীক্ষা’ সিরিজও তাঁর পড়া। তবে তাঁর প্রিয় লেখক গজেন্দ্রনাথ মিত্র। তাঁর তিনটি উপন্যাসের ‘শ্যামা’ চরিত্রের সঙ্গে নিজের বেশ খানিকটা মিল খুঁজে পেয়েছেন কণিকাদেবী। তবে তাঁর সব থেকে ভাল লাগে ভ্রমণকাহিনি পড়তে। এখন অবশ্য পড়ছেন উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর রচনা। কণিকাদেবীর মেয়ে, পেশায় স্কুল শিক্ষিকা দেবযানীদেবীর কথায়, “মা বলেন মানুষের বেঁচে থাকার জন্য যেমন খাবারের প্রয়োজন, তেমনি মনের খিদে মেটানোর জন্য প্রয়োজন বই পড়া। বই পড়লে হতাশাকে অবলীলায় অতিক্রম করা যায়।” তাই এই বয়সেও কণিকাদেবীর প্রত্যেকদিন অন্তত ২-৩ ঘণ্টা বই পড়া চাই-ই। বছর তিনেক আগে সেই করুমগ্রাম সম্মিলনী গ্রামীণ গ্রন্থাগারের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে তাদের সবথেকে ‘সিনিয়র’ পাঠক কণিকাদেবীকে দিয়েছে বিশেষ সংবর্ধনা।
বই পড়ার অদম্য আগ্রহে এই প্রৌঢ়া মহিলা যে দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন তা অবশ্যই বিশেষ সম্মান পাওয়ার যোগ্য।

চন্দ্রমোহন সিংহ
কলেজে পড়ার সময় নলহাটি ২ ব্লকের বারা গ্রাম থেকেই ১৯৭৬ সাল নাগাদ শুরু করেছিলেন ‘মানস প্রতিমা’ নামে একটি ত্রৈমাসিক লিটল ম্যাগাজিন। সেই পত্রিকা তিনি টানা প্রায় পঁচিশ বছর ধরে প্রকাশ করেছিলেন। সেই ম্যাগাজিনে জেলার বহু লেখক-লেখিকার প্রতিভার বিকাশও ঘটেছে। যে ব্যক্তি ওই পত্রিকার নেপথ্যে ছিলেন, তিনি-- জেলার বিশিষ্ট সাংবাদিক তথা সাহিত্যিক চন্দ্রমোহন সিংহ। নিজের হাতে গড়া সেই পত্রিকাটি বর্তমানে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তবুও দমানো যায়নি চন্দ্রমোহনবাবুকে। সমানে লিখে চলেছেন রাজ্যের বহু লিটল ম্যাগাজিনে। প্রায় দু’শোরও বেশি লিটল ম্যাগাজিনে তাঁর ভুরি ভুরি কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধ বেরিয়েছে। এক সময়ে চন্দ্রমোহনবাবু দু’টি দৈনিক সংবাদপত্রে (বর্তমানে বন্ধ) কিছুদিন সাংবাদিকতাও করেছেন। সম্পাদনা করেছেন ‘বীরভূমের সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা’ এবং ‘চারণ কবি অর্ধেন্দুপ্রসাদ রায়’ শীর্ষক দু’খানি গ্রন্থের। সেই চন্দ্রমোহন সিংহ আজও থামাননি নিজের কলম। এখনও সমান সচ্ছন্দে দাপটের সঙ্গে লিখে চলেছেন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়।

পুনর্মিলন উৎসব
সিউড়িতে শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলের অনুষ্ঠান।
সিউড়ির শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে পুনর্মিলন উৎসব। স্কুলের ৫৮তম বর্ষ পূর্তিতে আয়োজিত এই পুনর্মিলন উৎসবে যোগ দিয়েছেন বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্র থেকে শিক্ষক, অ-শিক্ষককর্মীরাও। চলবে রবিবার পর্যন্ত। চারদিন ধরে উৎসব উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

বিশ্ব বই দিবস
গত ২৩ এপ্রিল ছিল বিশ্ব বই দিবস। ওই বিশেষ দিনটি জেলায় প্রায় নিঃশব্দে কেটে গেলেও ব্যতিক্রমী ছিল সাঁইথিয়া। সাঁইথিয়ার ‘চয়ণিকা’ নামে একটি পুস্তক বিপণী ওই দিন সন্ধ্যায় স্থানীয় রবীন্দ্র ভবনে জেলার ১৬ জন বইপ্রেমীকে সংবর্ধনা দিয়েছে। সংবর্ধনার সঙ্গে ছিল নাটক-সহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও।

সাহিত্য পুরস্কার
জ্যোতিরিঙ্গণ সাহিত্য পত্রিকা আয়োজিত চলতি বছরে ‘জ্যোতিরিঙ্গণ সাহিত্য পুরস্কার’ পেলেন কবি মীণাক্ষী লায়েক। সম্প্রতি পুরুলিয়া জেলা বিজ্ঞান কেন্দ্রের প্রেক্ষাগৃহে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে কবির হাতে মানপত্র ও স্মারক তুলে দেন পত্রিকা গোষ্ঠীর সভাপতি রেভারেন্ড রাজীব আরোহন। কবির সাম্প্রতিক কাব্যগ্রন্থ জাগরুক ও তাঁর সাহিত্য কর্মের জন্যই মীণাক্ষী দেবীকে এই পুরস্কারের জন্য নিবার্চিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পত্রিকার সম্পাদক শ্যামল কিশোর তেওয়ারি।. অনুষ্ঠানে স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও কর্মজীবনের উপর বক্তব্য রাখেন পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের শিক্ষক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিশিষ্টজনেরা। এই উপলক্ষ্যে বিবেকানন্দ ও ভারতের যুব সমাজ শীর্ষক জেলা ব্যাপী একটি রচনা প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়েছিল। প্রতিযোগিতায় কাশীপুর পঞ্চকোটরাজ ভগিনী নিবেদিতা বিদ্যাপীঠের নবম শ্রেণীর ছাত্র দেবাশিষ মণ্ডল প্রথম, রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের দশম শ্রেণীর ছাত্র প্রশান্ত কুম্ভকার ও নারায়ণ মাহাতো যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান পায়।

বর্ষবরণ
শনিবার বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হল খাতড়া শহরের বিদ্যাসাগর পল্লীতে। অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান। অনুষ্ঠান কমিটির সভাপতি অসীম রায় জানান, অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের খাতড়া আশ্রমের অধ্যক্ষ স্বামী নির্মহানন্দ মহারাজ। অনুষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে প্রশ্নোত্তর ও স্বামী বিবেকানন্দ সম্পর্কে বক্তৃতা প্রতিযোগিতা, দেশাত্মবোধক সঙ্গীত ও নৃত্য প্রতিযোগিতা হয়। শেষে ছিল ধর্মালোচনা। অনুষ্ঠানে সংস্কৃত শাস্ত্রের পণ্ডিত দ্বিজপদ তিওয়ারি-সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি হাজির ছিলেন।

মাছরাঙা
‘মাছরাঙা’ পত্রিকার সাহিত্যানুষ্ঠান হয়ে গেল গত রবিবার। অমরকানন দেশবন্ধু উচ্চবিদ্যালয়ে অনুষ্ঠানটি হয়। উপস্থিত ছিলেন সাহিত্যিক বিভাস রায়চৌধুরী, নির্মল হালদার-সহ আরও অনেকে। উদ্যোক্তা গোষ্ঠীর সম্পাদক রামকুমার আচার্য বলেন, “অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশনের পাশাপাশি কবিতা পাঠ ও কবিতা বিষয়ক আলোচনা হয়েছে। একই সঙ্গে সাহিত্য পত্রিকা ‘মাছরাঙা’র ষষ্ঠ সংকলন প্রকাশিত করা হয়।

সাহিত্য বাসর
‘লাল মাটির সোঁদা গন্ধ’ সাহিত্য পত্রিকার উদ্যোগে একটি সাহিত্য বাসর হয়ে গেল। গত রবিবার বাঁকুড়ার গাঁধী বিচার পরিষদে সাহিত্য বাসরের উদ্বোধন করেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ দে। অনুষ্ঠানে মহামায়া মুখোপাধ্যায়ের ‘সেরা ১৬’ গল্পের বই প্রকাশ করা হয়।

সাহিত্যসভা
বিষ্ণুপুর মহকুমা গ্রন্থাগারের সেমিনার হলে গত শনিবার একটি সাহিত্য সংগঠনের উদ্যোগে হয়ে গেল সাহিত্যসভা। জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়ের কবিকৃতি নিয়ে আলোচনা হয়। অন্যান্য কবিদের কবিতাপাঠ ও সাহিত্য বিষয়ে আলোকপাত হয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.