আরাবুলের নামে এএসপির কাছে অভিযোগ দায়ের
দেবযানীর বিরুদ্ধে ভাড়াটে, ‘পাশে’ মহাকরণ
ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের বিরুদ্ধে যে অধ্যাপিকা জগ ছুড়ে মারার অভিযোগ এনেছেন, সেই দেবযানী দে-র ‘মোকাবিলায়’ এক ব্যক্তির অভিযোগকে হাতিয়ার করতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার তথা তৃণমূল।
শুক্রবার মহাকরণে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়ে দেবাশিস ঘোষ নামে ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, তিনি দেবযানীর বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তাঁকে উচ্ছেদের জন্য ওই অধ্যাপিকা ও তাঁর স্বামী প্রায়ই লোক জড়ো করে হুমকি দিচ্ছেন। মারধরও করেছেন।
যদিও দেবাশিসের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে দেবযানীর বক্তব্য, “আমার স্বামী ডব্লিউবিসিএস অফিসার। তাঁর বদলির চাকরি বলে আমি নিউ আলিপুরে বাবার বাড়িতে থাকি। দেবাশিসবাবু একতলায় ভাড়া থাকেন। বাবা অনেক দিন অসুস্থ। দোতলায় উঠতে-নামতে অসুবিধা হয়। তাই উনি ভাড়াটে তুলে দিতে চাইছেন। এটা ওঁরই সিদ্ধান্ত।”
দেবাশিসের বক্তব্য, তিনি গত এক বছরে নিউ আলিপুর থানায় আট বার দেবযানীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। দেবযানীও পাল্টা অভিযোগ করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ সূত্রে বলা হচ্ছে, এই গোলমাল অনেক দিনের। দেবাশিস দেবযানীর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করলেও থানায় কোনও মেডিক্যাল রিপোর্ট দাখিল করেননি। যদিও ডাক্তারি রিপোর্ট আছে বলেই দাবি দেবাশিসের।
নিগ্রহের ঘটনা রাজ্যপালকে জানানোর পরে সহকর্মীদের সঙ্গে
শিক্ষিকা দেবযানী দে (বাঁ দিক থেকে দ্বিতীয়)। শুক্রবার। ছবি: সুমন বল্লভ
এ দিন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার আগে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন দেবাশিস। তিনি বলেন, “এ দিন সকালে আমি কালীঘাটে গেলে মুখ্যমন্ত্রীর অফিসের এক অফিসার আমার কথা শোনেন।” মহাকরণ সূত্রের খবর, দুপুরে তাঁকে মহাকরণে ডেকে পাঠানো হয়। দেবাশিস বলেন, “আমি মুখ্যমন্ত্রীকে সমস্ত খুলে বলি।” তিনি আমাকে বলেন, ‘আপনি বাইরে গিয়ে প্রেসকে সব বলুন। আপনার সঙ্গে সুব্রতদা যাচ্ছে।’’ এর পরে দেবাশিসকে প্রেস কর্নারে নিয়ে আসেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী। জানতে চাওয়া হয়, এত দিন পরে কেন এ কথা জানাচ্ছেন? জবাবে দেবাশিস বলেন, “আমি সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম।” তাঁকে সরিয়ে দিয়ে সুব্রতবাবু বলেন, “এটা রাজনৈতিক বিষয় হয়ে গিয়েছে।” কিন্তু কলেজের ঘটনার সঙ্গে এই গোলমালের সম্পর্ক কী? সুব্রতবাবুর উত্তর, “উনি সিপিএম কর্মী, অধ্যাপিকা নন। প্রকৃত শিক্ষক হলে প্রণাম করব, মাথা নত করব। আর সিপিএম হলে আমাদের ভাষাও পাল্টে যাবে। অধ্যাপিকা, অধ্যাপিকা বলে এত ‘ফোকাস’ করা হচ্ছে, ‘চোলি কে পিছে’ কী আছে, তা তো দেখতেই হবে।
এ ব্যাপারে দেবযানীর প্রতিক্রিয়া, “এটা তো একটা পরিস্থিতির সুযোগ নেওয়া হচ্ছে। এ কোন দেশে বাস করছি আমরা? মুখ্যমন্ত্রীর উপরে আমার অগাধ বিশ্বাস আছে। আর কী বলব?” সেই সঙ্গে তিনি বলেন, “ওই দিন একটা বিষয়ের প্রতিবাদ করা হয়েছে। কলেজের অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকাই তা করেছেন। ঘটনাচক্রে জগটা আমার মুখে এসে লাগে। এর সঙ্গে আমার বাড়ি, ভাড়াটে, এ সব জড়ানো হচ্ছে কেন?”
নিউ আলিপুর থানায় দেবাশিস যে আটটি ডায়েরি করেছেন, তার কপি সাংবাদিকদের দেখিয়ে সুব্রতবাবু বলেন, “রাজনৈতিক কারণে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।” সুব্রতবাবুকে বলা হয়, গত প্রায় এক বছর ধরে তো আপনারাই ক্ষমতায়। সরাসরি জবাব এড়িয়ে তিনি বলেন, “পুলিশের ভূমিকা নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখা হবে। মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি দেখবেন।”
প্রাথমিক তদন্তে নিউ আলিপুর থানা জেনেছে, একতলাটা খালি করে দেওয়ার জন্য দেবাশিসকে একাধিক বার সময় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি কথা রাখেননি। দেবাশিস এ দিন বলেন, “আমার বয়স ৬০-এর বেশি। একমাত্র ছেলে মানসিক প্রতিবন্ধী। দেবযানী মাঝেমধ্যেই লোকজন নিয়ে এমন ভাবে চড়াও হন যে ছেলে ভয়ে রাত ১১টা পর্যন্ত রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে।” তাঁর বক্তব্য, এই ঘটনায় তাদের বিশেষ কিছু করার নেই জানিয়ে পুলিশ তাঁকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। সেই মতো তিনি আদালতেও গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেবাশিস।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.