পুরসভার আয় বাড়াতে ট্রেড লাইসেন্সে বহুগুণ ফি বাড়ায় ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা।
পাশাপাশি টোলগেটে পণ্যবাহী গাড়ির কাছ থেকেও কর আদায় করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বেলডাঙার পুরপ্রধান কংগ্রেসের অনুপমা সরকার বলেন, “যান নিয়ন্ত্রণ, শহর পরিষ্কার করা, সব মিলিয়ে খরচ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। শহরের উন্নয়নে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া ছাড়া উপায় নেই।” তিনি বলেন, “রাস্তার দু’ দিক এবং কিছু ফুটপাতে অস্থায়ী ভাবে যাঁরা ব্যবসা করেন তাঁদের থেকে দৈনিক ২ টাকা এবং ৩ টাকা নেওয়া হবে। এলাকা পরিষ্কার রাখতে তা খরচ করা হবে।” সোনা এবং কেব্ল ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে বসে ট্রেড লাইসেন্সের বর্ধিত ফি ধার্য করা হবে বলে জানিয়েছে পুরসভা।
|
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বাড়তি কোনও পরিষেবা না দিয়েই টাকা বাড়িয়েছে পুরসভা। ট্রেড লাইসেন্সের ফি কোথাও কোথাও প্রায় দ্বিগুন বাড়ানো হয়েছে। কোথাও আবার দ্বিগুনেরও বেশি। বেলডাঙা বড়ুয়া ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষে সম্পাদক মোকতাদির মোল্লা বলেন, “বড়ুয়া বাজার থেকেই সবথেকে বেশি কর আদায় করা হয়। পরিষেবা বলতে কিছুই নেই। আমরা, বেলডাঙা হাট ব্যবসায়ী ও পাঁচরাহা ব্যবসায়ী সমিতি যৌথ ভাবে ৬ জন কর্মী নিয়োগ করেছি, যারা এলাকার যান নিয়ন্ত্রণ করেন। কিন্তু পুরসভাই উল্টে ট্রেড লাইসেন্সের ফি বাড়িয়েছে।” বেলডাঙা ছাপাখানা ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি সুজাউদ্দিন আহমেদ বলেন, “কর বৃদ্ধি নিয়ে ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ। অনেক জায়গায় বিক্ষোভও হয়েছে। কী ভাবে হঠাৎ এতটা কর বাড়ানো হল কেন তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। পুরসভা যদি কর বাড়ানোর বিস্তারিত পদ্ধতি এবং কারণ জানাতে না পারে তাহলে আমরা আন্দোলনে নামব।”
বেলডাঙা কেন্দ্রীয় ব্যবসায়ী সমিতির সাংস্কৃতিক সম্পাদক সমীরণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “যান নিয়ন্ত্রণের কোনও ব্যবস্থাই নেই, প্লাস্টিকের ব্যবহার রুখতে নজরদারিও করে না পুরসভা। পরিষেবা নেই। শুধু করের বোঝাই চাপানো হচ্ছে। পুরসভা আমাদের কী দিচ্ছে?”
বেলডাঙার এক ব্যবসায়ী ফারহাদ হুসেন বলেন, “ট্রেড লাইসেন্স বাবাদ আগে ২০০ টাকা দিতাম। বাড়িয়ে এখন এক হাজার টাকা করা হল। পাঁচগুণ ফি বৃদ্ধি করা হল আচমকা। আমরা ছোট ব্যবসায়ী। কী ভাবে ব্যবসা করব?” স্থানীয় এক মুদিখানার মালিক বলেন, “ট্রেড লাইসেন্সের জন্য ২০০ টাকা দিতাম। এখন পাঁচশো টাকা করে দিতে হচ্ছে। আয়ের থেকে তো ব্যায় বেশি হচ্ছে।” কম্পিউটারের ব্যবসা থেকে ওষুধের দোকানট্রেড লাইসেন্সের ফি সব জায়গাতেই প্রায় দ্বিগুন বেড়ে গিয়েছে। ঠিকাদারি ব্যবসায় ২০০ টাকার পরিবর্তে ৫০০ টাকা ফি দিতে হবে।
ঠিকাদারি ব্যবসার ফি ১০০০ টাকা বেড়ে হয়েছে ১৫০০ টাকা। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আয় বাড়ছে না। ট্রেড লাইসেন্স বাবদ দ্বিগুনেরও বেশি ফি কী ভাবে দেওয়া সম্ভব বুঝতেই পারছেন না তাঁরা।
তবে প্রাক্তন পুরপ্রধান সিপিএমের প্রিয়রঞ্জন ঘোষ বলেন, “বর্তমান অবস্থায় খরচ সামলাতে কিছুটা ট্রেড লাইসেন্স ফি বাড়বে ঠিকই। কিন্তু দ্বিগুন, বা তারও বেশি বাড়ানো ঠিক নয়। ব্যবসায়ীদের কথাও তো ভাবার দরকার।” |