দক্ষিণ কলকাতা
ফুটবল
খুদে প্রতিভার খোঁজে
মিড ডে মিল খেয়ে খেলতে নামা। দারিদ্র নিত্যসঙ্গী। স্কুলের মাঠও নেই। গরফা ধীরেন্দ্রনাথ মেমোরিয়াল হাইস্কুলের এই খুদেরাই বিজয়গড় বিদ্যাপীঠকে হারিয়ে খোকন বসুমল্লিক স্মৃতি ফুটবল প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হল। সম্প্রতি রবীন্দ্র সরোবর সংলগ্ন সাদার্ন স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের মাঠে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
এক সময়ে খোকন বসুমল্লিকের হাত ধরে সাদার্ন স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের মাঠ থেকে উঠে এসেছেন কম্পটন দত্ত, শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য, বাসুদেব মণ্ডলরা। ২০০৯-এ তিনি মারা যান। তাঁর স্মৃতিতেই এই স্কুল ফুটবলের আয়োজন করেছিলেন তাঁর শিষ্যরা।
নব নালন্দা, নাকতলা হাইস্কুল, মিত্র ইনস্টিটিউশন, দ্য হেরিটেজ-সহ দক্ষিণ কলকাতার ১০টি স্কুলের অনূর্ধ্ব ১৪ বছরের ছেলেরা অংশ নেয়। আক্রমণ, প্রতি-আক্রমণে ফাইনাল ম্যাচটি জমে উঠেছিল। যদিও প্রথমার্ধে কোনও দলই গোল করতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধে প্রথমে উঁচু দূরপাল্লার শটে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন গরফার বাপন হালদার। কিছুক্ষণ পরে বাপনের করা পাশেই গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন অর্পণ সরকার।
বাবার সব্জির দোকান। কালিকাপুরের ভাড়া বাড়িতে বেড়ে ওঠা বাপন পড়ে সপ্তম শ্রেণিতে। ফাইনালে ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কার নিয়ে বলে, “আরও ভাল ফুটবল ফেলতে চাই।” চ্যাম্পিয়ন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত ক্রীড়াশিক্ষক সঞ্জয় বিশ্বাস বললেন, “পিছিয়ে পড়া ঘরের ছেলেদের নিয়ে স্কুল। মিড ডে মিল খেয়ে ছেলেরা এসেছে। স্কুলের নিজস্ব খেলার মাঠ নেই। তবুও এ বারের রাজ্য স্কুল ফুটবলে অনূর্ধ্ব ১৯-এ চ্যাম্পিয়ন এবং অনূর্ধ্ব ১৪ ফুটবলে রানার্স হয়েছে স্কুল।”
বেহালার পর্ণশ্রী বিদ্যামন্দিরের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র দীপু রাজবংশী দু’টি হ্যাটট্রিক-সহ আটটি গোল করে প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার পেয়েছে। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর ভক্ত দীপুর বাবা ট্যাক্সি চালান। বিজয়গড়ের ফুটবলার মিলন নস্করের বাবা চালান রিকশা।
প্রতিযোগিতার আহ্বায়ক কম্পটন দত্ত বললেন, “গুরুর আদর্শ অনুসরণ করেই আমরা প্রতিভার খোঁজে নেমেছি। এক সময়ে ভারতীয় দলে সিংহভাগ ফুটবলারই বাংলা থেকে আসত। এখন ছবিটা বদলে গিয়েছে। তাই এ ধরনের প্রতিযোগিতা জরুরি।”
খুদেদের উৎসাহ দিতে প্রাক্তন বিচারপতি শ্যামলকুমার সেন, মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার, সুকুমার সমাজপতি, শ্যাম থাপা, মানস ভট্টাচার্য, বিদেশ বসু, গৌতম সরকার, প্রদীপ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ছবি: পিন্টু মণ্ডল।




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.