উত্তর কলকাতা: পাইকপাড়া, ব্যারাকপুর
দুর্ভোগের বাস
উন্নয়ন সুদূর
পুরসভার অংশ। কিন্তু প্রথম বার দেখলে গ্রাম বলে মনে হতে পারে। অপরিকল্পিত ভাবে কয়েকটি জায়গায় রাস্তা, নর্দমা তৈরি হয়া ছাড়া বিশেষ কিছুই হয়নি। অভিযোগ, ফি-বর্ষায় এলাকা জলমগ্ন হয়ে থাকে। বার বার জানানো সত্ত্বেও উদাসীন পুরসভা। এমন অবস্থা উত্তর দমদম পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত সুভাষ পল্লি ও সূর্য সেন পল্লির। যদিও পুরসভা সূত্রে খবর, ওয়ার্ড কমিটির পরিকল্পনার অভাবে এই অবস্থা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অঞ্চলটি নিচু। কয়েক দশক আগে ধান চাষ হত। এখন জনবসতি দু’হাজার ছাড়িয়েছে।
অভিযোগ, পুরসভার অংশ হওয়া সত্ত্বেও গত ২০-৩০ বছরে এই অঞ্চলের বিশেষ উন্নয়ন হয়নি। শুধু অপরিকল্পিত ভাবে কিছু রাস্তা আর নর্দমা তৈরি হয়েছে। ফলে বর্ষায় এলাকার অধিকাংশ রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। নর্দমা উপচে নোংরা বাড়িতে ঢুকে যায়। রয়েছে মশার উপদ্রবও।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভা অন্য জায়গায় উন্নয়নের কাজ করলেও এই এলাকাটি বঞ্চিত রয়েছে। ঠিকমতো পুর পরিষেবার মেলে না। উন্নয়ন ও পরিষেবার অভাবে জমি কিনেও অনেকে বাড়ি করেননি। সেই সব ফাঁকা জমিতে আগাছা গজিয়েছে। তা ছাড়া মশা-মাছির উপদ্রবে জেরবার বর্তমান বাসিন্দারা। অথচ মশা মারার তেল নিয়মিত ছড়ানোর ব্যবস্থা নেই।
বেশির ভাগ রাস্তাই কাঁচা। বাসিন্দাদের দাবি, রাবিশ ফেলে তাঁরাই যাতায়াতের ব্যবস্থা করে নেন। এই অঞ্চলের অনেকে দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করেন। তাঁদের শৌচাগারগুলি স্বাস্থ্যসম্মত নয়। বর্ষায় জমা জলের সঙ্গে শৌচাগারের নোংরা জল মিশে গিয়ে দুর্বিষহ অবস্থা হয়। নর্দমার অভাবে দীর্ঘ দিন জল জমে থাকে। তা ছাড়া নর্দমাও নিয়মিত সাফ হয় না। দিনের পরে দিন বাসিন্দাদের চরম ভোগান্তি হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা গৌর মণ্ডলের কথায়: “ঘন বসতি। কিন্তু প্রয়োজন মতো পুর-পরিষেবা মেলে না। রাস্তাও নিজেদের ঠিক করে নিতে হয়। সারা বছর মশার উপদ্রব থাকলেও নিয়মিত তেল ছড়ানোর ব্যবস্থা করে না পুরসভা।” স্থানীয় কাউন্সিলর ও পুরসভার বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের বিনয়ভূষণ মজুমদার বলেন, “এই এলাকার উন্নয়নে পুরসভা বিশেষ উদ্যোগী হয়নি। অন্যান্য পরিষেবার পাশাপাশি এখানে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রেরও প্রয়োজন। বর্ষায় চূড়ান্ত হেনস্থা হতে হয়।”
পুরসভার চেয়ারম্যান সিপিএমের সুনীল চক্রবর্তী বলেন, “অর্থের অভাব নেই। সাংসদ ও বিধায়কের তহবিল ও পুরসভা থেকে অর্থ মঞ্জুর করা হয়। কিন্তু ওয়ার্ড কমিটির সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও দৃষ্টিভঙ্গীর অভাবে অঞ্চলটি পিছিয়ে আছে।”

ছবি: সুদীপ ঘোষ।




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.