উত্তর কলকাতা
বিধি শিকেয়
বিপণি অগ্নিগর্ভ
হাতিবাগান বাজারের অগ্নিকাণ্ডের পরেও হুঁশ ফেরেনি উত্তর কলকাতার মানিকতলা বাজারের। অভিযোগ, ভিতরে ও বাইরে বিদ্যুতের তার বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছে। অধিকাংশ বিদ্যুতের সংযোগ বিপজ্জনক ভাবে নেওয়া হয়েছে। যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
বিবেকানন্দ রোডের উপরে মানিকতলা বাজারে ঢোকার মুখে তারের জাল ঝুলছে। বাজারের খুব কাছেই দু’টি ট্রান্সফর্মার। বাজারের বাইরের ফুটপাথ এবং পাশের রাস্তাও সকাল-বিকেল বাজার বসে। অভিযোগ, কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে দমকলের গাড়ি ঢুকতে অসুবিধা হবে।
বাজার ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে খবর, প্রায় ৮৯ কাঠা জমির উপর নির্মিত এই ব্যক্তমালিকানাধীন বাজারটি অনেক পুরনো। দু’ধারে তিন তলা ভবন। নীচের তলায় বাজার। বসবাসের জন্য ৬৫টি ঘর রয়েছে। রয়েছে ৬৯৫টি দোকান। মাছ, সব্জি, ফল মিলিয়ে বাজারে ৭ থেকে ৮টি পট্টি রয়েছে। বাজারের ভিতরের জায়গাও খুব অপরিসর। ন’টি প্রবেশপথের কোনওটিই খুব চওড়া নয়। তা ছাড়া প্রবেশপথের মুখে অনেকে জিনিস বেচতে বসে যান। অভিযোগ, বাজারের অধিকাংশ বিদ্যুৎ সংযোগ বিপজ্জনক। যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ফ্ল্যাটগুলিতে ও বাজারের ভিতরে গ্যাস এবং কেরোসিনে রান্না হয়। ফলে সব সময় অগ্নিকাণ্ডের আশঙ্কা রয়েছে।
এই বাজারের একাধিক মালিক রয়েছে। মালিক পক্ষ সূত্রে খবর, বাজার পরিচালনার সব দায়িত্ব বাজার সমিতির। বাজার সমিতির সম্পাদক প্রভাতকুমার দাস বলেন, “সম্প্রতি দমকল বাজার পরিদর্শন করে গিয়েছে। সমিতির পক্ষ থেকে দমকলের পরামর্শ মতো বাজারে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা উন্নত করার চেষ্টা করছি।
বাইরের দোকানগুলির নিজস্ব অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রয়েছে। বাজারের ভিতরে মোট ২০টি অগ্নিনির্বাপক রয়েছে। এর মধ্যে শট সার্কিটের আগুন নেভাতে ফোমের ১০টি অগ্নিনির্বাপক এবং অন্যান্য আগুন নেভাতে বাকি অগ্নিনির্বাপক রয়েছে। ফুটপাথের দোকানগুলি বেআইনি ভাবে সংযোগ নেওয়ায় তারের জট তৈরি হয়েছে।” কিন্তু এ ক’টি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র কি যথেষ্ট? প্রভাতবাবু বলেন, “আমরা পরে পট্টিগুলিতেও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র লাগানোর কথা ভাবছি।” যদিও দমকলের সংশ্লিষ্ট ডিভিশন সূত্রে খবর, পরিদর্শন নয়, আগুন লাগলে কী ভাবে মোকাবিলা করতে হবে তা দেখানো হয়েছিল।
পুরসভার মেয়র পারিষদ (বাজার) দেবাশিস কুমার বলেন, “অধিকাংশ বেসরকারি বাজারেরই খারাপ অবস্থা। বিদ্যুৎ সংযোগ দেখার দায়িত্ব সিইএসসি-র। তবে বাজারগুলির অবস্থা দেখার জন্য আমরাও পরিদর্শন করছি।” যদিও সিইএসসি কর্তৃপক্ষ জানান, বাজারে তাঁদের কোনও বিপজ্জনক বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। ঝুলন্ত তারও নেই।
দমকলের ডিজি দুর্গাপ্রসাদ তারেনিয়া বলেন, “বিভিন্ন বেসরকারি বাজারে পরিদর্শন চালানো হচ্ছে। মানিকতলা বাজার সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে দেখছি।”

ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য।




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.