পূর্ব কলকাতা: লেকটাউন, বারাসাত
সুরাহা কবে
বিধি মানে না
নির‌্দিষ্ট স্ট্যান্ড নেই। যত্রতত্র যাত্রী ওঠায়-নামায়। নেই সিগন্যাল মানার বালাই। অভিযোগ, ভিআইপি রোড, যশোহর রোড এবং রাজারহাটের মেজর আর্টারিয়াল রোডে রিকশা ও ভ্যানের দাপটে অতিষ্ঠ পথচারী ও অন্য যানচালকেরা। হচ্ছে যানজটও। কিন্তু রিকশা ও ভ্যান নিয়ন্ত্রণে উদাসীন প্রশাসন।
তিনটি রাস্তাই অত্যন্ত ব্যস্ত। এই বিস্তীর্ণ অঞ্চল রাজারহাট-গোপালপুর, মধ্যমগ্রাম, দক্ষিণ দমদম এবং দমদম পুরসভা অন্তর্গত। অভিযোগ, সব জায়গায় ছবি প্রায় একই। নাগেরবাজার, জোড়ামন্দির, কেষ্টপুর মোড়, মধ্যমগ্রাম চৌমাথা ইত্যাদি জায়গায় রিকশা ও ভ্যানের জন্য মাঝেমধ্যেই যানজট লেগে যায়। তাড়াহুড়োয় অনেক সময় ঘটে দুর্ঘটনাও। এই সমস্ত এলাকায় রিকশা ও ভ্যানের লাইসেন্স দেওয়ার দায়িত্ব পুরসভাগুলির। অভিযোগ, লাইসেন্স দিলেও পুরসভাগুলির কাছে রিকশা ও ভ্যানের কোনও হিসাব নেই। এ ছাড়া, অনেক অবৈধ রিকশা ও ভ্যানও চলছে। তবে এ নিয়েও পুরসভাগুলির কোনও নজরদারি নেই বলে অভিযোগ।
অভিযোগ, এই সব অঞ্চলে রিকশা চালকদের একাংশ স্থানীয় নন। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অনেকে আসেন রিকশা চালাতে। এমনকী রিকশা চালকদের একাংশ ভারতীয় নন বলেও অভিযোগ। এঁদের উপরে পুরসভাগুলির কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। নাগেরবাজারের বাসিন্দা তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “১ নম্বর গেট হয়ে বারাসত যেতে গেলে বার বার রিকশার জন্য গাড়ি থেমে যায়। যেখানে-সেখানে হাত দেখিয়ে সেগুলি ঘওরানো হয়। প্রশাসনের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই।” মধ্যমগ্রাম পুরসভার প্রধান তৃণমূলের রথীন ঘোষ বলেন, “শীঘ্রই অবৈধ রিকশার বিরুদ্ধে পুরসভা ও পুলিশ অভিযান শুরু করবে। অন্য পুরসভা ও পঞ্চায়েতের লাইসেন্সপ্রাপ্ত রিকশা ও ভ্যানকে স্ট্যান্ড করতে দেওয়া হবে না।”
দমদম পুরসভার উপপুরপ্রধান তৃণমূলের হরেন্দ্র সিংহ বলেন, “প্রচুর অবৈধ রিকশা চলছে। প্রতি দিনই সেগুলির সংখ্যা বাড়ছে। শীঘ্রই পুরসভা অভিযান শুরু করবে।” দক্ষিণ দমদম পুরসভার পুরপ্রধান তৃণমূলের অঞ্জনা রক্ষিত বলেন, “যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রিকশা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেব।” রাজারহাটের পুরপ্রধান সি পি এম-এর তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পুরনো স্ট্যান্ডের রিকশাগুলিকে লাইসেন্স দেওয়া হবে। অবৈধ রিকশা চিহ্নিত করে সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনা করা হবে।”
ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডি সি (ট্রাফিক) ভি সলেমন নেসা কুমার বলেন, “পুরসভার সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তা হয়েছে। রিকশা ও ভ্যান নিয়ন্ত্রণে পুরসভাগুলির সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজ করা হবে।” বিধাননগর কমিশনারেটের ডি সি (ট্রাফিক) ভরতলাল মীনা বলেন, “রিকশা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পুরসভাগুলির সঙ্গে আলোচনা চলছে। কোনও অভিযোগ থাকলে খতিয়ে দেখা হবে।” উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার চম্পক ভট্টাচার্য বলেন, “রাস্তা যানজট মুক্ত করতে পুরসভাগুলির সঙ্গে সব সময়ই আলোচনা চলে। পুলিশ ও পুরসভা যৌথ ভাবে রিকশা নিয়ন্ত্রণে কাজ করবে।”
সিটু সমর্থিত রিকশা-ভান চালক ইউনিয়নের জেলা সম্পাদক প্রদ্যোৎ সেন বলেন, “আমরা কর্মীদের সব সময়ই মানুষের অসুবিধা না করে চলাচল করতে বলি। পুরসভাগুলিকে বার বার বলেছি রিকশার লাইসেন্স দিতে এবং অবৈধ রিকশা চিহ্নিত করতে। স্ট্যান্ড ও ভাড়া নির্ধারিত করতেও বলেছি। কিন্তু পুরসভাগুলি উদ্যোগী হয়নি।”
এআইটিটিইউসি-র উত্তর ২৪ পরগনার কার্যকরী সভাপতি তাপস দাশগুপ্ত অবশ্য বলেন, “ভিআইপি ও যশোহর রোডের রিকশা ও ভ্যান চালকেরা আমাদের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নন। তাই এঁদের বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।”

ছবি: সুদীপ ঘোষ।




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.